আশাবাদী: তৃতীয় পর্যায়ে যাওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ইগর। —ফাইল চিত্র।
হোলির দিন সারা দেশজুড়ে যখন রংয়ের খেলায় মেতেছে ভারতবাসী, গুয়াহাটিতে নেমে এসেছিল আঁধারের কালো ছায়া। আফগানিস্তানের কাছে এগিয়ে থেকেও হেরে গিয়ে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় পর্যায়ে ভারতের ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়েছে। কিন্তু স্বপ্নজাল বুনে চলেছেন সুনীল ছেত্রীদের ক্রোট কোচ ইগর স্তিমাচ। ম্যাচের পরে তিনি বলেছেন, “অবশ্যই আমরা এখনও পরের পর্বে যেতে পারি। আমি আগেও বলেছি, দীর্ঘ শিবিরের পরে দলটাকে একেবারে অন্য রকম দেখাবে।”
দেশের হয়ে ১৫০-তম ম্যাচে ৩৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা সুনীল ছেত্রীর একমাত্র গোলে এগিয়ে থাকার পরেও রহমত আকবরি ও শরিফ মুখাম্মদের গোলে গুয়াহাটিতে ম্যাচ জিতে নেয় আফগানিস্তান। প্রসঙ্গত ভারতের হয়ে ১, ২৫, ৫০, ৭৫, ১০০, ১২৫ ও ১৫০তম ম্যাচে গোল করেন সুনীল। কিন্তু মঙ্গলবার তা ম্লান হয়ে গেল ভারতের অতি সাধারণ মানের পারফরম্যান্সে। তার জন্য ইগর কাঠগড়ায় তুলেছেন ভারতীয় ফুটবলারদেরই। বলেছেন, “আমাদের অর্ধেক ফুটবলারের খেলাতেই সেই ঝাঁঝ চোখে পড়ছে না। এটা তো পাঁচ দিনে বদলানো যায় না। আরও যোগ করেন, “আমরা কুয়েত বা লেবাননের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে আগে হারিয়েছি। আফগানিস্তান তো আর কুয়েত বা লেবাননের মতো দল নয়।”
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হারের ফলে চার ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। গোলপার্থক্যে (-১০) সমসংখ্যক ম্যাচে সমসংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে ভারতের ঠিক পরেই রয়েছে আফগানিস্তান। প্রথম দু’টি দল যোগ্যতা অর্জন করবে পরের পর্যায়ের জন্য। ফলে আগামী ম্যাচগুলিতে ভারতকে শুধু জিতলেই চলবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচগুলির দিকেও। এই পারফরম্যান্স দিয়ে ভারত পরের পর্বে যেতে পারলে তা অবিশ্বাস্য হবে বলেও মনে করছেন অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞ।
মঙ্গলবার মনবীর সিংহদের নিম্নমানের পারফরম্যান্সে ক্ষমাও চেয়েছেন স্তিমাচ। তিনি কি পদত্যাগ করবেন? বিশ্বকাপার ক্রোট কোচ জানিয়ে দেন, তিনি এক লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশে ভারতে এসেছেন। জুন পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব ছাড়া নিয়ে কোনও রকম মন্তব্য করবেন না। তার পরেই তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন। স্তিমাচ আরও বলেছেন, “এই ধরণের ম্যাচের চাপ সামলানোর জন্য যে রকম তীব্রতার দরকার, তার অভাব দেখা গিয়েছে। আশা করি, মে-জুন মাসে আমরা আরও ভাল প্রস্তুতি নিতে পারব। আমাদের উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ফলাফল বদলানোর ব্যাপারে আমি আশাবাদী।”
কৌশলগত ভাবে কি কোনও ভুল রয়ে যাচ্ছে? একেবারেই মানতে চাইলেন না স্তিমাচ। জানালেন আফগানরা বারবার দুরপাল্লার পাসে ভারতের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু ভারতীয় ডিফেন্স সেই প্রতিরোধ রুখতে একেবারেই ব্যর্থ। স্তিমাচের কথায়, “ম্যাচে আমাদের অনেক কিছুই ঠিক ভাবে হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্ষণভাগে অনেকটা সুযোগ দিয়ে দিয়েছি। যার পুরোটা সদ্ব্যবহার করেছে আফগানিস্তান।”
পাশাপাশি স্তিমাচ শুনিয়ে দিয়েছেন তাঁর লক্ষ্য। বলেছেন, “তৃতীয় পর্বে শুধু উঠলেই চলবে না, আমাদের মাঠে নেমে প্রত্যেক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। আগামী জুনে আমাদের ভাল খেলতেই হবে। না হলে শেষ আট বছরে যেখানে ছিলাম, সেখানেই পড়ে থাকতে হবে।”