চমকে দিচ্ছে জামশেদপুর এফসি-র পরিসংখ্যান। —ফাইল ছবি
যে কোনও খেলার অন্যতম আকর্ষণের বিষয় পরিসংখ্যান। কিছু সাধারণ পরিসংখ্যান ক্রীড়াপ্রেমীদের এক রকম কণ্ঠস্থ থাকে। তার বাইরে থাকে আরও অনেক পরিসংখ্যান। সে সবও কম চমকপ্রদ হয় না।
পরিসংখ্যান থেকে কোনও দল বা খেলোয়াড়ের শক্তি বা দুর্বলতা সম্পর্কে কিছু ধারনা করা যায়। চলতি মরসুমের আইএসএল-এর পরিসংখ্যানও তেমন। বলা ভাল, চমকে দেওয়ার মতো বেশ কিছু তথ্য রয়েছে তাতে। ইতি মধ্যেই লিগ পর্বে শীর্ষে থাকার সুবাদে লিগ শিল্ড জিতে নিয়েছে জামশেদপুর এফসি। আইএসএল-এর এই দলটির এ বারের কিছু পরিসংখ্যান রীতিমতো চমকপ্রদ।
লিগ পর্বে জামশেদপুরের সংগ্রহ ৪৩ পয়েন্ট। এর আগে কখনও কোনও দল লিগ পর্বে এত পয়েন্ট পায়নি। গত মরসুমে মুম্বই সিটি এফসি এবং ২০১৭-১৮ মরসুমে বেঙ্গালুরু এফসি ৪০ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে ছিল। জামশেদপুর জয় পেয়েছে ১৩টি ম্যাচে। আইএসএল-এর ইতিহাসে লিগ পর্বে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক জয়। এটা নতুন রেকর্ড না হলেও আওয়েন কোইলের দল টানা সাতটি ম্যাচে জয় পেয়েছে এবার। এর আগে কোনও দল আইএলএস-এ টানা এত ম্যাচ জেতেনি।
লিগ পর্বে সব থেকে বেশি গোল করার কৃতিত্ব অবশ্য দেখিয়েছে হায়দরাবাদ এফসি। তারা এখনও পর্যন্ত ৪৩টি গোল করেছে। ৪২টি গোল করে দ্বিতীয় স্থানে জামশেদপুর। গোলের লক্ষ্যে ২৯৩টি শট নিয়েও দ্বিতীয় স্থানে লিগ শিল্ড জয়ীরা। ৩০৮টি শট নিয়ে শীর্ষে এফসি গোয়া। ৪২টি গোলের অর্ধেক প্রথমার্ধে করেছে জামশেদপুর। যা যুগ্ম ভাবে প্রথম। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিট অর্থাৎ ম্যাচের ৪৬ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে সব থেকে বেশি ১১টি গোল করার নজিরও এবার জামশেদপুরের দখলে। শেষ ম্যাচে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ঋত্বিক দাসের গোলটিও হয় ম্যাচের ৫৬ মিনিটে। অর্থাৎ, দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটে বিপক্ষকে সব থেকে বেশি চাপে রাখতে সক্ষম হয়েছে ইস্পাতনগরীর দলটি।
সেট পিস থেকেও সব থেকে বেশি ২৩টি গোল করেছে জামশেদপুর। তার মধ্যে আবার ১০টি গোল ফ্রিকিক থেকে। এ জন্য বিশেষ কৃতিত্ব দিতে হবে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে। ফ্রিকিক থেকে বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত গোল করেছেন এই ফুটবলার। এখনও পর্যন্ত ২০ ম্যাচে সব থেকে কম ২১টি গোল হজম করেছে জামশেদপুরই। সাতটি ম্যাচে গোল হজম করতে হয়নি তাদের। এ ক্ষেত্রে অবশ্য একক ভাবে শীর্ষে নয় তারা। কেরালা ব্লাস্টার্স এফসিও সাতটি ম্যাচে কোনও গোল খায়নি। জামশেদপুরের শক্তিশালী রক্ষণ ভাগের আরও একটি উদাহরণ হল, তাদের গোলের দিকে সব থেকে কম শট নিতে পেরেছে প্রতিপক্ষ দলগুলি। মাত্র ২০৩টি শট নিতে পেরেছে প্রতিপক্ষ দলগুলি। এর মধ্যে আবার মাত্র ৬০টি শট ছিল গোলের মধ্যে। এটাও এবারের প্রতিযোগিতায় সর্বনিম্ন।
এখানেই শেষ নয়। রয়েছে আরও কিছু চমকপ্রদ পরিসংখ্যান। কোইলের ছেলেরা ২০টি ম্যাচ খেলে ১৬টিতেই ম্যাচের সেরার পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছে। আর কোনও দল এত বার ম্যাচের সেরার পুরস্কার পায়নি। জামশেদপুরের মোট ১০ জন ফুটবলার এই পুরস্কার পেয়েছেন। এটাও সর্বোচ্চ। সর্বাধিক সাত বার ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জামশেদপুরের স্টুয়ার্টের দখলে। তিনি নিজে করেছেন ১০টি গোল। আরও ১০টি গোলে সাহায্য করেছেন। অর্থাৎ, মোট ২০টি গোলে তাঁর অবদান রয়েছে। এই স্কটিশ ফরোয়ার্ড এখনও পর্যন্ত প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ ৬২টি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। পয়েন্ট তালিকার প্রথম চারটি দলের মধ্যে সর্বাধিক ২১৭টি গোলের সুযোগও পেয়েছে জামশেদপুর। তাদের হয়ে পাঁচ ভারতীয় ফুটবলার গোল করেছেন। সর্বাধিক চারটি গোল আসানসোলের ঋত্বিকের। শেষ ছয় ম্যাচেই গোলগুলি করেছেন তিনি।