Mohun Bagan vs East Bengal

৫ দ্বৈরথ: শনিবারের ডার্বিতে তিন বিভাগে কাদের মধ্যে লড়াই? খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন

শনিবার গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে কলকাতা ডার্বি। শহর বদলালেও ডার্বির উত্তেজনা কখনওই কমে না। দু’দলের সমর্থকদের রেষারেষি, কথার লড়াই থাকবেই। মাঠের লড়াইও টেক্কা দেবে। এ বার মাঠের কোন কোন লড়াইয়ে চোখ থাকবে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৫
Share:

(বাঁ দিক থেকে) শুভাশিস বসু, জেমি ম্যাকলারেন, দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস এবং শৌভিক চক্রবর্তী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

দু’দিন পরেই কলকাতা ডার্বি। তবে এ বারের ডার্বি যুবভারতী নয়, হবে গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে। শহর বদলালেও ডার্বির উত্তেজনা কখনওই কোনও অংশে কমে না। দু’দলের সমর্থকদের রেষারেষি, কথার লড়াই, তর্কাতর্কি থাকবেই। একই সঙ্গে মাঠের লড়াইও টেক্কা দেবে।

Advertisement

এই মুহূর্তে মোহনবাগান রয়েছে পয়েন্ট তালিকায় সবার উপরে। ফর্ম, ফুটবলার, রি‌জ়ার্ভ বেঞ্চ— প্রায় সব বিভাগেই এগিয়ে রয়েছে তারা। ইস্টবেঙ্গল সেখানে রয়েছে ১১ নম্বরে। অস্কার ব্রুজ়‌োর হাত ধরে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিকই। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের ছিটকে যাওয়া এবং চোট-আঘাত তাদের কাজ কঠিন করে তুলেছে। তবু ডার্বিতে তারা চেষ্টা করবে আপ্রাণ লড়াই করার। সেই দ্বৈরথের আগে পাঁচটি লড়াইয়ের জায়গা তুলে ধরল আনন্দবাজার অনলাইন, যা দেখা যেতে পারে শনিবারের ম্যাচে।

পি ভি বিষ্ণু বনাম শুভাশিস বসু

Advertisement

গত দু’-তিনটি ম্যাচে কেরলের তরুণ বিষ্ণু যে রকম ফর্মে রয়েছেন তাতে ডার্বিতে প্রথম একাদশে তাঁর জায়গা পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে বিষ্ণুকে হয়তো রাইট উইংয়ে খেলতে হবে। কারণ লেফট উইংয়ে খেলবেন নাওরেম মহেশ। রাইট উইংয়ে খেললে বিষ্ণুর সঙ্গে লড়াই হবে মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বসুর। বিষ্ণুর মধ্যে যেমন চোরা গতি রয়েছে, তেমনই রয়েছে পায়ের কাজ। সূক্ষ্ম স্পর্শে বল বিপক্ষের আয়ত্তের বাইরে নিয়ে যেতে পারেন। সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে শুভাশিসকে। মোহনবাগানের অধিনায়কের গতি নিয়ে এখনও সমস্যা রয়েছে। উপরে উঠে গেলে নামতে সমস্যা হয়। ডার্বিতে সে রকম ভুল করতে চলবে না। ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে গেলে বিষ্ণুকে অবাধে খেলতে দিলে চলবে না। যে কোনও মুহূর্তে একটা ভাল সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বিষ্ণুর।

লিস্টন কোলাসো বনাম নিশু কুমার

ইস্টবেঙ্গলের রাইট ব্যাক হিসাবে বেশির ভাগ ম্যাচ খেলেছেন মহম্মদ রাকিপ। তবে অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার দিক থেকে বিচার করলে ডার্বিতে নিশু কুমারের খেলা উচিত। নিশুর আগে ডার্বিতে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। মাথাও ঠান্ডা রাখতে পারেন। যে-ই খেলুন, লিস্টনকে আটকানো বেশ কঠিন কাজ হতে চলেছে। চলতি মরসুমে ভাল ফর্মে রয়েছেন লিস্টন। বাঁ দিক থেকে ডান দিকে কাট করে ঢুকে পড়তে তাঁর জুড়ি নেই। সেই জায়গাটাই দেওয়া চলবে না। এই একটা জায়গায় ইস্টবেঙ্গলকে যথেষ্ট সাবধানি থাকতে হবে।

জেমি ম্যাকলারেন বনাম আনোয়ার আলি

প্রথম পর্বের ডার্বিতে গোল করেছিলেন ম্যাকলারেন। দ্বিতীয় পর্বেও গোল করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। ম্যাকলারেনকে আটকানোর ভার পড়বে আনোয়ারের উপরেই। ইস্টবেঙ্গলের বিশ্বস্ত ডিফেন্ডার আগে মোহনবাগানে থাকলেও ম্যাকলারেনের সঙ্গে খেলেননি। প্রথম পর্বের ম্যাচে ম্যাকলারেনকে আটকাতেও পারেননি। তবে ভুল থেকে নিশ্চয়ই শিক্ষা নিয়ে নামতে চাইবেন তিনি। ম্যাকলারেনের সবচেয়ে বড় গুণ পজিশনিং। ফলে আনোয়ারকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে তিনি কখনও নজরের আড়ালে না যান। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছে গেলে ম্যাকলারেনকে আটকানো কঠিন। কারণ তাঁকে বল বাড়ানোর মতো একাধিক ফুটবলার মোহনবাগান দলে রয়েছেন।

গ্রেগ স্টুয়ার্ট বনাম শৌভিক চক্রবর্তী

মাঝে কয়েকটি ম্যাচে চোটের জন্য খেলতে না পারলেও ডার্বির আগে ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন স্টুয়ার্ট। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোচ হোসে মোলিনা তাঁকে প্রথম একাদশেই রাখতে পারেন। বিশেষত যেখানে দিমিত্রি পেত্রাতোসের খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। স্টুয়ার্ট খেললে ইস্টবেঙ্গলের চাপ যে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্টুয়ার্ট কখন কোথা থেকে জায়গা করে নেবেন, কখন কোন ফাঁক দিয়ে সঠিক লোককে পাস বাড়াবেন তা বিপক্ষ ফুটবলারেরা বুঝে উঠতে পারেন না। তাই স্টুয়ার্টকে আটকানোর দায়িত্ব নিতে হবে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার শৌভিককেই। সে জন্য তাঁকে বাড়তি পরিশ্রম করতে হতে পারে। স্টুয়ার্ট যাতে বল না পান বা বেশি ক্ষণ পায়ে বল না রাখতে পারেন সেটা খেয়াল রাখতে হবে শৌভিককে। কারণ বল পায়ে স্টুয়ার্ট যে ভয়ঙ্কর এটা ইতিমধ্যেই আইএসএলের অনেক দল জেনে গিয়েছে।

দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস বনাম টম অলড্রেড

কেরল থেকে ইস্টবেঙ্গলে আসার পর ধারাবাহিক ভাবে হয়তো গোল করতে পারছেন না দিয়ামানতাকোস। তবে তাঁর মতো সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার নিজের দিনে বিপক্ষকে মাত করে দিতে পারেন। দীর্ঘদেহী ফুটবলারকে আটকানোর জন্য আর এক দীর্ঘদেহীকেই দরকার হয়। সেই কাজ করতে পারেন অলড্রেড। মোহনবাগানের ডিফেন্ডার রক্ষণে এ মরসুমে ভরসা জুগিয়েছেন। মাথায় চোট নিয়েও খেলতে দেখা গিয়েছে অস্ট্রেলীয় ডিফেন্ডারকে। ডার্বিতে মোহনবাগানের অন্যতম সেরা অস্ত্র হতে পারেন তিনি। শারীরিক শক্তি কাজে লাগিয়ে আটকে দিতে পারেন দিয়ামানতাকোসকে। দিয়ামানতাকোসের পাশে যদি ক্লেটন সিলভা খেলেন, তা হলে অলড্রেডের পাশেও আলবের্তো রদ্রিগেস সতীর্থ হিসাবে রয়েছেন যিনি কাজে আসতে পারেন। সব মিলিয়ে, লাল-হলুদ আক্রমণের সঙ্গে সবুজ-মেরুন রক্ষণের একটা ভাল লড়াই দেখা যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement