ম্যাচের পরে দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষ। ফাইল চিত্র।
গত ১ অক্টোবর কানজুরুহান স্টেডিয়ামে ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল লিগে জাভার দুই ক্লাব আরেমা এবং পার্সিবায়া সুরাবায়ার মধ্যে খেলা শেষ হওয়ার পরেই দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা বেধে যায়। ঝামেলা শেষ পর্যন্ত দাঙ্গায় পরিণত হয়। দুই দলের বহু সমর্থক মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়েন। ঝামেলা আরও বাড়ে পুলিশ মাঠে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করে। ঘটনায় পদপিষ্ট এবং শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রাণ যায় ১৭৪ জনের।
ইন্দোনেশিয়া সরকার এই ঘটনার জন্য সেই সময় দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। ঘটনার তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। সেই তদন্তকারী কমিটিতে থাকা ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মাহফুদ মহম্মদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাসের ফলেই সে দিন ফুটবল মাঠে এত সমর্থকদের মৃত্যু হয়েছে। অন্য আরও একটি দল সে দিন ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের বিষক্রিয়ার পরিমাণ পরীক্ষা করছে। তার ফলাফল আসার অপেক্ষা। তিনি আরও জানান, ঘটনার তদন্তের ১২৪ পাতার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেশের প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর কাছে পাঠানো হয়েছে।
ভিড় নিয়ন্ত্রণে সে দিন কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছিল পুলিশ। ছবি: রয়টার্স।
তদন্তকারী দলের মতে, সে দিন স্টেডিয়ামের ভিতরে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার না করার কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশ ছিল না। তাঁরা ভিড় নিয়ন্ত্রণে সেটির যথেচ্ছ ব্যবহার করেছিলেন। তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা পিএসএসআই এবং ম্যাচটির আয়োজক সংস্থার গাফিলতিও এই ঘটনার জন্য দায়ী।
বিপুল সংখ্যক সমর্থকের মৃত্যুর পর ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা পিএসএসআই-কে প্রশ্নের পাহাড়ের সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষত যেখানে ফুটবল নিয়ামক সংস্থা ফিফা-র নিয়ম রয়েছে, ভিড় সামলাতে কখনই কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার করা যাবে না।
পিএসএসআই এবং ফিফা মিলে আরও একটি কমিটি গঠন করেছে যেটি সে দেশের প্রতিটি স্টেডিয়ামের ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলিকে খতিয়ে দেখবে। এই ঘটনার ফলে সে দেশে আগামী বছর অনূর্ধ্ব২০ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন বড়সড় প্রশ্নের সম্মুখীন।