Kolkata Derby

সমর্থকদের গোল উৎসর্গ ডার্বির নায়ক পেত্রাতোসের

যুবভারতীর শব্দব্রহ্মকে সঙ্গী করে ছুটতে থাকলেন পাশের গ্যালারির দিকেও। তখন সিংহভাগ মোহনবাগান ফুটবলাররাও ছুটলেন সেই দিকে। জনাকয়েক সমর্থক সেই মহাযজ্ঞে সামিল হয়েছিলেন।

Advertisement

সুতীর্থ দাস

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:০১
Share:
An image of Celebration of Dimitri Petratos with Jason Cummings during the Derby final of the Durand Cup

হুঙ্কার: গোলের পরে উৎসব (বাঁ দিকে) জেসন কামিংস এবং দিমিত্রি পেত্রাতসের। রবিবার। ছবি:সুমন বল্লভ।

ম্যাচের বয়স তখন ৭১ মিনিট। নয় মিনিট আগেই অনিরুদ্ধ থাপা লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন। দশজনের মোহনবাগান তখন বেশ চাপে। প্রতিআক্রমণে নিজেদের অর্ধ থেকে ডান প্রান্ত দিয়ে প্রায় ২৫ গজ দৌড়ে ইস্টবেঙ্গল বক্সের ঠিক বাইরে বাঁ পায়ের ইনস্টেপে বল জালে জড়িয়ে দিলেন দিমিত্রি পেত্রাতস। কোনও দিকে না তাকিয়ে এর পরে বুকে হাত দিয়ে ছুটে গেলেন মাঠ পেরিয়ে মোহনবাগান গ্যালারির দিকে। সেখানে পৌঁছে প্রতিপক্ষকে হুঙ্কার ছুড়ে দিলেন তিনি। সঙ্গী হলেন জেসন কামিংস, ব্রেন্ডন হামিলরা। সেখানেই থামেননি তিনি। যুবভারতীর ওই শব্দব্রহ্মকে সঙ্গী করে ছুটতে থাকলেন পাশের গ্যালারির দিকেও। তখন সিংহভাগ মোহনবাগান ফুটবলাররাও ছুটলেন সেই দিকে। জনাকয়েক সমর্থক সেই মহাযজ্ঞে সামিল হয়েছিলেন। তাঁদের দেখে পিছনে ছুটে গেল পুলিশও।

Advertisement

মোহনবাগান গ্যালারি তখন খুশিতে পাগলপারা। উল্টোদিকে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে এক দর্শকের চোখ দিয়ে তখন জল গড়িয়ে পড়ছে। এই দুটো মুহূর্ত হয়তো বুঝিয়ে দিয়ে গেল, একবিংশ শতাব্দীতেও ডার্বির মাহাত্ম্য ঠিক কোথায়?

An image of Mohun Bagan Players

জয়োল্লাস: কাঙ্ক্ষিত ডুরান্ড কাপ চলে এল হাতে। রবিবার যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে উচ্ছ্বাস মোহনবাগান ফুটবলারদের।  ছবি:সুমন বল্লভ।

তখন তাঁর মাথায় ঠিক কী চলছিল? সাংবাদিক সম্মেলনে দিমিত্রি বলেন, “মাথায় কিছুই ছিল না। গোল করে খুশি হয়েছিলাম। নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। আবেগের বশে দৌড়ে গিয়েছিলাম।” যোগ করলেন, “কোচ, সাপোর্ট স্টাফ, সমর্থক সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।” তিনি এই বিশ্বমানের গোল উৎসর্গ করছেন কাকে? ম্যাচের নায়কের উত্তর, “সমর্থকেরা টিকিট কেটে আমাদের জয় দেখতে আসেন। খুবই ভাল লাগছে তাঁরা আজ তৃপ্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন। আমার পরিবারই শুধু নয়, সমর্থকদেরও এই গোল উৎসর্গ করছি।”

Advertisement

অথচ মোহনবাগানের ডার্বিতে ওঠার কথাই ছিল না। মহমেডান বনাম জামশেদপুর এফসি ম্যাচে ছয় গোলের জায়গায় সাত গোল হলে ডুরান্ডের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে যেতে হত জেসন কামিংসদের। জুয়ান ফেরান্দো কিন্তু মানতে চাইলেন না এটাই তাঁর কেরিয়ারের সেরা ডার্বি। তাঁর কথায়, “আমরা প্রাক মরসুম পর্বে রয়েছি। অতীতে আমরা মুম্বই সিটি এফসি, এফসি গোয়ার মত দলকে হারিয়েছি। এই জয়কে বিশেষ ভাবে দেখছি না। তবে দলের জয়ে আমি খুবই খুশি।”

তবে আবেগের জোয়ারে ভেসে যেতে নারাজ ফেরান্দো। বললেন, “আমরা এএফসি কাপের দিকে এখন নজর দিচ্ছি। সেই প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার থেকেই তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করব।” না থেমে বললেন, “তবে আমাদের জন্য সুখবর দলে চোট-আঘাতের কোনও সমস্যা নেই। আমরা দল হিসেবে খেলেছি।”

অনিরুদ্ধ থাপা প্রসঙ্গে জুয়ান বললেন, “ও ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।” ডুরান্ডে মোট ৩৪ জন ফুটবলার চুক্তিবদ্ধ করার ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, “আমাদের দল থেকে বেশ কয়েক জন ফুটবলার জাতীয় দলে খেলতে গিয়েছে। তবে আমরা নিয়ম ভাঙিনি। যদি নিয়ম ভাঙতাম, তবে ডুরান্ড কমিটি নিশ্চয়ই খেলতে দিত না।” মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কেইথ পেলেন সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার। মহমেডানের ডেভিড লাললানসাঙ্গা পেলেন সোনার বুট। নন্দ কুমার পেলেন সোনার বল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement