একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার এক সপ্তাহ আগে ধর্মঘটে কানাডার মহিলা ফুটবলাররা। ছবি: টুইটার।
ধর্মঘটের পথে কানাডার মহিলা জাতীয় দলের ফুটবলাররা। দাবি মতো অর্থ না পাওয়া পর্যন্ত দেশের হয়ে মাঠে না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। কয়েক দিন পরেই আমেরিকা, ব্রাজ়িল এবং জাপানের সঙ্গে একটি প্রতিযোগিতায় খেলার কথা মহিলা দলের। তার এক সপ্তাহ আগে আন্দোলনে সামিল হলেন কানাডার মহিলা ফুটবলাররা।
বেশ কিছু দিন ধরেই কানাডার ফুটবল সংস্থার সঙ্গে ফুটবলারদের বেতন নিয়ে মতবিরোধ চলছে। পুরুষ দলের ফুটবলাররা বেতন বাড়ানোর দাবিতে সরব হয়েছেন। মহিলা ফুটবলারদের দাবি, পুরুষ খেলোয়াড়দের সমান বেতন। কয়েক বার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরেও দাবি আদায় করতে পারেননি ফুটবলাররা। তাই ধর্মঘটের পথ বেছে নিয়েছেন মহিলা ফুটবলাররা।
গত টোকিয়ো অলিম্পিক্সে মহিলাদের ফুটবলে সোনা জিতেছিল কানাডা। মহিলা ফুটবলাররা ধর্মঘট ডাকায় কিছুটা চাপে পড়তে পারে সে দেশের ফুটবল সংস্থা। কানাডিয়ান সকার প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিএসপিএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘কানাডা সকার ক্রমাগত ফুটবলারদের প্রাপ্য অর্থ কেটে নিচ্ছে। এই ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ। নিজেদের পেশার স্বার্থে পদক্ষেপ করার এটাই সঠিক সময়।’’
পুরুষ এবং মহিলা ফুটবলারদের যৌথ সংগঠন এই বিবৃতি দিলেও পুরুষ জাতীয় দলের ফুটবলাররা ধর্মঘটের পথে যাননি। মহিলাদের জাতীয় দলের অধিনায়ক ক্রিস্টিন সিনক্লেয়ার টুইটে লিখেছেন, ‘‘যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিত্ব করব না। আমাদের দাবির প্রক্ষিতে এখনও কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি আমাদের। শুক্রবার পর্যন্ত অনুশীলন করেছি আমরা। ইতিবাচক কিছু না হলে আগামী বৃহস্পতিবার শিবিলিভস কাপে আমরা আমেরিকার সঙ্গে খেলব না।’’
ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মহিলা দলের প্রাক্তন ফুটবলার বেকি স্কট বলেছেন, ‘‘আমরা অনুশীলন বন্ধ রাখছি। আমরা আর কোনও বৈঠকে আগ্রহী নই। জাতীয় দলের হয়ে আমরা আপাতত খেলব না। পুরুষ এবং মহিলা দল একসঙ্গে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। অথচ মহিলা ফুটবলারদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভেদ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। আমরা শেষ পর্যন্ত ভাল ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। ধৈর্য রাখার চেষ্টা করেছি। তাতেও কোনও সুফল পাইনি। সামান্য সৌজন্য নিশ্চয়ই আশা করতে পারি আমরা।’’
মহিলা ফুটবলাররা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত জানানোর পর কানাডা সকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘মহিলাদের জাতীয় দলের ফুটবলারদের সমবেতনের দাবি আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। কানাডা সকার এ নিয়ে কোনও রকম চুক্তি করতে রাজি নয়। আইনি পরামর্শ নিয়ে মহিলা জাতীয় দলের ফুটবলারদের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁদের একাধিক আর্থিক দাবির ক্ষেত্রে আমরা সহমত হয়েছি।’’ চার দেশীয় প্রতিযোগিতার আগে ধর্মঘটের সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক বলা হয়েছে কানাডা সকারের পক্ষ থেকে।