অস্ত্র: চেন্নাইয়িনকে হারাতে দিমিত্রি-ই ভরসা মোহনবাগানের। টুইটার
এএফসি কাপের আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনালের আগে কলকাতায় চলে এলেও দিমিত্রি পেত্রাতোসকে খেলাননি এটিকে-মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো। যুবভারতীতে কুয়ালা লামপুর এফসি-র কাছে হারের পরেই তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের অন্দরমহলেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছিল।
ডুরান্ড কাপের পর এএফসি কাপ থেকে মোহনবাগানকে বিদায় নিতে হয়েছিল মূলত স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায়। রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসদের শূন্যস্থান পূরণ করতে ব্যর্থ লিস্টন কোলাসো, মনবীর সিংহরা। এ বার পরীক্ষা আইএসএলে। সোমবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়িন এফসি। দিমিত্রিকে সামনে রেখেই রণনীতি তৈরিতে ব্যস্ত সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচ। গোল করে অভিষেক ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া ২৯ বছর বয়সি অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারও।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে ছিলেন দিমিত্রি। যদিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। দিমিত্রির পাখির চোখ এখন সোমবার যুবভারতীতে চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে গোল করা। ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে মোহনবাগান স্ট্রাইকার বলেছেন, ‘‘মোহনবাগান বিশাল ক্লাব। বহু ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে এই ক্লাবের সঙ্গে। প্রথম বার সবুজ-মেরুন জার্সিতে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছি আমি।’’ যোগ করেন, ‘‘এক মাসের বেশি দলের সঙ্গে অনুশীলন করছি। ফলে সতীর্থদের সঙ্গে বোঝাপড়াও অনেকটা তৈরি হয়ে গিয়েছে।’’
কৃষ্ণ ও ডেভিডের অভাব পূরণ করার দায়িত্ব এখন দিমিত্রির উপরেই। সমর্থকদের প্রত্যাশা কি চাপ বাড়াচ্ছে? আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার বলছেন, ‘‘চাপ নিয়ে খেলতেই আমি বেশি ভালবাসি। যে কোনও রকম পরীক্ষার জন্যই তৈরি রয়েছি আমি।’’ এর পরেই যোগ করেন, ‘‘আমার কাজই হল গোল করা। নিজেকে উজাড় করে দেওয়া। মাঠে নেমে খেলা উপভোগ করা। নিজের দায়িত্ব পালন করতে আমি বদ্ধপরিকর।’’ আইএসএলের জন্য প্রস্তুতি কেমন হয়েছে মোহনবাগানের? উচ্ছ্বসিত দিমিত্রি বললেন, ‘‘খুব ভাল প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। সকলেই প্রচণ্ড পরিশ্রম করছে নিজেদের সেরা দেওয়ার জন্য।’’ রাশিয়ায় খেলার সুযোগ না পেলেও হতাশ নন। বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপের মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় দলে জায়গা পাওয়াটাই বিরাট ব্যাপার। অনেক কিছু শিখেছি।’’ মোহনবাগানে যোগ দেওয়ার আগে আইএসএলে খেলে যাওয়া একাধিক অস্ট্রেলীয় ফুটবলারের পরামর্শও যে তিনি নিয়েছেন, গোপন করেননি। বললেন, ‘‘ভারত ও আইএসএল সম্পর্কে অনেক তথ্যই ওদেরকাছ থেকে পেয়েছি।’’
দিমিত্রির পরিবার গ্রিস থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিল। ১৯৯২ সালের ১০ নভেম্বর সিডনিতে জন্ম তাঁর। ফুটবল শুরু করেন পেনরিথ ইউনাইটেড এফসিতে। ২০০৯ সালে যোগ দেন সিডনি অলিম্পিকের যুব দলে। সেই বছর পেনরিথের সিনিয়র দলে অভিষেক ঘটান। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলের হয়ে খেলে ফেলেছিলেন তিনি। ২০১০ সালে যোগ দেন সিডনি অলিম্পিক দলে। দিমিত্রির বাবাঅ্যাঞ্জেলোও একই ক্লাবের ফুটবলার ছিলেন। তিনি অবশ্য খেলতেন রক্ষণে। ভাই কোস্টা ও বোন পানাগিয়োটাও ফুটবলার। উচ্ছ্বসিত দিমিত্রি বলছেন, ‘‘আমাদের পুরো পরিবারটাই ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত। সকলেই খেলে। একে অপরকে উদ্বুদ্ধ করি, শিক্ষা নিই।’’চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে লড়াই কতটা কঠিন? সবুজ-মেরুনের নতুন আশা বলে দিলেন, ‘‘সব ম্যাচই কঠিন। কোনও প্রতিপক্ষ দুর্বল নয়। তবে এই মুহূর্তে নিজেদের দল নিয়েই ভাবতে চাই। মনঃসংযোগকরতে চাই খেলায়।’’
মোহনবাগানের কোচ জুয়ান অবশ্য সতর্ক। পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে রুদ্ধদ্বার অনুশীলন করানোর সিদ্ধান্তনিয়েছেন জুয়ান।