সোমবার অনুশীলনে সুনীলেরা। ছবি: টুইটার।
মঙ্গলবার কাতারের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ এবং এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নামছে ভারত। তার আগে এ দেশের ফুটবল সংস্কৃতির উচ্চকিত প্রশংসা করলেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। ইপিএলে দীর্ঘ দিন আর্সেনালকে কোচিং করানো ফরাসি কোচ জানিয়েছেন, ভারতের ফুটবল হল সোনার খনি।
সোমবার ভারতে এসেছেন ওয়েঙ্গার। এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবের সঙ্গে অনেক ক্ষণ কথা হয়। ভারতে এআইএফএফ-ফিফা অ্যাকাডেমি এবং যুব ফুটবলের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। ফিফার প্রতিভা অন্বেষণ দলের সঙ্গে যুক্ত ওয়েঙ্গার। সেই সূত্রেই ভারতে এসেছেন।
ভারতের সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “ভারতের শুধু ফুটবলের উন্নয়ন নয়, এই দেশকে ফুটবলবিশ্বের মানচিত্রে জায়গা দিতে চাই। এই দিনটার কথা যেন সবার মনে থাকে। আমি ভারতকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। ১৪০ কোটির দেশ ফুটবল মানচিত্রে নেই এটা ভেবেই অবাক লাগছে। ভারতে প্রচুর সম্পদ, অসাধারণ গুণমানের ফুটবলার রয়েছে। আমরা আশাবাদী। এই দেশ ফুটবলের সোনার খনি, যা নতুন করে আবিষ্কার করতে হবে।”
এ দিকে, কাতারের বিরুদ্ধে নামার আগে আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্তিমাচ। দলের খেলোয়াড়দের চাপ নিতে বারণ করেছেন। বলেছেন, “আমরা কাতারকে বিভিন্ন দিক থেকে বিশ্লেষণ করেছি এবং গতি ও শক্তির দিক থেকে তারা কতটা কী করতে পারে, তা ভাল করে বুঝে নিয়েছি। আফগানিস্তানকে ওরা আট গোল দিয়েছে। আরও আট গোল দিতে পারত। তাই আমাদের কাছে এই ম্যাচটা বেশ কঠিন। তবে ছেলেদের বলেছি, ম্যাচটা উপভোগ করো। কুয়েতের বিরুদ্ধে জিতে আমরা প্রথম ধাপটা ভাল ভাবেই পেরিয়েছি। আমি চাই না এই ম্যাচে ছেলেরা বাড়তি চাপ নিয়ে খেলুক। বরং কাতারের বিরুদ্ধে নিজেদের গুণগুলো মেলে ধরার চেষ্টা করুক।”
চলতি বছরে ভারত ঘরের মাঠে ১১টি ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে ৯টিতে জিতেছে এবং ২টিতে ড্র করেছে। অর্থাৎ, এই বছরে ঘরের মাঠে হারের মুখে দেখেনি স্তিমাচের প্রশিক্ষণাধীন ভারত। টানা আটটি ম্যাচে গোল খায়নি তারা। তিনটি খেতাবও জিতেছে। ভারতীয় ফুটবলে এমন ধারাবাহিকতা অনেক দিন দেখা যায়নি। এই ধারাবাহিকতার ফলে ফিফার বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৯৯ নম্বরেও উঠে আসে ভারত। কিন্তু দেশের বাইরে তাদের দুর্বলতা ফের ফুটে ওঠে। প্রথমে সেপ্টেম্বরে তাইল্যান্ডে কিংস কাপে ও পরে কুয়ালা লামপুরে অক্টোবরে মারডেকা কাপে কোনও ম্যাচেই জিততে পারেনি তারা।
তবে গত বৃহস্পতিবার দাপুটে ফুটবল খেলে কুয়েতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের অভিযান শুরু করেছে ভারত। গোটা ম্যাচে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে একাধিক সুযোগ তৈরির পর ৭৫ মিনিটের মাথায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ফুটবলার মনবীর সিংয়ের গোলে জয় পায় ভারত। এই জয়ের পর শুধু ভারতীয় কোচ নন, স্বস্তি পেয়েছেন দলের খেলোয়াড়রাও। আনোয়ার আলি, আশিক কুরুনিয়ন ও জিকসন সিংহের মতো নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও ভারত যে এত ভাল খেলবে, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি।
তা নিয়ে স্তিমাচ বলেন, “গ্রুপের দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে গেলে যে দলকে হারানো দরকার, তাদের আমরা হারাতে পেরেছি। এটাই আমাদের উজ্জীবিত করার পক্ষে যথেষ্ট। পরের রাউন্ডে যেতে গেলে আমাদের গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে থাকতে হবে। সেই লক্ষ্যে এগোনোর জন্য আমাদের এই জয় যথেষ্ট সাহায্য করবে। কাতার বরাবরই এই গ্রুপের সেরা দল হিসেবে ফেভারিট। তবে আমরা জানি আমাদের সুযোগ রয়েছে এবং সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই হবে।”