মেসিদের উদ্ধার করে নিয়ে গেল হেলিকপ্টার। ছবি: রয়টার্স
দোহা থেকে বুয়েনোস আইরেস। দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা যাত্রা করে সোমবার ভোররাতে ফিরেছিল লিয়োনেল মেসি-সহ গোটা আর্জেন্টিনা দল। দেশে ফিরেই আবেগের বিস্ফোরণ দেখতে পেলেন তাঁরা। তবে সেই নিয়ন্ত্রণহীন আবেগ সমস্যায় ফেলল আর্জেন্টিনার দলকে। হুডখোলা বাসে যাত্রা মাঝপথেই বন্ধ করে দিতে হল। মেসিদের উদ্ধারে সরকারকে নামাতে হল হেলিকপ্টার। সেটায় চড়েই বাকি পথ গেলেন তাঁরা। ভক্তদের ভালবাসার অত্যাচারে কার্যত ‘পালাতে’ হল লিয়োনেল মেসিদের।
কী হয়েছিল ঘটনাটি?
মঙ্গলবার দুপুরে বিমানবন্দর থেকে বিখ্যাত সৌধ ‘ওবেলিস্ক’-এর উদ্দেশে হুডখোলা বাসে বিজয়যাত্রা করার কথা ছিল মেসিদের। সেই বাসযাত্রা শুরুও হয়েছিল নির্ধারিত সময়ে। কিন্তু যত বাস এগোতে লাগল, দেখা গেল সমর্থকদের আবেগের বিস্ফোরণ। বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে বুয়েনোস আইরেস রুদ্ধ করে দিয়েছিলেন সে দেশের মানুষ। সরকারের অনুমান, প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ নেমেছিলেন রাস্তায়। এর মধ্যে ওবেলিস্কের আশপাশেই জড়ো হয়েছিলেন ৩০ লক্ষ। অনেক মানুষকে দেখা যায় উড়ালপুল ধরে বাসের পিছনে দৌড়তে। বাস এগোতেই পারছিল না ভিড়ের চোটে।
এত দূর ঠিক ছিল। সমস্যা শুরু হয় এর পর থেকেই। আর্জেন্টিনার বাসে ওঠার চেষ্টা করতে থাকেন অনেক সমর্থক। একটি ব্রিজের তলায় দিয়ে বাস যাওয়ার কথা ছিল। সেই ব্রিজ থেকে অনেকে লাফিয়ে বাসের উপরে পড়েন। যাঁরা রাস্তায় ছিলেন, তাঁরা চেষ্টা করতে থাকেন কোনও না কোনও ভাবে বাসের উপরে চড়ার। স্থানীয় মানুষের দাবি, ফুটবলারদের উদ্দেশে বিভিন্ন জিনিস ছোড়া হয়েছে, যাতে তাদের আঘাত লাগতেও পারত। মেসিদের নিরাপত্তা নিয়ে তখন বিরাট সমস্যা দেখা দেয়।
মেসিরা চাপলেন এই হেলিকপ্টারে। ছবি: রয়টার্স
বাধ্য হয়ে আসরে নামে সরকার। বাস এগোনোর কোনও উপায় নেই দেখে দ্রুত হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়। বাস থেকে সরাসরি সেই হেলিকপ্টারে উঠে ওবেলিস্কের উদ্দেশে রওনা দেন মেসিরা। রাস্তায় জড়ো হওয়া সমর্থকরা এতে খেপে যান। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় তাঁদের। পুলিশের উদ্দেশেও ছোড়া হতে থাকে ইট-পাটকেল। তবে আনন্দের পরিবেশে বেশি কড়া ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। হুঁশিয়ারি দিয়ে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মেসিরা হেলিকপ্টারে উঠে যাওয়ার পরেই রাস্তা ফাঁকা হতে শুরু করে।
তার আগে আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়ো তাপিয়া টুইট করে লেখেন, “ওবেলিস্কে গিয়ে সবাইকে অভিবাদন জানানো হয়তো সম্ভব হবে না। নিরাপত্তারক্ষীরা আমাদের এগোতে দিচ্ছেন না। সমস্ত ফুটবলারের প্রতিনিধি হিসাবে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”