আন্দ্রে চেরনিশভ। —ফাইল চিত্র।
‘নাটক’ দেখাচ্ছেন কোচ আন্দ্রে চেরনিশভ! সামনেই আইএসএলের মিনি ডার্বি। শনিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামার আগে মহমেডান স্পোর্টিংয়ে নাটক দেখা যাচ্ছে। বুধবার হঠাৎ কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন চেরনিশভ। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার প্রধান কোচের দায়িত্বে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
চেরনিশভের ফেরার সম্ভাবনার কথা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে মহমেডান। সেখানে লেখা, দলের প্রধান কোচ চেরনিশভ নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন। এটা দলের পক্ষে ইতিবাচক। কারণ, গত কয়েক বছরে তিনিই এই দল তৈরি করেছেন। তাঁর কোচিংয়েই দল আইলিগ থেকে আইএসএলে উঠেছে। দল আশা করছে, আগামী দিনেও চেরনিশভই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
এখনও ফেরার সিদ্ধান্ত না নিলেও মহমেডানের বক্তব্যে থেকে মনে হচ্ছে, তারা ধরেই নিয়েছে চেরনিশভ ফিরবে। পাশাপাশি বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ক্লাবের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের যে সমস্যা হচ্ছিল, তা সমাধানের পথে অনেকটা এগিয়েছে তারা। একটি খসড়া তৈরি হয়েছে। এ বার আইনি পদক্ষেপ করা হবে। এক বার এই সমস্যা মিটে গেলেই বকেয়া বেতন সব মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মহমেডানকে আইলিগ জেতালেও আইএসএলে সে ভাবে সফল হতে পারেনি চেরনিশভ। ১৭ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট সকলের শেষে মহমেডান। সামনেই মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কঠিন ম্যাচ। তার আগে চেরনিশভ বুধবার সমাজমাধ্যমে লেখেন, “আমার কোচিং কেরিয়ারের সবচেয়ে কঠিন এবং দুঃখের সিদ্ধান্ত। মহমেডানের সঙ্গে আমার যেমন ঝগড়া হয়েছে, তেমন ভালবাসাও ছিল। তবে আমি পেশাদার কোচ। তিন মাস বেতন ছাড়া কাজ করা সম্ভব নয়। এই মরসুমে যে যে সমস্যা হয়েছে, তা নিয়ে আমি কথা বলব না। কখনও সমস্যাকে ভয় পাইনি। সব সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু এটা চলতে পারে না। চোখে জল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম। এর দায় ক্লাব কর্তাদের। তাঁরা চুক্তি ভঙ্গ করেছেন।” জানা যায়, ক্লাবের কাউকে না জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তার পরে কর্তাদের কথায় বরফ হয়তো একটু গলেছে।
মহমেডানে আর্থিক সমস্যা বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে। ফুটবলারেরাও বেতন পাচ্ছেন না। তাঁরা অনুশীলনেও নামতে অস্বীকার করেছেন সেই কারণে। এক সপ্তাহ আগে এক দিন অনুশীলনে গিয়েও মাঠে নামেননি ফুটবলারেরা। মিরজালাল কাশিমভেরা ভেবেছিলেন, ক্লাব বা বিনিয়োগকারীদের তরফে কেউ এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। সমস্যা সমাধানের দিশা দেখাবেন। কিন্তু সাদা-কালো কর্তারা ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলতে আসেননি। শুধু শ্রাচী স্পোর্টসের এক প্রতিনিধি এসেছিলেন মাঠে। আসেননি আর এক বিনিয়োগকারী বাঙ্কারহিলের কোনও প্রতিনিধিও। বসে থেকে হতাশ ফুটবলারেরা হোটেলে ফিরে যান। মাঝে এক বার ফ্লোরেন্ট ওগিয়ার, জোসেফ অ্যাডজেইয়েরা মাঠে নামলেও বল স্পর্শ করেননি। কাশিমভের মতো পুরনো ফুটবলারেরা নতুনদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তবে তেমন লাভ হচ্ছে না। বিশেষ করে নতুন বিদেশি ফুটবলারেরা নিজেদের অবস্থানে অনড়। এখন দেখার এই বিবৃতির পরে সেই সমস্যার সমাধান হয় কি না।