গত বছর এপ্রিল মাসে জন্মের সময় মৃত্যু হয় রোনাল্ডো এবং তাঁর বান্ধবী জর্জিনার ছেলের। —ফাইল চিত্র
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের তিন বার ‘মিসক্যারেজ’ হয়। চতুর্থ বার যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় এক জনের মৃত্যু হয়। সেই সময় যে মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে তাঁদের যেতে হয়েছে, সেই কথাই জানালেন জর্জিনা। নেটফ্লিক্সের ‘আই অ্যাম জর্জিনা’ নামে একটি শো-য়ে এই কথা জানান তিনি।
রোনাল্ডো মানেই মাঠে আগ্রাসী মনোভাব। গোলের পর লাফিয়ে উঠে উচ্ছ্বাস। গোল করার জন্য তাঁর খিদে ৩৮ বছর বয়সেও কমেনি। কিন্তু এর বাইরেও এক রোনাল্ডো আছেন। যিনি সন্তানের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন। বান্ধবীর পাশে দাঁড়াতে খেলা ছেড়ে দেশে ফেরেন। এক রোনাল্ডোকে চেনালেন জর্জিনা।
গত বছর এপ্রিল মাসে যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ছিল জর্জিনার। কিন্তু সেই সময় মেয়ে বেলার জন্ম হলেও ছেলের মৃত্যু হয়। জর্জিনা বলেন, “আল্ট্রাসাউন্ড করাতে যেতে ভয় পেতাম আমি। তিন বার গর্ভেই সন্তান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল আমার। তাই প্রতি বার আল্ট্রাসাউন্ড করানোর সময় ভয় করত। ভেঙে পড়েছিলাম। বুঝতে পারতাম না কী করব।” কন্যা বেলাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে বাকি সন্তানদের প্রথমে বলতে পারেননি যে, ছেলে মারা গিয়েছে। বলেছিলেন, সে পরে আসবে।
পরে রোনাল্ডো তাঁর বাকি সন্তানদের জানান ছেলের মারা যাওয়ার খবর। জর্জিনা বলেন, “আমি বলেছিলাম অ্যাঞ্জেল (ছেলের এই নাম ঠিক করে রেখেছিলেন তাঁরা) পরে আসবে। রোনাল্ডো পরে ওদের বলে যে, অ্যাঞ্জেল স্বর্গে। সত্যিটা বলে দিয়েছিল ও।” রোনাল্ডোর পাঁচ সন্তান। এর মধ্যে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো জুনিয়রের মায়ের নাম জানাননি পর্তুগিজ ফুটবলার। সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম হয় এভা এবং মাতেওর। অ্যালানা এবং বেলার জন্ম দেন জর্জিনা।
নেটফ্লিক্সের শো-টি মুক্তি পাবে ২৪ মার্চ। সেই শো-য়ে জর্জিনা জানাবেন তাঁর এবং রোনাল্ডোর সেই সময়ের কথা। রোনাল্ডো একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সেই সময় তাঁর মনে কী চলছিল। রোনাল্ডো জানিয়েছিলেন যে, বাবা এবং সন্তানের চিতাভস্ম রাখা আছে তাঁর বাড়িতে। তিনি বলেন, “সারা জীবন রেখে দেব এটা আমার কাছে। কখনও সমুদ্রে বা নদীতে ফেলে দেব না। আমার বাড়ির নীচে ছোট একটা চার্চ আছে। সেখানে রেখে দিয়েছি দু’জনের চিতাভস্ম। আমি ওদের সঙ্গে কথা বলি। আমার মনে হয় ওরা আমার পাশেই আছে।”
সেই সাক্ষাৎকারেই রোনাল্ডো জানিয়েছিলেন, তাঁর সন্তানের মৃত্যুর পর বাড়ির অবস্থার কথা। রোনাল্ডো বলেন, “জর্জিনা বাড়ি ফেরার পর অন্য সন্তানরা বলতে থাকে, আরও এক জন কোথায়? ওদের বুঝতে এবং মেনে নিতে সময় লেগেছিল। এক সপ্তাহ পর আমি ঠিক করি ওদের সত্যিটা জানানো দরকার। আমাদের ছেলে অ্যাঞ্জেল স্বর্গে চলে গিয়েছে। এটাই জানিয়েছিলাম ওদের।”