—ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল শিবিরে খালিদ জামিলকে নিয়ে স্বস্তি ফেরার দিনেই নতুন বিতর্কে উত্তপ্ত আবহ। অনুশীলন চলাকালীন বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন মহম্মদ আল আমনা ও কাতসুমি ইউসা। যার জেরে সংঘাত ভুলে ‘সন্ধি’ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) সুভাষ ভৌমিক ও কোচ খালিদের মধ্যে!
রবিবার সকালেও যুবভারতী সংলগ্ন মাঠের ড্রেসিংরুমে কোচকে ছাড়াই ফুটবলারদের নিয়ে টিম-মিটিং করেন সুভাষ। এমনকী, আমনা-রা মাঠে নামার সময়ও দেখা যায়নি খালিদকে। অন্য একটি ড্রেসিংরুমে দরজা বন্ধ করে বসে ছিলেন তিনি। অনুশীলন শুরু হওয়ার প্রায় আধঘণ্টা পরে মাঠে নামলেন লাল-হলুদ কোচ। কিন্তু মাঠের যে দিকে সুভাষ ওয়ার্মআপ করাচ্ছিলেন ফুটবলারদের, সে দিকেই গেলেন না তিনি। চিন্তিত মুখে মাঠের অন্য দিকে হাঁটতে শুরু করে দিলেন। কিছুক্ষণ পরে গোলরক্ষকদের অনুশীলন করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ওয়ার্মআপের পরে টিডি অনুশীলন ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে ফের দরজা বন্ধ করে দিলেন খালিদ। পরিস্থিতি নাটকীয় ভাবে বদলে যেতে শুরু করে এর পর থেকেই।
সুপার কাপের জন্য এই মুহূর্তে ম্যাচ অনুশীলনেই জোর দিচ্ছেন সুভাষ। মাঝমাঠে আমনা ও কাতসুমি-কে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য প্রধান স্ট্রাইকার ডুডু ওমাগবেমি ফিরে গিয়েছেন ফিনল্যান্ডে। তাঁর জায়গায় এ দিন ছিলেন আনসুমানা ক্রোমা। ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎই দেখা গেল কাতসুমি তেড়ে গেলেন আমনা-র দিকে। তাঁর অভিযোগ, পাস না দিয়ে বল নিজের পায়েই বেশি রাখছেন আমনা। পাল্টা প্রতিবাদ করেন আমনাও। দুই তারকাকে সামলাতে আসরে নামেন টিডি। আমনা শান্ত হলেন। কিন্তু কাতসুমি কোনও কথাই শুনতে রাজি নন। হাত-পা ছুড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতেই থাকলেন। এ বার জাপানি তারকার সঙ্গে সংঘাত বেধে গেল ক্রোমা-র। চিৎকার করতে করতে মাঠের বাইরে বেরিয়ে গেলেন লাইবিরিয়ার স্ট্রাইকার। ফুটবলার সামলাতে গিয়ে তখন রীতিমত নাজেহাল অবস্থা টিডি-র। শেষ পর্যন্ত ক্রোমা-কে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মাঠে ফেরালেন অধিনায়ক অর্ণব মণ্ডল। পুরো ঘটনাটাই ড্রেসিংরুমের সামনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখলেন খালিদ।
অনুশীলন শেষ হওয়ার পরেই কোচের ঘরে চলে গেলেন টিডি। প্রায় মিনিট কুড়ি একান্তে বৈঠক করলেন তাঁরা। এর পরেই অভিব্যক্তি বদলে যায় খালিদের। কী কথা হল বৈঠকে? সূত্রের খবর টিডি-কে কোচ বলেছেন, ফুটবলাররা যে ভাবে প্রকাশ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিলেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। দলের ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত সুভাষ নেবেন। কিন্তু ফুটবলারদের সামলানোর দায়িত্ব তাঁকে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন খালিদ। তা নাকি মেনেও নিয়েছেন আসিয়ানজয়ী কোচ। পরে খালিদ বললেন, ‘‘সব মানুষের মধ্যেই ভুল বোঝাবুঝি হয়। কিন্তু এখন সুভাষদার সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। আমরা দু’জনেই চাই ইস্টবেঙ্গলের ভাল। তাই এ বার থেকে একসঙ্গে কাজ করব।’’