বিশ্বকাপ ফাইনালে মেসি, এমবাপেদের লড়াই নিয়ে বাড়ছে উত্তাপ। ফাইল ছবি।
লিয়োনেল মেসিদের লক্ষ্য ৩৬ বছরের ব্যর্থতা মুছে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করা। অন্য দিকে পর পর দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ফ্রান্সের সামনে। রবিবারের ম্যাচ যেমন মাঠে ফুটবলারদের দক্ষতার লড়াই, তেমনই দুই কোচের কৌশলের লড়াইও। এই ম্যাচের নির্ণায়ক হতে পরে মাঠের তিনটি লড়াই।
কাতার বিশ্বকাপে সোনার বুট জেতার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন লিয়োনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপে। ফ্রান্সের স্ট্রাইকার অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালে গোল করতে পারেননি। এই দুই ম্যাচে তাঁকে খেলার তেমন সুযোগ দেননি প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলাররা। মরক্কোর রক্ষণ ভাগে দুই ফুটবলার আশরাফ হাকিমি এবং আশরাফ দারির কড়া নজরদারি এড়িয়ে তেমন কিছু করতে পারেননি এমবাপে। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, আর্জেন্টিনাও এমবাপেকে স্বাধীন ভাবে খেলতে দেওয়ার ভুল করবে না। মেসির ক্ষেত্রে বিষয়টা এত সহজ নয়। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞ অধিনায়ক প্রতিপক্ষের একাধিক ফুটবলারের নজরদারি এড়িয়েই গোল করছেন এবং সতীর্থদের দিয়ে গোল করাচ্ছেন।
এমবাপে বনাম মোলিনা
এমবাপেকে আটকে রাখার মতো ফুটবলার রয়েছে আর্জেন্টিনা কোচ লিয়োনেল স্কালোনির হাতে। এমবাপেকে আটকানোর দায়িত্ব তিনি দিতে পারেন রাইট ব্যাক মোলিনাকে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ফুটবলার গোটা মরসুমে তেমন খেলতে না পারলেও বিশ্বকাপে চেনা ছন্দে রয়েছেন। স্কালোনি টটেনহ্যামের সেন্টার ব্যাক ক্রিস্টিয়ান রোমেরোকে দিতে পারেন এমবাপেকে জ়োনাল মার্কিংয়ের দায়িত্ব। যদিও এমবাপের সঙ্গে মূল লড়াই হবে মোলিনার। যিনি জিতবেন, তাঁর দলও বাড়তি সুবিধা পাবে।
মেসি বনাম চুয়ামেনি
এমবাপে যেমন আর্জেন্টিনার জন্য বড় চিন্তা, তেমনই ফ্রান্সের বড় চিন্তা অনবদ্য ছন্দে থাকা মেসি। কড়া মার্কিং করেও মেসিকে আটকাতে পারছে না কোনও দলই। তাঁকে আটকাতে দেশঁ ব্যবহার করতে পারেন মিডফিল্ডার অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে। গত বছর প্যারিস সঁ জরমঁ বনাম মোনাকো ম্যাচে মেসিকে আটকানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে চুয়ামেনির। যদিও তেমন সাফল্য পাননি। ফ্রেঞ্চ লিগের সেই ম্যাচে মেসি নিজে একটি গোল করেন এবং একটি গোল করান এমবাপেকে দিয়ে। চলতি মরসুমে রিয়েল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর চুমেনির খেলা অনেকটাই বদলে গিয়েছে। বেশ ভাল ছন্দেও রয়েছেন তিনি। চুয়ামেনি মেসিকে আটকে রাখতে পারলে ফাইনালের লড়াইয়ে অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় থাকবে ফ্রান্স।
গ্রিজম্যান বনাম ফার্নান্ডেজ়
ফুটবলে মাঝমাঠ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে দল মাঝমাঠের দখল নিতে পারে, তাদের জয়ের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এই লড়াইয়ে নেতৃত্বে দেবেন ফ্রান্সের পক্ষে অ্যান্টনি গ্রিজম্যান এবং আর্জেন্টিনার পক্ষে এনজ়ো ফার্নান্ডেজ়। দু’দলের দুই মিডফিল্ডারই রয়েছেন ভাল ছন্দে। গ্রিজম্যান যেমন ফ্রান্সের আক্রমণ তৈরির অন্যতম কারিগর তেমন আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের ভরসা ফার্নান্ডেজ়। মাস ছয়েক আগেও আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয়নি তাঁর। অথচ এর মধ্যেই তিনি আর্জেন্টিনা কোচের পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছেন। রবিবার এই দুই ফুটবলারের মাঝমাঠের পারফরম্যান্সের উপর অনেকটাই নির্ভর করবে তাদের দেশের কাপ ভাগ্য।