Football Fan

ফুটবল মাঠে মহাভারতের সঞ্জয়! মায়ের চোখ দিয়ে খেলা দেখে দৃষ্টিহীন ছেলে

দৃষ্টিহীন ছেলে নিকোলাসকে পাশে বসিয়ে ফুটবল ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তের বিবরণ দেন সিলভিয়া। বাকি দর্শকদের মতো সেও গোল হলে আনন্দ করে। হাসে, নাচে। মায়ের চোখেই ফুটবল দেখে সে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:২৭
Share:

নিকোলাসকে (ডান দিকে) খেলার বিবরণ শোনাচ্ছেন সিলভিয়া (বাঁ দিকে)। ছবি: টুইটার

অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বিবরণ দিয়েছিলেন সঞ্জয়। নিজের প্রাসাদে বসেই চোখের সামনে কৌরব-পাণ্ডবদের যুদ্ধ দেখতে পেতেন দৃষ্টিহীন রাজা। এ যুগেও তেমন ঘটনা ঘটে। ১২ বছরের দৃষ্টিহীন ও বিশেষ ভাবে সক্ষম নিকোলাসের কাছে সঞ্জয় তাঁর মা ৫৬ বছরের সিলভিয়া গ্রেকো। মাঠে ছেলেকে পাশে বসিয়ে ফুটবল ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তের বিবরণ দেন সিলভিয়া। বাকি দর্শকদের মতো সেও গোল হলে আনন্দ করে, হাসে, নাচে। মায়ের চোখেই ফুটবল ম্যাচ দেখতে পায় দৃষ্টিহীন নিকোলাস।

Advertisement

ব্রাজিলের সাও পাওলোর ক্লাব পামেরাসের সমর্থক সিলভিয়া। ছেলে নিকোলাসও তাই। ২০১৯ সালে প্রথম বার দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল মাঠে। পামেরাসের সবুজ জার্সি পরে মাঠে বসে ছেলেকে খেলার বিবরণ দিচ্ছেন সিলভিয়া। সেই বিবরণ শুনে একেবারে ঠিক সময়ে আনন্দে লাফিয়ে উঠছে নিকোলাস। দেখে মনে হচ্ছে, সে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে খেলা। সেটা সম্ভব হচ্ছে মা সিলভিয়ার জন্যই।

মাঠে খেলা দেখতে দেখতে ছেলেকে ঠিক কী বলেন তিনি? সিলভিয়া বলেন, ‘‘আমি নিজের মতো করে খেলার বিবরণ দিই। যেমন, কোন ফুটবলার কোন ধরনের জার্সি পরে আছে? তাদের জুতোর কী রং? চুলের রং কেমন? আমার আবেগ থেকে এ সব কথা বেরিয়ে আসে। আমি তো পেশাদার নই। আমি যা দেখি, সেটাই ওকে বলি। এমনকি, রেফারিকে গালমন্দ করি। তখন ও বুঝতে পারে রেফারি কোনও খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

Advertisement

পামেরাসের জার্সিতে মা-ছেলে। ছবি: টুুইটার

ছেলেকে পামেরাসের সমর্থক করতে কিন্তু বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল সিলভিয়াকে। কারণ, তাঁর স্বামী ও মেয়ে অন্য দলের সমর্থক। একটা বুদ্ধি খাটান তিনি। নিকোলাসের প্রিয় ফুটবলার নেমার। একটি অনুষ্ঠানে নেমারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পায় সে। নেমার নিকোলাসকে নিজের কাঁধে তোলেন। তখনই সিলভিয়া নেমারকে জিজ্ঞাসা করেন, তাঁর প্রিয় ক্লাব কী? নেমার বলেন পামেরাস। তখন সিলভিয়া ছেলেকে বলেন, ‘‘দেখো তোমার প্রিয় ফুটবলারের প্রিয় ক্লাব পামেরাস। তোমার মায়ের প্রিয় ক্লাব পামেরাস। তা হলে তুমি কাকে সমর্থন করবে?’’ তার পর থেকে মায়ের সঙ্গে নিকোলাসেরও প্রিয় ক্লাব পামেরাস।

এখন ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলে পরিচিত নাম তাঁরা। সেখানকার টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে নিয়মিত ডাক পান। ২০১৯ সালে তাঁদের সম্মান জানিয়েছে ফিফা। বিশ্বের সেরা সমর্থকের সম্মান পেয়েছেন সিলভিয়া ও নিকোলাস। এখনও ছেলেকে নিয়ে মাঠে যান সিলভিয়া। এখনও মায়ের চোখেই ফুটবল দেখে নিকোলাস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement