আশাবাদী: সমর্থকদের সুদিন ফেরানোর আশ্বাস কুয়াদ্রাতের । —ফাইল চিত্র।
ফুটবল মরসুম শেষ হয়ে গেলেও তাঁর ছুটি নেই। কার্লেস কুয়াদ্রাত মগ্ন নতুন মরসুমের রূপরেখা প্রস্তুত করতে। প্রবল ব্যস্ততার মধ্যেও বার্সেলোনা থেকে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
অস্ট্রেলীয় বিশ্বকাপার জেমি ম্যাকলারেনের মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে খেলা কার্যত নিশ্চিত। অথচ ইস্টবেঙ্গল এখনও পর্যন্ত কোনও নতুন বিদেশির নাম জানাতে পারেনি। কেমন হচ্ছে আগামী মরসুমের দল গঠন? আশাবাদী কুয়াদ্রাত বললেন, ‘‘ইতিবাচক ভাবেই আমাদের দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। লগ্নিকারী ও ক্লাব যৌথ ভাবে কাজ করছে। লক্ষ্যের দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছি আমরা।’’ এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে প্রচুর ফুটবলারের নাম দেখতে পাচ্ছি। পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমাদের পরিকল্পনা শক্তিশালী দল গড়া। প্রথম একাদশে খেলবে, এ রকম ফুটবলারদের সই করানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা দশ জন নয়, এমন কয়েক জন ফুটবলারকে নিতে চাই যাদের তফাত গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।’’
কেরল ব্লাস্টার্সের হয়ে দুর্দান্ত খেলা দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের লাল-হলুদে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা কতটা? সতর্ক ইস্টবেঙ্গলের স্পেনীয় কোচের জবাব, ‘‘দিমিত্রিয়স দুর্দান্ত ফুটবলার। তবে একাধিক ফুটবলারের সঙ্গেই আমাদের কথাবার্তা চলছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়। এই কারণেই কোনও ফুটবলারের নাম এখন প্রকাশ করতে চাই না। সময় মতো সব জানাব।’’
শক্তিশালী দল গড়ার ক্ষেত্রে অর্থই কি প্রধান অন্তরায়? কুয়াদ্রাত বলছেন, ‘‘গত বারের তুলনায় এ বার দল গঠনের বরাদ্দ অবশ্যই বেড়েছে। কিন্তু এক বছরে তা শূন্য থেকে ১০০ হয়ে গিয়েছে এ রকম ভাবার কোনও কারণ নেই। অর্থ ব্যয় করতে হবে ভেবেচিন্তে। এক দিনে সব কিছু বদলে দেওয়া সম্ভব নয়।’’ হিজাজ়ি মাহের-এর উদাহরণ দিয়ে যোগ করলেন, ‘‘ক্লাবই আমাকে জর্ডন পাঠিয়েছিল হিজাজ়িকে চূড়ান্ত করার জন্য। শুধু তাই নয়। গত মরসুমে ১০জন বিদেশি নিয়েছিলাম। ইমামি ইস্টবেঙ্গল পাশে না থাকলে তা
সম্ভব হত না।’’
গত মরসুমে ডুরান্ড কাপে রানার্স ইস্টবেঙ্গল। সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু আইএসএলে নবম স্থানে শেষ করেছেন ক্লেটন সিলভা-রা। গত মরসুম থেকে কী শিক্ষা নিয়েছেন? কুয়াদ্রাত বললেন, ‘‘অনেক কিছুই শিখেছি। গত ১০-১৫ বছর ক্লাবকে নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। টানা ব্যর্থতা, বারবার লগ্নিকারী পরিবর্তনের ফলে সাফল্য অধরা ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্বে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জিতে সমর্থকদের বাঁধনহারা উল্লাস দেখেছিলাম। সে দিনই উপলব্ধি করছিলাম, আমরা যদি ঠিক দিশাতে এগোতে পারি, সাফল্য আসবেই। সুপার কাপ জিতে তা প্রমাণ করেছিলাম। ১২ বছর পরে কোনও ট্রফি জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। দীর্ঘ নয় মরসুম পরে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র প্রাথমিক পর্বে যোগ্যতা অর্জন করেছি। একটা ট্রফি জিতেই সন্তুষ্ট থাকলে হবে না। আরও সাফল্য পেতে হবে।’’
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান কোথায় এগিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের থেকে? কুয়াদ্রাতের বিশ্লেষণ, ‘‘মোহনবাগান ও মুম্বই সিটি এফসি প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে শক্তিশালী দল গড়েছে। আইএসএলে শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। চ্যাম্পিয়ন হয় মুম্বই। অস্বীকার করার জায়গা নেই অর্থ ব্যয় থেকে প্রথম একাদশ গড়া— সব ব্যাপারেই এগিয়ে মোহনবাগান ও মুম্বই। আমি আশাবাদী ধীরে ধীরে ইস্টবেঙ্গলও ওই উচ্চতায় পৌঁছবে।’’