ISL 2021-22: বুমোস, চিমাদের সঙ্গে  লড়াই বঙ্গসন্তানদেরও

 দু’দলে বিদেশির সংখ্যা ছয় হলেও তার মধ্যে খেলতে পারবেন চার জন।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২৭
Share:

বড় ম্যাচের কথা মাথায় রেখে তৈরি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। —ফাইল চিত্র।

আজ, শনিবার আরব সাগরের তীরে বাঙালির শতাব্দী-প্রাচীন ফুটবল দ্বৈরথে নজর কাড়ার জন্য এটিকে-মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের দুই স্পেনীয় কোচের সঙ্গে বিদেশিরা তো রয়েছেনই। প্রস্তুত দুই দলের বঙ্গসন্তানেরাও।

Advertisement

এটিকে-মোহনবাগানে রয় কৃষ্ণ, হুগো বুমোসদের সঙ্গে রয়েছেন বঙ্গসন্তান প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসুরা। আর তাঁদের টেক্কা দেওয়ার জন্য তাল ঠুকছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের ড্যানিয়েল চিমা, আন্তোনিয়ো পেরোসেভিচ, অরিন্দম ভট্টাচার্য, মহম্মদ রফিকেরা।

দু’দলে বিদেশির সংখ্যা ছয় হলেও তার মধ্যে খেলতে পারবেন চার জন। এটিকে-মোহনবাগান কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস যখন কার্ল ম্যাকহিউ, জনি কাউকো, হুগো বুমোস ও রয় কৃষ্ণকে রেখে চূড়ান্ত দল সাজাচ্ছেন, তখন দলে সমান গুরুত্ব পাচ্ছেন প্রীতম, শুভাশিস, প্রবীর দাসেরাও। অন্য দিকে, সবুজ-মেরুনের টক্কর নেওয়ার জন্য তৈরি লাল-হলুদের টমিস্লাভ মর্সেলা, ফ্রানিয়ো পর্চে, পেরোসেভিচ, চিমাদের সঙ্গে অরিন্দমরাও।

Advertisement

এটিকে-মোহনবাগানের জনি ও লাল-হলুদের সব বিদেশিই এ বার প্রথম আইএসএলের কলকাতা-ডার্বি খেলতে নামবেন। অন্য দিকে, কৃষ্ণ ও ডেভিড গত বছর এই ডার্বি খেলেছেন। হুগো বুমোস জানেন এই ম্যাচের উত্তেজনা কতটা প্রবল। দুই প্রধানের বিদেশিদের ডার্বি সংক্রান্ত অতীতের গল্প ও পরিসংখ্যান দিয়ে উদ্যম বাড়াচ্ছেন প্রীতম, মহম্মদ রফিকেরা। লাল-হলুদে এই ভূমিকা যদি নিয়ে থাকেন অরিন্দম ও রফিক। সবুজ-মেরুনে দায়িত্ব প্রীতম-শুভাশিসের কাঁধে।

শনিবারের ম্যাচে দুই প্রধানের রক্ষণের কাছে পরীক্ষা দু’রকম। মানলোর ফুটবলারদের কাজ মাঝমাঠেই কৃষ্ণদের উদ্দেশে হুগোদের বাড়ানো বলগুলো কেড়ে নিয়ে রক্ষণকে নিশ্চিন্ত করা ও প্রতি-আক্রমণ শানানো। আর এটিকে-মোহনবাগানের লক্ষ্য হবে দ্রুত লাল-হলুদ রক্ষণে হানা দিয়ে গোলের দরজা খুলে ফেলা। সবুজ-মেরুন রক্ষণে কার্ল-এর সঙ্গে খেলবেন দুই বঙ্গসন্তান প্রীতম ও শুভাশিস। এদের মধ্যে কার্ল রক্ষণ ও মাঝমাঠ, দু’জায়গাতেই সাবলীল। লাল-হলুদের চিমা, পেরোসিভচদের নিষ্ক্রিয় করার জন্য তাঁর সহযোগী হবেন প্রীতম। ট্যাকল, কভারিং দুর্দান্ত প্রীতম, কার্ল-এর। কিন্তু শুভাশিস প্রথম ম্যাচে কিছু ভুল করেছেন। বড় ম্যাচে তা শুধরে দেওয়ার পাঠ পুরোদস্তুর দিয়েছেন হাবাস। শূন্যে বল ভেসে এলে, কখনও কখনও দুর্বলতা ধরা পড়ছে প্রীতমদের। সেই জায়গাতেই লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে চিমা, পেরোসেভিচেরা।

