অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে টানা তিনটি ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় ভারতীয় দলের। কিন্তু সঞ্জীব স্ট্যালিন, রহিম আলি, অভিজিৎ সরকার-দের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ ফিফার হেড অব কোচিং অ্যান্ড প্লেয়ার ডেভেলপমেন্ট ব্রানিমির উয়েভিচ।
রবিবার দুপুরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সাংবাদিক বৈঠকে উচ্ছ্বসিত উয়েভিচের মন্তব্য, ‘‘প্রথম ম্যাচে হয়তো খুব একটা নজর কাড়তে পারেনি ভারতীয় ফুটবলাররা। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে কলম্বিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে অসাধারণ খেলেছে ওরা। গোল না পেলেও প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছিল। এরাই ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ। তাই ওদের ঠিক মতো গড়ে তোলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’ জানা গিয়েছে, ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিতে সাহায্য করার ভাবনা-চিন্তাও শুরু করে দিয়েছেন ফিফা কর্তারা।
উয়েভিচের সঙ্গে একমত আই এম বিজয়ন, রেনেডি সিংহের মতো জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকারা। রেনেডি বলছিলেন, ‘‘উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই ছেলেগুলোকে ধরে রাখা। না হলে কিন্তু ওরা হারিয়ে যাবে।’’ নিজের ফুটবল জীবনের উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বললেন, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের হয়ে আমরা চিনকে হারিয়েছি। জাপানের বিরুদ্ধে ড্র করেছি। অথচ চার বছর পরে সেই জাপানের বিরুদ্ধেই সিনিয়র দলের হয়ে আমরা সাত গোলে হেরেছি। কারণ, গত চার বছরে জাপান এগিয়ে গেলেও আমাদের কোনও উন্নতি হয়নি।’’
আরও পড়ুন: ভারতীয় দলে তাঁর সেরা পাঁচ বন্ধুর নাম বললেন গম্ভীর
একই মত বিজয়নেরও। এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের পর্যবেক্ষক তিনি। ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দল কোনও ম্যাচ হয়তো জিততে পারেনি। কিন্তু ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে আমি মুগ্ধ। দুর্দান্ত লড়াই করেছে ওরা। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত এই ছেলেগুলোকে ঠিক মতো গড়ে তোলা।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘যত বেশি বিদেশি দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার সুযোগ ওরা পাবে, অভিজ্ঞতা বাড়বে।’’
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলের কোচ লুইস নর্টন দে মাতোস এই পরামর্শই দিয়েছেন ফুটবলারদের। সঞ্জীব স্ট্যালিন ও অভিজিৎ সরকারের কথায়, ‘‘ঘানার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে হেরে আমরা মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। মাতোস স্যার বলেছেন, হারের জন্য ভেঙে পড়বে না। চেষ্টা করো এই হার থেকে শিক্ষা নিতে। বিশ্বের সেরা দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করো।’’ আর এক ফুটবলার রহিম আলি বলছে, ‘‘মাতোস স্যার আমাদের শিখিয়েছেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করা। বলেছেন, কখনও হাল ছাড়বে না। বিপক্ষে যেই থাকুক, মনে করবে মাঠে তোমরাই সেরা।’’