শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন। ছবি: সংগৃহীত।
চলতি মরসুমে আইএসএলের ম্যাচে বার বার এগিয়ে গিয়েও হেরে যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। মুহূর্তের ভুলে গোল হজম করতে হচ্ছে। মাঠে ফেলে রেখে আসতে হচ্ছে তিন পয়েন্ট। কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে শনিবার যুবভারতীতে ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়ার ডাক দিলেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তাঁর মতে, ছোটখাটো ভুলের জন্যই গোল হজম করতে হচ্ছে। এই ভুলগুলি শুধরে নেওয়ার জন্য অনুশীলনে তাঁরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেন।
দশ দিন আগে ভুবনেশ্বরে গোয়ার বিরুদ্ধে ৭৩ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থাকার পরেও দু’মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টি গোল খেয়ে ১-২ হারতে হয় লাল-হলুদ বাহিনীকে। তার আগের ম্যাচেও বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথমে গোল করে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও হার মানে ইস্টবেঙ্গল। গত মরশুমে এ ভাবে ১১ পয়েন্ট খুইয়েছিল তারা। এই মরশুমে ইতিমধ্যেই এ ভাবে ছ’পয়েন্ট খুইয়েছে। বুধবার কুয়াদ্রাত বলেঠেন, “গত বারের মানসিকতার প্রভাব এ বারেও পড়ছে, এটা বলা ঠিক নয়। এ বার আমাদের নতুন দল। কিছু কিছু জায়গা এখনও শোধরাতে হবে। এ মরশুমে দশটার মধ্যে পাঁচটা ম্যাচে আমরা জিতেছি, এতে আমি খুশি। দলের মধ্যে জেতার মানসিকতা রয়েছে। জেতার জায়গায় যেতেও পারছি আমরা, এটা ভাল লক্ষণ। হারার জায়গা থেকেও আমরা জিতেছি, ড্র করেছি। সুতরাং প্রতিপক্ষ হিসেবে যে আমরা খারাপ, এ কথা বলা যায় না।”
দলের ছেলেদের লড়াকু মানসিকতা নিয়ে যে তিনি যথেষ্ট খুশি তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে কুয়াদ্রাত বলেছেন, “দলের ছেলেদের মানসিকতায় আমি খুশি। ওরা যে ভাবে পরিশ্রম করছে, তা খুশি হওয়ারই মতো। আসলে প্রতিটি ম্যাচেই অন্য ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। এক এক সময়ে এক এক রকমের ফুটবল খেলতে হয়। গত ম্যাচে আমাদের ছেলেদের মানসিকতা যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল। এটা মানসিকতা বা লড়াইয়ের প্রশ্ন নয়। এমন হয়। মাঠের মধ্যে খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু।”
আরও অনেক কাজ যে এখনও বাকি, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে কুয়াদ্রাত বলেন, “আমাদের মাঠের মধ্যে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই ব্যাপারটা খেলোয়াড়দের মাথার মধ্যে ঢোকানোর চেষ্টা করে চলেছি। কারণ, আমাদের আরও বড় বড় ম্যাচ খেলতে হবে। অতিরিক্ত সময়ের খেলা খেলতে হবে, ফাইনালও খেলতে হবে। এমনি এমনি তো চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় না। বেঙ্গালুরু এফসি-কে যে ভাবে চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য তৈরি করেছিলাম, ইস্টবেঙ্গলকেও সে ভাবেই তৈরি করার চেষ্টা করছি”।
দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কোচের একটাই অভিযোগ, সেট পিসে তারা নিখুঁত হতে পারছেন না। এই প্রসঙ্গে বলেন, “আপনারা যদি আইএসএলে আমার অতীতের রেকর্ড দেখেন, তা হলে দেখবেন সেট পিসের ওপর বরাবরই জোর দিয়ে এসেছি আমি। আমার প্রশিক্ষণে থাকা দল সেটপিসে বরাবরই সফল হয়েছে। এখানেও সেটাই করার চেষ্টা করছি। অতীতে আমার দল অনেকগুলো ক্লিন শিট রাখতে পেরেছে। এই নিয়ে এখানেও কাজ করছি। দল কিন্তু সেট পিস থেকে পাওয়া প্রচুর সুযোগ হাতছাড়া করেছে।”
জর্ডনের ২৬ বছর বয়সী সেন্টার ব্যাক হিজাজি মাহের যে এখন মাঠে নামার জন্য পুরোপুরি তৈরি, সেই সুখবরও এ দিন দিয়ে রাখলেন লাল-হলুদ কোচ। জর্ডনের জাতীয় সিনিয়র দলের অন্যতম সদস্যকে মাঠে নামানোর প্রশ্নে তিনি উত্তর দেন, “আমরা গত দু’সপ্তাহে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। হিজাজি দুই ম্যাচেই ৯০ মিনিট খেলেছে। ও ক্রমশ ফিট হয়ে উঠেছে। আমাদের কৌশলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেছে। এখন ও একশো শতাংশ খেলার জন্য তৈরি। আশা করি, কালকের ম্যাচে ওকে নামাতে পারব। তবে শুরু থেকে, না বেঞ্চ থেকে, তা এখন বলতে পারব না।”