হাবাসের দলের মাঝমাঠে ম্যাকহিউ ও রয় কৃষ্ণদের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজটি যিনি করবেন, সেই জনি কাউকো ইউরো ২০২০ খেলে এসেছেন বেলজিয়াম, রাশিয়া এবং ডেনমার্কের বিরুদ্ধে। ডার্বিতে তাঁর দায়িত্ব মাঝমাঠে বিপক্ষের থেকে বল কেড়ে তা হুগো বুমোস, রয় কৃষ্ণদের জোগানো আর রক্ষণে নেমে পেরোসেভিচদের ছন্দ নষ্ট করা। জনির কথায়, ‍‘‍‘ভারতের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছি। তা হয়ে গেলেও আরও ভাল খেলব।’’ আক্রমণে ফরাসি-মরক্কান হুগো বুমোস ও রয় কৃষ্ণের জুটি একে অপরের পরিপূরক। দু’জনেই পাল্লা দিয়ে গোল করতে ও করাতে ভালবাসেন। যা প্রথম ম্যাচ থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

সবুজ-মেরুনের অতিরিক্ত তালিকায় থাকতে পারেন ডেভিড উইলিয়ামস, প্রবীর দাসেরা। সুযোগ পেলে নিজেদের প্রমাণ করার জন্য ফুটছেন দু’জনে।

অন্য দিকে, এসসি ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে কৃষ্ণদের থামানোর জন্য তৈরি থাকবেন অস্ট্রেলীয় টমিস্লাভ মর্সেলা। প্রথম ম্যাচে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে বল বিপন্মুক্ত ও পাস বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ‍৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার এই ফুটবলারের সঙ্গে কৃষ্ণকে নজরে রাখার দায়িত্ব থাকবে হীরা মণ্ডল, ফ্রানিয়ো পর্চেদের উপরে। ২০১৫-১৮ তিন মরসুম ইটালির সেরি আ-র দল লাজ়িয়োতে ছিলেন পর্চে। এই ত্রয়ীর লক্ষ্য আবার মাঝমাঠ ও রক্ষণে ফাঁকা জায়গা দেওয়া চলবে না। এই অভিযানে তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন বঙ্গসন্তান সৌরভ দাস। রক্ষণ ও মাঝমাঠে এই জাল টপকে গেলে বুমোস, লিস্টনদের সামনে প্রাচীর হিসেবে থাকবেন এসসি ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক ও গত বারের সেরা গোলরক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্য। ফ্রানিয়ো বলছেন, ‍‘‍‘ডার্বিতে প্রত্যেকটি বলের জন্য লড়াই করব আমরা। নিজেদের উজাড় করে দেব।’’

পর্চের মতোই পেরোসেভিচ আক্রমণে মানলোর দলের বড় ভরসা। চেহারা পোক্ত না হলেও ভাল বল বাড়াতে পারেন। ডার্বিতে গোলের জন্য তাঁর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ভক্তেরা। স্ট্রাইকার ড্যানিয়েল চিমার দুই পায়ে গোলার মতো শট রয়েছে। প্রথম ম্যাচে সে ভাবে নজর কাড়তে না পারলেও ডার্বির আগে হুঙ্কার ছেড়েছেন, ‍‘‍‘বড় ম্যাচে নিজের সেরাটা নিংড়ে দেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement