প্রয়াত হলেন নিখিল নন্দী। ফাইল ছবি
বছরের শুরুতেই কয়েকদিনের ব্যবধানে চলে গিয়েছিলেন পি কে বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চুনী গোস্বামী। এবার ভারতীয় তথা বাংলা ফুটবলের আরও এক প্রাক্তন তারকা নিখিল নন্দী প্রয়াত হলেন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন কারণে অসুস্থ ছিলেন প্রাক্তন অলিম্পিয়ান ফুটবলার। মঙ্গলবার ৮৯ বছর বয়সে নিজের বাড়িতেই দুপুর ২.২০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সেপ্টেম্বর নাগাদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন নিখিল। কিন্তু বড় কোনও শারীরিক সমস্যা তাঁর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। তবে শরীর আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিল। হাসপাতালে যাতায়াত লেগেই ছিল। এ দিন তাঁর পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, শেষের দিকে দীর্ঘ চিকিৎসার দখল আর নিতে পারছিল না নিখিলবাবুর শরীর। চিকিৎসাতেও সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি।
ভারতীয় ফুটবলে নিখিল নন্দীর অবদান অপরিসীম। ১৯৫৬-র অলিম্পিকে তিনি খেলেছিলেন। সে বার সেমিফাইনালে তৎকালীন যুগোশ্লাভিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন। মূলত নিখিলের মার্কিং করার ক্ষমতার কারণে সেই দলের কোচ রহিম সাহেব ছক পালটে ৩-৩-৪ করে দিয়েছিলেন।
আরও খবর: এটিকে মোহনবাগান ছেড়ে কেরলে কিবুর সংসারে শুভ ঘোষ
ভারত সেই ম্যাচে ১-৪ ব্যবধানে পরাজিত হলেও নিখিলের দুরন্ত পারফরম্যান্স যুগোশ্লাভিয়ার কোচ স্ট্যানলি ম্যাথুজের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছিল। নুর মহম্মদ, কেম্পিয়াদের সঙ্গে নিয়ে মাঝমাঠে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিলেন নিখিল।
১৯৫৮-য় তাঁর নেতৃত্বেই দুই প্রধানকে টপকে কলকাতা লিগ জেতে ইস্টার্ন রেল। নিখিলের নেতৃত্বে এবং কোচিংয়ে এক সময় ইস্টার্ন রেলে খেলেছেন প্রয়াত পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনে একসঙ্গে জাতীয় দলেও খেলেছেন।
আরও খবর: ওভার কম হওয়ায় পয়েন্ট, ম্যাচ ফি কাটা গেল অস্ট্রেলিয়ার
ভারতীয় ফুটবলে নিখিল ছিলেন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাঁরা চার ভাই-ই একসময় জাতীয় দলের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। প্রথমে দুই ভাই অনিল এবং সুনীল নন্দী ১৯৪৮ অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করেন। নিখিলের পর আরেক ভাই সন্তোষ নন্দীও ভারতের হয়ে খেলেছেন।
অতি ভদ্র মানুষ, মিশুকে বলে পরিচিত নিখিল ফুটবল ছাড়ার পর মেতে ছিলেন ছোটদের কোচিং করানো নিয়েই। দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে প্রতিদিন ভোরে জনা পঞ্চাশ খুদেকে নিখরচায় কোচিং করাতেন। শেষ দিকে শারীরিক কারণেই সে কাজ থেকে বিরত ছিলেন।
পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামীর পর ভারতীয় ফুটবল ২০২০-তে হারাল আরও এক রত্নকে।