Eid al-Fitr

সম্পাদক সমীপেষু: আয় আরো বেঁধে বেঁধে

ধর্ম নিয়ে এখন যে বিভাজনের রাজনীতি চলছে তাকে থামানো যাবে তখনই, যখন একে অপরকে ভাল করে জানবে, নিজেদের ভুল বা সঙ্কীর্ণতাগুলোকে ছেড়ে পরস্পরের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৫:৪১
Share:

টানা উপবাসের পরে একফালি চাঁদ আনে খুশির খবর। এক মাস নানা কামনা বাসনা থেকে নিজেকে মুক্ত করার অভ্যাস পালন, সহনশীলতা, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা, সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার, দুঃখী মানুষদের প্রতি সহানুভূতি— এগুলোই করার কথা। যাঁরা পারেননি তাঁদের জন্য পরের বছর রমজান মাস আবারও সুযোগ এনে দেবে। তখনও ব্যর্থ হলে আবার তার পরের বছর। তবে পুরস্কার আছে সকলের জন্যই— ইদ-উল-ফিতর।

Advertisement

দুর্গাপুজো এবং ইদ, বাংলার দুই শ্রেষ্ঠ উৎসব। একটি আসে শিউলি বিছানো পথ ধরে, আর একটি চাঁদের সাম্পানে চড়ে। ধূপধুনো, শঙ্খধ্বনিতে এক জনের আবাহন। অন্য জন সাজে সুরমা, মেহেন্দি, সুগন্ধি আতরে। দুটো উৎসবে ধর্মীয় ভাব অর্থাৎ পূজাচার, প্রার্থনা, নমাজ, দোয়ার উপরে উৎসবের সুরটিই বেজে ওঠে আগে। সেখানে ভালমন্দ খাওয়াদাওয়া, ঘোরাঘুরি, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা— এগুলোই যেন প্রধান হয়ে ওঠে।

ইসলাম ধর্মে রোজার সময় দরিদ্র মানুষদের উদ্দেশ্যে অর্থ বা নতুন পোশাক দানের যে নিয়মটি বাধ্যতামূলক, সেটির কারণে ইদের দিনে সকলেই নিজের মতো করে ভাল খাবার খান, নতুন পোশাক পরে ইদের আনন্দে শামিল হন। তিন দিন ধরে চলে ইদের আনন্দ। আজকাল অর্ডার করলেই কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিভিন্ন নামীদামি রেস্তরাঁ থেকে নানা রকমের সুখাদ্য ঘরের দরজায় এসে হাজির হয়। তার জন্য কি ইদের আনন্দ ম্লান হয়ে যায়? কখনওই না। সিমুইয়ের যে কত রকমের খাবার হয়, তা রেস্তরাঁগুলোর থেকে মা, খালা, চাচি, ফুপুরাই বেশি জানেন। নারকেল দুধের ক্ষীর, শুকনো ঝরঝরে সিমুই কিংবা চিনির রসে ভিজিয়ে রেখে কাজু, আমন্ড বাদামের টুকরো দিয়ে সিমুই, এ সব বাড়িতেই হয়। রোজার শেষ দিনে ইফতারের পরে কোমরে আঁচল বা ওড়না পেঁচিয়ে কুসুম গরম জলে চালের আটা দিয়ে রুটি বানানো শুরু। খাসির মাংসের ঝোল রান্না হয় রুটি বা ঘিয়ে ভাজা পরোটা দিয়ে খাওয়ার জন্য। ছোট সাইজ়ের আস্ত মুরগি দিয়ে মুর্গ মুসল্লম বানানো হয়। পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় সেই পদ। যাঁদের বাড়িতে বিরিয়ানি রান্না হয়, তাঁরা বাকি পদে মাংসের চাঁপ বানান। ছোট ছোট মাটির ভাঁড়ে পরিবেশিত হবে জাফরান আর কাজুবাদাম বাটা দিয়ে তৈরি করা ফিরনি।

Advertisement

হিন্দু বন্ধু এবং হিন্দু প্রতিবেশীরাও ইদের আনন্দ লুটেপুটে নেবেন। এক সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া এবং আড্ডার মধ্যে দিয়ে দু’তরফের জানাজানিটা আরও বেশি করে হবে। মুসলমান মনের খবর নিলে সমাজটাকে আরও ভাল করে জানতে পারা যাবে। ভাসা ভাসা ধারণা নিয়ে থাকার জন্যই পাশাপাশি থেকেও কোনও দিন কাছাকাছি আসতে পারেনি দু’টি সম্প্রদায়। দু’পক্ষকেই এগিয়ে এসে দুর্গোৎসব এবং ইদের আনন্দে অংশগ্রহণ করতে হবে।

ধর্ম নিয়ে এখন যে বিভাজনের রাজনীতি চলছে তাকে থামানো যাবে তখনই, যখন একে অপরকে ভাল করে জানবে, নিজেদের ভুল বা সঙ্কীর্ণতাগুলোকে ছেড়ে পরস্পরের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।

মাগরিবের আজান এবং সন্ধ্যারতি যদি এক সঙ্গে চলতে পারে, তা হলে শুভ বিজয়া এবং ইদ মোবারক কেন বন্ধু হতে পারবে না? সমস্ত কুচক্রান্তকে পরাজিত করে আসুন আমরা আরও বেঁধে বেঁধে থাকি। শুভ শক্তির জয় হোক।

