মহমেডান বনাম জামশেদপুর ম্যাচের একটি মুহূর্ত। ছবি: সমাজমাধ্যম।
জামশেদপুর ৩
মহমেডান ১
আই লিগ এবং আইএসএল কতটা আলাদা তা ক্রমশ টের পাচ্ছে মহমেডান। গত মরসুমে আই লিগে জিতে আসা দল আইএসএলে শুরুটা ভালই করেছিল। তবে চতুর্থ ম্যাচ থেকে তাদের যে খারাপ দশা শুরু হয়েছে তা থামার কোনও লক্ষণ নেই। সোমবার অ্যাওয়ে ম্যাচে জামশেদপুরের কাছে ১-৩ গোলে হারল তারা। টানা তিন ম্যাচে হারা জামশেদপুরের বিরুদ্ধে আবার ভেঙে পড়ল মহমেডানের রক্ষণ। শেষ দিকে পেনাল্টি মিস্ করলেন ফ্রাঙ্কা।
প্রতি ম্যাচে একই জিনিস দেখা যাচ্ছে। তবু মহমেডানের রোগ সারার কোনও লক্ষণ নেই। প্রথমার্ধে ভাল ফুটবল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে মহমেডানের রক্ষণ খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে। টানা তিনটি ম্যাচ হেরে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে থাকা জামশেদপুরও যে ভাবে মহমেডানের বিরুদ্ধে দাপট দেখাল তা নিয়ে ভাবতেই হবে কোচ আন্দ্রে চের্নিশভকে। কেন তাঁর ডিফেন্ডারেরা প্রতি ম্যাচে শেষ ৪৫ মিনিটে ভুলের পর ভুল করে চলেছেন তার উত্তর খোঁজাই এখন আসল কাজ রাশিয়ার কোচের।
এ দিন প্রথমার্ধে বলার মতো কিছু ঘটেনি। দুই দলই সাবধানী ফুটবল খেলেছে। একে অপরকে মেপে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। প্রথম দশ মিনিটে জামশেদপুর একটু দাপট দেখিয়েছিল। মহমেডান ক্রমশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে। খেলা হতে থাকে মূলত মাঝমাঠেই। প্রথমার্ধে শেষের ১০ মিনিট আগে মহমেডানের গৌরব বোরা আঘাত পান। তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে। মাঠেই চিকিৎসা চলে। তবে চের্নিশভ ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে তুলে জোসেফ আদজেইকে নামান।
ফাউলের ধারা অব্যাহত থাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও। এ বার ফ্রাঙ্কাকে খারাপ ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখেন জামশেদপুরের আশুতোষ মেহতা, যিনি পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না। তবে দ্বিতীয়ার্ধ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে দু’দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপায়। তবে মহমেডানের তুলনায় জামশেদপুরের আক্রমণে ঝাঁজ ছিল বেশি। ফায়দাও তোলে তারাই।
৫২ মিনিটে প্রথম গোল করে জামশেদপুর। রেই তাচিকাওয়ার থেকে বল পেয়ে বাঁ দিক থেকে ঢুকে পড়েছিলেন মহম্মদ সানান। বক্সের মধ্যে ঢুকেই ডান পায়ের জোরালো বাঁকানো শটে গোল করেন তিনি। গোলকিপার ভাস্কর রায়ের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম করে মহমেডান। একটি কঠিন হেড তিনি বাঁচালেন বল হাতে ধরে রাখতে পারেননি। সামনেই ছিলেন জেভিয়ার সিভেরিয়ো। বল মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা তিনি জালে জড়িয়ে দেন।
৭৯ মিনিটে তৃতীয় গোল খায় মহমেডান। রক্ষণের ভুলে গোল করেন স্টিফেন এজে। নির্ধারিত সময়ের মিনিট তিনেক আগে একটি গোল শোধ করে সাদা-কালো ব্রিগেড। তবে দলকে হারের থেকে বাঁচাতে পারেননি। খেলার একদম শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি নষ্ট করে হারের ব্যবধান কমানোর সুযোগও হাতছাড়া করেন ফ্রাঙ্কা।