FC Barcelona

Messi-Xavi: বন্ধু জ়াভি ফেরাবে বার্সার সুদিন, আশা মেসির

জ়াভি হার্নান্দেস কোচ হওয়ায় রীতিমতো উল্লসিত মেসি বলছেন, ‘‘জ়াভির অনেক কিছু করার ক্ষমতা আছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৩১
Share:

জুটি: বার্সার অনেক সাফল্যের দুই নায়ক মেসি-জ়াভি। ফাইল চিত্র।

লিয়োনেল মেসি স্বীকার করছেন, এখনও তাঁর হৃদয় জুড়ে শুধুই বার্সেলোনা। যেখানকার লা মাসিয়া অ্যাকাডেমি থেকেই তাঁর উত্থান এবং একদিন বিশ্বসেরা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। স্পেনের এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাখঢাক না করে তিনি বলেছেন, ‘‘ক্যাম্প ন্যুতে ফিরতে চাই। ওখানেই আমার ঘরবাড়ি। বাকি জীবন তো বার্সেলোনাতেই কাটাব।’’

Advertisement

তাঁকে মনে করানো হয়, বার্সেলোনার ক্লাব প্রেসিডেন্ট জুয়ান লাপোর্তাও বলেছেন, মেসি ও ইনিয়েস্তা (আন্দ্রে)পুরনো ক্লাবে ফিরতে পারেন। তবে ফুটবলার হিসেবে, না অন্য ভূমিকায় তা তিনি স্পষ্ট করেননি। কিংবদন্তি তারকার মন্তব্য, ‘‘উনি কি ফুটবলার হিসেবে ফেরার কথা বলেছেন? এটা তো ঠিকই, বার্সাকে সাহায্য করতে পারলে খুশিই হব।’’

জ়াভি হার্নান্দেস কোচ হওয়ায় রীতিমতো উল্লসিত মেসি বলছেন, ‘‘জ়াভির অনেক কিছু করার ক্ষমতা আছে। ক্যাম্প ন্যুর নাড়িনক্ষত্র জানে। ছোটবেলা থেকেই ও বার্সাতে। সমর্থক, ফুটবলাররাও শ্রদ্ধা করে। নতুনদের নিশ্চয়ই নিজের মতো গড়ে নেবে। জ়াভি আসায় দল হিসেবেও উন্নতি করবে বার্সা।’’ দায়িত্ব নেওয়ার পরে জ়াভি জানান, মেসি মজা করে তাঁকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তির প্রতিক্রিয়া, ‘‘মাঝেমধ্যেই জ়াভির সঙ্গে কথা হয়। চিরকাল আমরা বন্ধু। স্পেন ছেড়ে যাওয়ার পরেও ওর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তবে কোচ হওয়ার খবরে ঠিক কী বলেছিলাম, সেটা মনে নেই। অবশ্যই অভিনন্দন জানিয়েছি। ওর ফুটবল জ্ঞান প্রখর। পরিশ্রমীও। লা মাসিয়া অ্যাকাডেমিতে থাকার সময় থেকে ওকে চিনি।’’

Advertisement

পুরনো ক্লাবের মতোই লা লিগায় তাঁর পুরনো ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ভুলতে পারেন না মেসি। ইপিএলে পর্তুগিজ তারকা যা যা করছেন, তার খবরও রাখেন। বলেছেন, ‘‘ক্রিশ্চিয়ানোর তো ওটা পুরনো ক্লাব। সবই জানে। তবু বলব, ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় দফাতেও ক্রিশ্চিয়ানো দারুণ মানিয়ে নিয়েছে। এমনিতেও যখন যেখানে খেলেছে, অসাধারণ হয়ে উঠেছে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘ইংল্যান্ডেও শুরু থেকে গোল করছে। ওদের দলকে যতটা ভাল ভেবেছিলাম, ততটা ভাল এ বার খেলেনি। কিন্তু ম্যান ইউকে হারানো সবসময় কঠিন।’’ ক্লাব স্তরে রোনাল্ডোর সঙ্গে দ্বৈরথের অভাব অনুভব করছেন? মেসির জবাব, ‘‘একই লিগে আমরা অনেক দিন খেলি না। এটা ঘটনা, তখন আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। ব্যক্তিগত লড়াইয়ের বাইরে দু’জনই চাইতাম, দলকে সেরা জায়গায় নিয়ে যেতে। মাঠে আমাদের লড়াই সমর্থকরাও উপভোগ করতেন। সেই সব দিন ভুলতে পারি না।’’

জ়াভিকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও মেসি কিন্তু মনে করেন, তাঁর পুরনো ক্লাব দুই প্রাক্তন ম্যানেজার ভালভার্দে ও রোনাল্ড কোমানকে যে ভাবে বরখাস্ত করেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। ‘‘চিরকালই কোচদের প্রতি অন্যায় করা হয়। ভালভার্দে, কোমানের সঙ্গেও সেটাই হল। খারাপ ফল হলেই সহজ সমাধান, কোচকে সরিয়ে দাও। অথচ কঠিন একটা সময়ে কোমান এসেছিলেন। যখন সেরাদের অনেকেই নেই। তবুও উনি নতুন অনেককে তুলে আনেন,’’ বলেছেন লিয়ো। কিন্তু নতুন কোচ কি ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতায় নক-আউট পর্বে তুলতে পারবেন বার্সাকে? মেসি বলেছেন, ‘‘বার্সেলোনা দলে পুনর্গঠন চলছে। অনেকেই নতুন। আগামী দিনে ওরা আবার সেরা হতেই পারে। জ়াভি আসায় বার্সায় নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। লা লিগাতেও ওরা উপরের দিকে থেকেই অভিযান শেষ করবে।’’

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কারা জিতবে? আর্জেন্টিনীয় তারকা প্রথমেই বেছেছেন লিভারপুলকে। পাশাপাশি জানিয়েছেন, ট্রফি জিততে পারে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখ, রিয়াল মাদ্রিদ, আতলেতিকো দে মাদ্রিদ ও তাঁর এখনকার ক্লাব পিএসজিও। বলেছেন, ‘‘অনেকেরই মনে হচ্ছে, আমরাও ট্রফি জিততে পারি। কথাটা ভুল নয়। কিন্তু এখনও পিএসজি সত্যিকারের শক্তিশালী দল হতে পারেনি।’’ কিলিয়ান এমবাপে পরের বার রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাবেন কি না, জানেন না মেসি। তবুও অন্তত এক বছর এই তরুণ প্রতিভাকে পাশে পাচ্ছেন ভেবে তিনি আপ্লুত। সঙ্গে জানিয়েছেন, হোটেল ছেড়ে এসে প্যারিসে এখন সপরিবারে নিজের বাড়িতে দিব্যি আছেন। তাঁর ছেলেরাও স্কুলে যাচ্ছে। মেসি নিশ্চিত, থিয়াগোরা ফরাসি ভাষাও রপ্ত করে ফেলবে।

লা লিগায় রিয়াল অধিনায়ক সের্খিয়ো র‌্যামোসের সঙ্গে মেসির যুযুধান সম্পর্ক নিয়ে চিরকাল চর্চা হয়েছে। এখন তাঁরা একই ক্লাবে! মেসির মন্তব্য, ‘‘ক্লাসিকোয় যা-ই হোক, চিরকাল পরস্পরকে শ্রদ্ধা করতাম। প্যারিসে মেলামেশার সুযোগ পেয়ে বুঝলাম, মানুষ সের্খিয়োও অসাধারণ।’’ নতুন ক্লাবের ড্রেসিংরুম দেখে মুগ্ধ হওয়ার গল্পও বলেছেন মেসি, ‘‘দারুণ ফুটবলার আর সুন্দর মনের সব মানুষদের পেয়েছি। শুরুতে কিছুটা অদ্ভুত লাগত। স্পেনে এত বছর কাটিয়ে, নতুন কোথাও থাকতে হলে মনের দিক থেকে ধাক্কা লাগা স্বাভাবিক। তবু পিএসজির অনেককেই চিনতাম। এখানে বন্ধন খুবই গভীর। বাইরে থেকেও সেটা বোঝা যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement