মহড়া: শনিবার অনুশীলনে মগ্ন বুমোস। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
যুবভারতীতে অনুশীলন শেষ করে শনিবার সন্ধেয় দিমিত্রি পেত্রাতোস, প্রীতম কোটালরা ভক্তদের সইয়ের আবদার মিটিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। কোচ জুয়ান ফেরান্দোও বেরিয়ে গিয়েছেন সহকারীদের সঙ্গে। ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে এলেন হুগো বুমোস। নিরপত্তারক্ষীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভিড়ের মধ্যে থেকে সবুজ-মেরুন তারকাকে দ্রুত গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু বুমোস সোজা চলে গেলেন ড্রেসিংরুমের পিছনে বরফস্নান করতে। ভয়ঙ্কর মশার উপদ্রবকেও উপেক্ষা করে কনকনে ঠান্ডা জলে প্রায় আধ ঘণ্টা নিজেকে ডুবিয়ে রাখলেন।
বরফস্নানে বুমোসের শরীর হয়তো ঠান্ডা হল, কিন্তু মন নয়! আইএসএলের সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে হায়দরাবাদ এফসি-র ফুটবলারদের কড়া পাহাড়ায় নিজের খেলা খেলতে না পারার যন্ত্রণা যেন ক্ষতবিক্ষত করছে তাঁকে। বললেন, ‘‘ম্যাচের শুরু থেকেই ওদের লক্ষ্য ছিলাম। আসলে এই দলে আমি একমাত্র সৃজনশীল ফুটবলটা খেলি। এই কারণেই হায়দরাবাদের ফুটবলাররা আমাকে আটকাতে মরিয়া ছিল।’’ যোগ করলেন, ‘‘এই কারণেই প্রথম পর্বের ম্যাচে পরিকল্পনা বদল করে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা উঁচু পাসে খেলতে বাধ্য হয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও অবশ্য গোল করতে পারিনি।’’
সোমবার যুবভারতীতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বের দ্বৈরথেও তো একই কৌশল নেবে হায়দরাবাদ। মুহূর্তের মধ্যে চোয়াল শক্ত হয়ে গেল বুমোসের। বলে দিলেন, ‘‘হ্যাঁ, এই ম্যাচেও একই লক্ষ্য থাকবে ওদের। তবে আমাকে আটকাতে হায়দরাবাদের ফুটবলাররা ব্যস্ত থাকলে দলের বাকিরা ফাঁকা জায়গা পাবে। ওদের সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। হায়দরাবাদের রক্ষণ ভেঙে গোল করার পথ আমাদের খুঁজে বার করতেই হবে।’’
হায়দরাবাদের সঙ্গে আগের ম্যাচে ড্র করায় কোচ জুয়ান ফেরান্দোর মতো বুমোসও হতাশ। বলে দিলেন, ‘‘জিতলেই বরং আমরা সোমবার ঘরের মাঠে হায়দরাবাদের চেয়ে এগিয়ে থেকে নামতে পারতাম। অনেক খোলা মনে খেলতে পারতাম। সোমবার নতুন ভাবে সবকিছু শুরু করতে হবে। আমাদের আরও নিখুঁত ফুটবল খেলতে হবে এই পর্বে।’’
এটিকে-মোহনবাগানকে ফাইনালে তোলাই শুধু নয়, মরোক্কজাত বুমোস স্বপ্ন দেখেন ভারতের হয়ে খেলারও। বলছিলেন, ‘‘ভারতীয় দলের হয়ে খেলতে চাই। কিন্তু ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্ব দেওয়া হয় না। তাই এই দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলার ইচ্ছে থাকলেও এই স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না।’’
জুয়ানের দলের আর এক তারকা দিমিত্রি বলছিলেন, ‘‘হায়দরাবাদ দারুণ শক্তিশালী দল। আগের ম্যাচে আমরা একাধিক সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারিনি। আশা করছি, এ বার তা হবে না। নিজেদের সমর্থকদের সামনে ওদের হারিয়ে ফাইনালে উঠতে পারব। তবে এই ম্যাচেও কিন্তু রীতিমতো কঠিন লড়াই হবে।’’
হায়দরাবাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার বিশেষ মহড়া শনিবারই সেরে নিয়েছেন জুয়ান। রণনীতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অনুশীলনের প্রথম আধ ঘণ্টা কাউকে মাঠের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেননি স্পেনীয় কোচ। চোট সারিয়ে গ্লেন মার্টিন্স সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সব ঠিক থাকলে মাঝমাঠের শক্তি বাড়াতে পুইটিয়ার পরিবর্তে তিনি শুরু করতে পারেন। তবে আশিক কুরুনিয়নের খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।