হোসে মোলিনা। —ফাইল চিত্র।
বাকি চারটি ম্যাচের মধ্যে দু’টি জিতলেই লিগ-শিল্ড পাকা। আর কোনও দলের দিকে তাকাতে হবে না মোহনবাগানকে। আইএসএলের প্রথম দল হিসাবে পর পর দু’বার লিগ-শিল্ড জেতার সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে। এই পরিস্থিতিতে কেরলের বিরুদ্ধে নামার আগে সতর্ক মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। শেষ মুহূর্তে ভুল করতে চাইছেন না তিনি।
শনিবার কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে নামবে মোহনবাগান। সেই ম্যাচ জিতলে লিগ-শিল্ডের আরও কাছে পৌঁছবে তারা। মোলিনার মতে, তিনি লিগ-শিল্ড দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু শিল্ড তো আর তাঁদের হাতে চলে আসবে না। তাঁদের শিল্ডের কাছে যেতে হবে। মোলিনা বলেন, “লিগ-শিল্ড চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। আর দু’পা বাকি। তাই সময় নষ্ট করার কোনও জায়গা নেই। বিষয়টা হালকা ভাবে নিলে হবে না। আরও পরিশ্রম করতে হবে। লিগ-শিল্ড তো আর আমাদের কাছে আসবে না। আমাদের লিগ-শিল্ডের কাছে যেতে হবে।”
লিগ-শিল্ড জেতার পথে প্রথম পদক্ষেপ কেরলকে হারানো। আপাতত সেই দিকেই মন দিতে চান মোলিনা। তিনি বলেন, “প্রথম কাজ কেরলকে হারানো। আপাতত সেই ম্যাচ নিয়েই ভাবছি। কোচিতে তিন পয়েন্ট পেতে হবে। তা হলে এক পা এগোব। তার পরে ঘরের মাঠে আর এক পা।” ফুটবলারদের সেই কথা বলেই তাতাচ্ছেন মোহনবাগান কোচ। তিনি চান না, দলের কেউ গা-ছাড়া মনোভাব দেখাক। বাগান কোচ বলেন, “দলের সকলকে বলেছি, এই পরিস্থিতিতে গা ছাড়া মনোভাব দেখালে হবে না। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। শেষ কামড়টা দিতেই হবে। পর পর দু’বার লিগ জেতা মোটেই সহজ নয়। সেই কীর্তির সামনে রয়েছি আমরা। পরের দুই ম্যাচ জিতে সেটা করতে চাই।”
এ বারের লিগ শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছছে। পয়েন্ট তালিকায় থাকা প্রথম ছয় দল প্লে-অফে যাবে। তাই সকলেই শেষ কয়েকটি ম্যাচ জিততে চায়। কেরলও সেই লক্ষ্যেই নামবে। এ কথা জানেন মোলিনা। তিনি বলেন, “লিগের একেবারে শেষ দিকে এসে পৌঁছেছি। এখন সব দলের লক্ষ্য আলাদা। আমরা যেমন লিগ-শিল্ড জিততে চাই, তেমনই অনেকে প্লে-অফে থাকতে চায়। কেরলেরও সেই সুযোগ আছে। তাই ওরাও মরিয়া হয়ে খেলবে। তাই ম্যাচ সহজ হবে না। আমাদের জিততেই হবে।”
কেরলের সমর্থকদের আলাগা সমীহ করছেন মোলিনা। কেরল যেমনই খেলুক না কেন, তাদের প্রতিটি হোম ম্যাচে কোচির স্টেডিয়াম ভরে যায়। হলুদ জার্সিধারি সমর্থকেরা কেরলের জন্য গলা ফাটায়। এই পরিস্থিতিতে শনিবার কঠিন ম্যাচ বাগানের সামনে। তবে তার জন্য পরিকল্পনা তৈরি বাগান কোচের। মোলিনা বলেন, “কোনও ম্যাচই সহজ নয়। সব ম্যাচে প্রতিপক্ষ আলাদা। পরিবেশ আলাদা। কেরলের বিরুদ্ধে ওদের মাঠে খেলা খুব কঠিন। পুরো মাঠ ভরে থাকে। ওদের সমর্থকেরা চিৎকার করে দলকে তাতায়। আশা করছি আমরাও সমর্থন পাব। প্রতিটা ম্যাচ অনুযায়ী পরিকল্পনা ঠিক করি। কেরল ম্যাচের জন্যও আলাদা করে পরিকল্পনা করতে হয়েছে। আশা করছি, সেই পরিকল্পনা কাজে আসবে।”
প্রথম লেগে যুবভারতীতে বেঞ্চ থেকে নেমে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছিলেন আশিক কুরুনিয়ান। তিনিই মোহনবাগানকে জিতিয়েছিলেন। এ বারের মরসুমে চোটের কারণে অনেক ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। কেরলের বিরুদ্ধে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। আপাতত কোচের নির্দেশ মেনে চলার চেষ্টা করছেন তিনি। আশিক বলেন, “এখনই লিগ-শিল্ড জেতা নিয়ে কিছু ভাবছি না। কোচ এক পা, এক পা করে এগোতে বলেছেন। সেটাই করছি। সকলের একটা বাড়তি তাগিদ রয়েছে। চোট থেকে ফিরে আবার নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। সবুজ-মেরুন সমর্থকদের কাছে যে ভালবাসা পেয়েছি, লিগ-শিল্ড জিতে তা শোধ করতে চাই।”