সাবিনা ইয়াসমিন, কলকাতা-১৪

আধার সমস্যা

আধার কার্ড নিয়ে এখনও মানুষ আঁধারে রয়েছেন। নাম, বাবার নাম, ঠিকানা-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বিস্তর ঝামেলা রয়েছে। ভুল সংশোধন করতে গিয়ে এখনও নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং হেড পোস্ট অফিসে আধার আপডেট হচ্ছে। কোথাও কোথাও শুধু ফোন নম্বর সংযুক্তিকরণ এবং সংশোধন করা হচ্ছে। রঘুনাথগঞ্জ হেড পোস্ট অফিসে ছেলের আধার আপডেট করতে গিয়ে যে বাস্তব অভিজ্ঞতা হল, তা জানাতেই এই চিঠি। শুরু করব ভারপ্রাপ্ত কর্মীর রুক্ষ ব্যবহার দিয়ে। উনি প্রথমেই ওবিসি সার্টিফিকেট এবং ভোটার কার্ড চাইলেন। উত্তরে জানিয়েছিলাম আমরা ‘জেনারেল’ ক্যাটিগরিতে পড়ি। আর, ছেলের এখনও ভোটার তালিকায় নাম তোলার বয়স হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে উনি আমাদের আবেদন নাকচ করে জানালেন আপডেট হবে না।

সে ক্ষেত্রে আমাদের মতো জেনারেল ক্যাটিগরির মানুষদের কী হবে জানতে চাইলে, উনি বাইরে সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় বেশ কিছুটা বিরক্ত হয়ে বিভিন্ন আইডি প্রুফ চাইলেন। দেখালাম, তাতেও কোনও সুরাহা হল না। সবেতেই ভুল ধরতে লাগলেন। মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড, মার্কশিট, ব্যাঙ্কের বই আইডি প্রুফ হিসেবে দেখালেও গ্রাহ্য করলেন না। অবশেষে একটি ফর্ম দিয়ে সেটা পূরণ করে প্রধানের স্বাক্ষর করে আনতে বললেন।

আমার ছেলের একটি সর্বভারতীয় পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে এই আধার আপডেট দরকার হয়েছিল। কিন্তু সরকারি দফতরের এই উদাসীনতার জন্য একটি বছর নষ্ট হয়ে যাবে। অনেক অনুনয় করেও চিঁড়ে ভেজেনি। এ ক্ষেত্রে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের করণীয় কী?

শান্তনু সিংহ রায়, মিঠিপুর, মুর্শিদাবাদ

আন্ডারপাস চাই

কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে এয়ারপোর্ট ৩ নম্বর গেট একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন। এখানে একটি রাস্তা কলকাতা থেকে বারাসতের দিকে গেছে। আর একটি বারাসতের দিক থেকে কলকাতার দিকে আসছে। আর একটি রাস্তা (বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে) দক্ষিণেশ্বরের দিকে গিয়েছে। আর দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে একটি রাস্তা বারাসতের দিকে, অন্যটি কলকাতার দিকে গিয়েছে। প্রত্যেক দিন কয়েক হাজার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। সম্প্রতি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, যাঁদের অধীনে এই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, পুরো রাস্তায় ব্যারিকেড করে দিয়ে রাস্তা পেরোনো প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। যাঁরা যশোর রোড ধরে বারাসতের দিক থেকে এসে বাসে ৩ নম্বর গেটে নামেন, তাঁদের কাছে রাস্তা পেরোনো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন। এমতাবস্থায় এখানে একটি আন্ডারপাস অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

আন্ডারপাস করার জন্য উপযুক্ত জায়গা এখানে আছে। এয়ারপোর্ট ৩ নম্বর গেটে দক্ষিণেশ্বরগামী ফ্লাইওভারের নীচে বিরাট একটি জায়গা খালি পড়ে আছে। সেখানে আন্ডারপাস করা যেতে পারে। এই আন্ডারপাসের একটি মুখ যশোর রোডে, যেখানে কলকাতাগামী বাসের স্টপ আছে, আর অন্য মুখটি যশোর রোড থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তায় করা যেতে পারে। এতে মানুষের রাস্তা পেরোনোর সমস্যার সমাধান হবে। আগামী দিনে এয়ারপোর্ট মেট্রো চালু হলে বহু মানুষের সুবিধা হবে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, অবিলম্বে এখানে এই আন্ডারপাস নির্মাণের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হোক।

সমীর বরণ সাহা, কলকাতা-৮১

গণপরিবহণ নেই

কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র পরিবহণ ব্যবস্থার হাল দিন-দিন খারাপ হচ্ছে। বাস, অটো, ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব-সহ প্রাইভেট গাড়ি যেখানে সেখানে যে যার মতো ভাড়া নিচ্ছে। কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। রাজ্যের এক জন মানুষও বলতে পারবেন না অসুস্থ অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্স সঠিক ভাড়াতে পাওয়া যায়।

এখানে অটো ইউনিয়ন ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়ায়। ‘নো রিফিউজ়াল’ লেখা ট্যাক্সি দেখে লজ্জা লাগে। পছন্দের জায়গা, ভাড়া না পেলে যাবে না। কসবা, বালিগঞ্জ থেকে এল১, এস১, এস৬, ২, ২বি বাসগুলো কোথায় যেন উবে গেল। কেউ কি বলার আছে? পরিবহণমন্ত্রী এ বিষয়ে নজর দিলে ভাল হত।

তপন কুমার সেন, কলকাতা-৩১

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement