ইরানের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ গোলের পর উচ্ছ্বাস ইংল্যান্ডের জ্য়াক গ্রিলিশদের। ছবি: টুইটার।
বিশ্বকাপের ম্যাচে ইংল্যান্ডের সামনে দাঁড়াতেই পারল না এশিয়ার শক্তি ইরান। ইরানের বড় ব্যবধানের হারের অন্যতম কারণ ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের কৌশল। এ ছাড়াও রয়েছে কয়েকটি কারণ।
১) প্রথম ম্যাচেই দুরন্ত ছন্দে দেখা গেল ইংল্যান্ডের স্ট্রাইকার বুকায়ো সাকাকে। আর্সেনালের ফুটবলার সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখলেন ইরানের রক্ষণকে। জায়গা পরিবর্তন করে খেললেন প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের নজর এড়াতে। দলের হয়ে দু’টি গোলও করলেন সাকা। ইংল্যান্ডের সহজ জয়ের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন তিনি।
২) ইংল্যান্ডের জয়ের প্রথম কারণ অনবদ্য সাকা হলে, দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই ইংল্যান্ডের শক্তিশালী রক্ষণ সংগঠন। ইরানের স্ট্রাইকারদের জোনাল মার্কিং করলেন ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডাররা। বক্সের কাছাকাছি এলেই বল কেড়ে নিয়েছেন তাঁরা। ডিফেন্ডারদের সাহায্য করতে প্রয়োজনে নীচে নেমে এসেছেন মিডফিল্ডাররা। ফলে ইরান সারা ম্যাচে সে ভাবে সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডারদের নিখুঁত ট্যাকল এবং অনুমান ক্ষমতাও ধার নষ্ট করেছে প্রতিপক্ষের।
৩) ইংল্যান্ডের সহজ জয়ের তৃতীয় এবং সম্ভবত সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাদের কোচের কৌশল। সাউথগেট ইরানের বিরুদ্ধে কিছুটা পিছন থেকে খেলালেন হ্যারি কেনকে। ইংল্যান্ড অধিনায়কই দলের প্রধান স্ট্রাইকার। তাঁর নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে আক্রমণ। সাউথগেট জানতেন প্রতিপক্ষ হ্যারি কেনকে কড়া মার্ক করবে। তাই বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের পা থেকে দলের সেরা অস্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে একটু নীচে থেকে খেলালেন। এর ফলে অনেকটা ফাঁকা জায়গা পেলেন হ্যারি কেন। গোল করতে না পারলেও সতীর্থদের জন্য গোলের একাধিক সুযোগ তৈরি করে দিলেন।
৪) ইংল্যান্ডের সহজ জয়ের চতুর্থ কারণ অবশ্যই দু’দলের শক্তির পার্থক্য। ইরান এশিয়ার অন্যতম সেরা শক্তি হলেও খাতায়-কলমে অনেকটাই পিছিয়ে ইংল্যান্ডের থেকে। ইংরেজদের আটকানোর জন্য প্রয়োজন ছিল মাঝমাঠের দখল নেওয়া। কিন্তু ইরানের ফুটবলাররা সে কাজটা করতেই পারলেন না। বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের পায়ে রাখতেই হিমশিম খেলেন তাঁরা।
৫) ইংল্যান্ডের সহজ জয়ের আরও একটা কারণ হল ম্যাচের আগেই মানসিক ভাবে ইরানের পিছিয়ে পড়া। ম্যাচের আগের দিনই ইরান পর্তুগিজ কোচ কার্লোস কুইরোজ স্বীকার করে নেন, ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের পর এ বারের ইংল্যান্ডের দলই সব থেকে শক্তিশালী। মাঠে নামার আগেই প্রতিপক্ষকে কোচের এগিয়ে রাখা হয়তো মানসিক ভাবে পিছিয়ে রেখেছিল ইরানের ফুটবলারদের। যা তাঁদের শরীরী ভাষাতেই ফুটে উঠেছে।