সহজ সুযোগ নষ্ট দিয়ামানতাকোসের। হেডের চেষ্টা করেও গোল করতে পারেননি তিনি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
প্রথমার্ধেই অন্তত চারটি গোল করতে পারত ইস্টবেঙ্গল। মাত্র তিন বিদেশি নিয়ে খেলতে নামলেও প্রথমার্ধ জুড়ে শুধু লাল-হলুদের দাপট। একের পর এক আক্রমণ উঠে আসে মুম্বইয়ের বক্সে। সহজ সুযোগ ফস্কান দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। তাঁর একটি শট পোস্টে লেগেও ফেরে। গোটা ম্যাচে অসংখ্য গোলের সুযোগ পেল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ফুটবলে গোলই শেষ কথা বলে। সেটাই করতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। ফলে মুম্বইয়ের সঙ্গে ড্র করে ফিরতে হল তাদের। এই ড্রয়ের পরেও পয়েন্ট তালিকায় এক ধাপ উঠল ইস্টবেঙ্গল। ১৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে তারা।
খেলার শুরু থেকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল না কোন দল অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলছে। এই ম্যাচে নন্দ কুমারকে রক্ষণে খেলান কোচ অস্কার ব্রুজ়ো। দিয়ামানতাকোসের পিছনে রেখেছিলেন পিভি বিষ্ণু ও রিচার্ড সেলিসকে। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাসে আক্রমণে উঠছিল ইস্টবেঙ্গল। মুম্বইকে খুব নড়বড় দেখাচ্ছিল।
১৩ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলের সুযোগ পায় ইস্টবেঙ্গল। প্রথমে সেলিস ও তার পরে নন্দ গোল লক্ষ্য করে শট মারেন। দু’টি বলই বাঁচান মুম্বইয়ের গোলরক্ষক পূর্বা লাচেনপা। আক্রমণের ঝাঁজ কমায়নি ইস্টবেঙ্গল। পুরো খেলাটাই হচ্ছিল মুম্বইয়ের অর্ধে। বিষ্ণু, সেলিসরা বার বার প্রতিপক্ষ বক্সে ঢুকে পড়ছিলেন। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারছিলেন না তাঁরা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ম্যাচের সহজতম সুযোগ পান দিয়ামানতাকোস। বক্সে ঢুকে তাঁর দিকে ক্রস দেন বিষ্ণু। দিয়ামানতাকোসের কাছে কোনও ডিফেন্ডার ছিল না। ঝাঁপিয়ে হেড করতে যান ইস্টবেঙ্গলের বিদেশি স্ট্রাইকার। কিন্তু মাথা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। উল্টে হাতে বল লাগান। ফলে গোল না হলেও হলুদ কার্ড দেখেন দিয়ামানতাকোস। দু’মিনিট পরে আবার সুযোগ পান দিয়ামানতাকোস। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর বাঁ পায়ের শট গোলরক্ষক লাচেনপাকে পরাস্ত করলেও পোস্টে লেগে ফেরে। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আক্রমণ শুরু করে মুম্বই। কিন্তু তাদের আক্রমণ দানা বাঁধছিল না। ইস্টবেঙ্গলও গোল করার চেষ্টা করছিল। দু’দলের আক্রমণই ফাইনাল থার্ডে গিয়ে আটকে যাচ্ছিল। ৭৫ মিনিটে আবার দিয়ামানতাকোস এগিয়ে দিতে পারতেন লাল-হলুদকে। বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া তাঁর হেড আবার পোস্টে লেগে ফেরে। বোঝা যাচ্ছিল, চেষ্টার ত্রুটি না করলেও ফুটবলদেবতা হয়তো ইস্টবেঙ্গলের পাশে নেই। শেষ পর্যন্ত সেটাই হল।
৮০ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গলকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল। লাল-হলুদ রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে যান পরিবর্ত হিসাবে নামা জর্জ মেন্ডোজ়া। তাঁর ডান পায়ের শট ভাল বাঁচান গিল। নইলে পিছিয়ে পড়ত লাল-হলুদ। যত সময় গড়াচ্ছিল, তত চাপ বাড়াচ্ছিল মুম্বই। চাপে পড়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ। যদিও গোল করতে পারেনি মুম্বই। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য শেষ হয় ম্যাচ। দু’দলই পয়েন্ট নষ্ট করে। এই ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করায় ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফে ওঠার সুযোগ আরও কমল।