ভুটানকে গোলের মালা পরানোর পর ভারতের অনূর্ধ্ব ২০ মহিলা দলের ফুটবলাররা। নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগেই অনূর্ধ্ব ১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে শেফালি বর্মার দল। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলেও দাপটে শুরু ভারতের মেয়েদের। শুক্রবার অনূর্ধ্ব ২০ সাফ কাপে ভুটানকে ১২ গোল দিল ভারতের মেয়েরা।
সাফ ফুটবলে বরাবরের মতো এ বারও খেতাব জয়ের দাবিদার ভারত। প্রথম ম্যাচেই ভারতীয় দলের দাপট সেই দাবিকে আরও শক্তিশালী করল। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আয়োজিত প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ১২-০ ব্যবধানে হারাল ভারত। হ্যাটট্রিক করলেন ভারতের তিন ফুটবলার। প্রথম ম্যাচ হওয়ায় শুরুটা কিছুটা সাবধানে করেছিল ভারত। প্রতিপক্ষকে কিছুটা মেপে নেওয়ার পর আক্রমণের ঝড় তোলেন ভারতীয় ফুটবলাররা। তাতেই একে একে এল ১২ গোল।
২৯ মিনিটে দলের হয়ে প্রথম গোল করেন অপর্ণা নার্জারি। ৩৬ মিনিটে তাঁর দ্বিতীয় গোল থেকে ব্যবধান বাড়ায় ভারত। দলের তৃতীয় গোলটি আসে ৪৩ মিনিটে নিতু লিন্ডার পা থেকে। প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে নিজের প্রথম গোল করেন মেসার্স নেহা। প্রথমার্ধে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ভারতীয় দলকে দ্বিতীয়ার্ধে আরও আত্মবিশ্বাসী দেখায়। চাপে পড়ে যাওয়া ভুটানকে কার্যত নিজেদের বক্সের মধ্যেই আটকে রাখলেন ভারতের অনূর্ধ্ব ২০ মহিলা ফুটবলাররা। ৫০ মিনিটে নিজের প্রথম এবং দলের পঞ্চম গোল করেন অনিতা কুমারী। পাঁচ মিনিট পরেই নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পক্ষে ষষ্ঠ গোল করে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেন নেহা। ৬১ মিনিটে আবার গোল পায় ভারত। এ বারের গোলদাতা লিন্ডা কম। দু’মিনিট পরেই ৬৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পক্ষে অষ্টম গোল করেন লিন্ডা। তাতেও গোলের খিদে মেটেনি ভারতীয় দলের। ধারাবাহিক ব্যবধানে গোল করেন ভারতীয় ফুটবলাররা। ৬৯ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পক্ষে নবম গোল আসে অনিতার পা থেকে। ৭৫ মিনিটে নিজের তৃতীয় তথা দলের ১০ নম্বর গোল করে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেন লিন্ডা। তিন মিনিট পরেই ম্যাচের ৭৮ মিনিটে দলের ১১তম গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন অনিতাও। এর পরেও আক্রমণের ঝাঁঝ কমায়নি ভারতীয় দল। ৯০ মিনিটে নিজের তৃতীয় এবং দলের হয়ে ১২তম গোল আসে নেহার পা থেকে। তিনি মাঠে নেমেছিলেন পরিবর্ত ফুটবলার হিসাবে। তাঁকে প্রথম একাদশে রাখেননি কোচ মেমল রকি। ভারতীয় দলের আক্রমণের সামনে ভুটানের রক্ষণ ভাগকে গোটা ম্যাচেই বেশ অসহায় দেখিয়েছে। ভারতকে আটকানোর জন্য তাদের কোনও পরিকল্পনাও চোখে পড়েনি। যদিও ভারতীয় দলের স্ট্রাইকাররা কয়েক বার ভুটানের অফসাইডের ফাঁদে পা দেন।
প্রথম ম্যাচেই দলের এমন পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত ভারতীয় দলের কোচ। রকি বলেছেন, ‘‘দুর্দান্ত খেলেছে মেয়েরা। মাঠের সব জায়গার দখল ছিল ওদের পায়ে। তবু এই জয় নিয়ে বসে থাকলে হবে না। আমাদের পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’’ ৩১ মিনিটে পরিবর্ত ফুটবলার হিসাবে মাঠে নামা নেহাও উচ্ছ্বসিত হ্যাটট্রিক করে। তিনি বলেছেন, ‘‘ভীষণ ভাল লাগছে। আমি খুব উত্তেজিত। এই প্রথম জাতীয় দলের হয়ে গোল করলাম। সঙ্গে হ্যাটট্রিকও করলাম। সতীর্থদের থেকে দারুণ সাহায্য পেয়েছি। পরের ম্যাচেও গোল করতে চাই। কাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু করব।’’ ভারতের পরের ম্যাচ ৫ ফেব্রুয়ারি আয়োজক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ভারতীয় দলে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা সোনালি সোরেনও। তুলনায় দুর্বল ভুটানের বিরুদ্ধে তাঁকে নামাননি ভারতীয় দলের কোচ।