SC East Bengal

ISl 2021-22: হারের অন্ধকার কাটানোর পরীক্ষা ইস্টবেঙ্গল কোচের

লাল-হলুদ রক্ষণে সমস্যা তো একটা নয়। বিপক্ষের ফুটবলারদের কাছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের পেনাল্টি বক্স শেষ তিনটি ম্যাচে কার্যত মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছিল।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩০
Share:

প্রস্তুতি: চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে নামার আগে অনুশীলনে মগ্ন লাল-হলুদের ফুটবলারেরা। এসসি ইস্টবেঙ্গল

সমর্থকেরা ম্যাচের আগে প্রিয় দলের জয় নয়, হার বাঁচানোর জন্যই প্রার্থনা করছেন! অষ্টম আইএসএলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের ধারাবাহিক বিপর্যয়ের ধাক্কায় লাল-হলুদ ভক্তদের এখন সে রকম অবস্থা।

Advertisement

প্রথম ম্যাচে জামশেদপুর এফসির সঙ্গে এগিয়ে গিয়েও ১-১ ড্র। ডার্বিতে এটিকে-মোহনবাগানের কাছে ০-৩ গোলে হার। ওড়িশা এফসির কাছে তৃতীয় ম্যাচে ৪-৬ গোলে হারের লজ্জা। তিনটি ম্যাচে ১০ গোল খেয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। করেছে পাঁচটি।

কোচ ম্যানুয়েল দিয়াসের মানসিক অবস্থাও এখন লাল-হলুদ সমর্থকদের মতো। আজ, শুক্রবার চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে হারের হ্যাটট্রিক আটকানোই প্রধান লক্ষ্য তাঁর। জয়ের কথা পরে ভাববেন। এই কারণেই বৃহস্পতিবারের অনুশীলনে ভুলত্রুটি শুধরে রক্ষণ মজবুত করার দিকেই তিনি সব চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেছেন।

Advertisement

লাল-হলুদ রক্ষণে সমস্যা তো একটা নয়। বিপক্ষের ফুটবলারদের কাছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের পেনাল্টি বক্স শেষ তিনটি ম্যাচে কার্যত মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছিল। পিটার হার্টলি, রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিংহ, ভিক্তর রামিরেস থেকে আরিদাই সুয়ারেস— কাউকেই গোল করার সময় ন্যূনতম বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। সব চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিপক্ষ দল কর্নার বা ফ্রি-কিক পেলে। এই পরিস্থিতিতে টানা দু’ম্যাচ জিতে দুরন্ত ছন্দে থাকা চেন্নাইয়িনের আক্রমণের ঝড় কী
ভাবে রুখবেন?

ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে উদ্বিগ্ন ম্যানুয়েল বললেন, ‘‘অস্বীকার করার জায়গা নেই, আমাদের রক্ষণ শক্তিশালী নয়। আগের ম্যাচে বিপক্ষের সেট-পিসের সময় ডিফেন্ডাররা মনঃসংযোগ হারিয়ে ফেলেছিল। ওদের বলেছি, আরও মনোনিবেশ করতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘সেট-পিস থেকেই আমরা বারবার গোল খাচ্ছি। প্রথম ম্যাচেও কর্নার থেকে গোল খেয়েছিলাম। তবে স্ট্রাইকাররা গোল পাওয়ায় কিছু স্বস্তি ফিরেছে।’’

এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে আদিল খান নামার পরেই কিছুট শক্তি বেড়েছিল লাল-হলুদ রক্ষণের। তা সত্ত্বেও ওড়িশার বিরুদ্ধে তাঁকে শুরু থেকে খেলানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি ম্যানুয়েল। যা নিয়েই দলের মধ্যেই অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলেই দিচ্ছেন, কোচের দল নির্বাচনেই গলদ রয়েছে। ওড়িশার কাছে প্রথম গোল খাওয়ার পরেই যদি কোচ রাজু গায়কোয়াড়ের জায়গায় আদিলকে নামাতেন, তা হলে এ রকম
ফল হত না।’’

অবশেষে মনে হয় লাল-হলুদ কোচ আদিলের প্রয়োজনীয়তা বুঝলেন। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বললেন, ‘‘আদিল অনুশীলনে চোট পেয়েছিল। এখন ও আগের চেয়ে ভাল আছে। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে খেলতেও পারে আদিল।’’ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার আদিলকে রক্ষণে রেখেই চেন্নাইয়িনের অনিরুদ্ধ থাপা, লালিয়ানজ়ুয়ালা ছাংতেদের আটকানোর মহড়া সেরেছেন তিনি।

আগের ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যর্থ গোলরক্ষক শুভম সেনের পরিবর্তে কি অধিনায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যকে আবার দেখা যাবে প্রথম দলে? সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে ম্যানুয়েল বললেন, ‘‘অরিন্দম ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে কবে ও মাঠে ফিরবে তা বলা কঠিন। একই অবস্থা জ্যাকিচন্দ্র সিংহেরও।’’ লাল-হলুদের অনেকেই মনে করছেন, চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে গোলে শঙ্কর রায়কে খেলানো উচিত।

শুক্রবারের দ্বৈরথ চেন্নাইয়িনের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। এই মরসুমে একঝাঁক বাঙালি ফুটবলার রয়েছেন দলে। এঁদের মধ্যে অন্যতম লাল-হলুদ ছেড়ে এ বারই চেন্নাইয়িনে যোগ দেওয়া দেবজিৎ মজুমদার ও নারায়ণ দাস। এ ছাড়াও রয়েছেন রহিম আলির মতো উঠতি তারকাও। এটিকে-মোহনবাগান থেকে এসেছেন জবি জাস্টিন। শুক্রবার এসসি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করতে মরিয়া তাঁরা। কোচ বোজ়িদার বান্দোভিচ অবশ্য সতর্ক। তিনি বেশি চিন্তিত ফুটবলারদের টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তি নিয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বান্দোভিচ বললেন, ‘‘ঘন ঘন ম্যাচ থাকায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ কম পাচ্ছে ফুটবলাররা। কিন্তু কিছু করার নেই। সমস্যার মধ্যেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘পরপর দু’টি ম্যাচ হেরেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। আমাদের বিরুদ্ধে জেতার জন্য মরিয়া হয়ে খেলবে।’’ আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের সামনে টানা তিনটি ম্যাচে জেতার দারুণ সুযোগ রয়েছে। তাই আরও ভাল খেলতে হবে।’’

শুক্রবার আইএসএলে: চেন্নাইয়িন এফসি বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল (সন্ধে ৭.৩০, স্টার স্পোর্টস টু চ্যানেলে)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement