দুরন্ত: ইন্ডিয়ান ওয়েলসে সেমিফাইনালে ওঠার পরে ফেডেরার। ছবি: এএফপি
রজার ফেডেরারের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী এখন তাঁর বিরুদ্ধে কোর্টে খেলছেন না। রজার ফেডেরারের প্রতিদ্বন্দ্বী এখন তিনি নিজেই।
ইন্ডিয়ান ওয়েলসে অপ্রতিরোধ্য সুইস কিংবদন্তি কোয়ার্টার ফাইনালের বাধাও টপকে গেলেন অনায়াসে। সেমিফাইনালে উঠে তিনি মরসুম শুরু করার পরে জয়-হারের পরিসংখ্যান নিয়ে গেলেন ১৬-০। এ ভাবে দুরন্ত ভাবে মরসুম শুরু করতে শেষ দেখা গিয়েছিল ফেডেরারকে ২০০৬ এটিপি ট্যুরে। যদি ফেডেরার রবিবারের ফাইনালে উঠতে পারেন তা হলে ১২ বছর আগের ফেডেরারের রেকর্ড ভেঙে দেবেন গত মরসুমে প্রত্যাবর্তনের পরে স্বপ্নের ফর্মে থাকা ফেড এক্সপ্রেস। পরিসংখ্যানটা তখন দাঁড়াবে তাঁর কেরিয়ার সেরা ১৭-০।
দক্ষিণ কোরিয়ার উঠতি তারকা হেয়ং চুং-কে হারিয়ে উঠে ফেডেরারকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সুইস কিংবদন্তি মনে করতে পারলেন বটে বারো বছর আগে তাঁর পুরনো সোনার সময়টা। তবে সব টুর্নামেন্টের নাম মনে নেই। ‘‘১২ বছর! অনেক দিনের কথা। আমার ঠিক মনে নেই। কী করেছিলাম আমি তখন, আমার তো এটাও মনে নেই কোন টুর্নামেন্টে প্রথম নেমেছিলাম সে বার।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আমার মনে হয় এ বছরও সে রকমই শুরুতে খেলতে পারছি। তখন তো আমার বিরাট বড় বড় টানা ম্যাচ জেতার রেকর্ড ছিল। ৩০টা, চল্লিশটা বা তারও বেশি টানা ম্যাচে জেতার। তার আগের মরসুম থেকেই টানা জেতার ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল। এ বার সে রকম টানা জিতছি কি না জানি না। আশা করি শনিবার আমি জিতে নতুন রেকর্ড করতে পারব।’’
যে ফর্মে তিনি খেলছেন তাতে শনিবার না জেতারও কোনও কারণ নেই। সেমিফাইনালে ওঠার পথেই চুং-কে স্ট্রেট সেটে হারিয়েছেন তিনি। গোটা ম্যাচে একটা ডাবল ফল্ট করেছেন। প্রথম সার্ভিসের ৭০ শতাংশ জিতেছেন। চুং-এর সার্ভিং ভেঙেছেন পাঁচ বার। এতেই পরিষ্কার কী রকম বিধ্বংসী ফর্মে আছেন তিনি। ফেডেরার অবশ্য একই রকম বিনয়ী নিজের ফর্ম নিয়ে। সেমিফাইনালে উঠে বিশ্বের এক নম্বর বলছিলেন, ‘‘শুরুটা ভাল করতে পেরেছি আজ সেটাই দারুণ লাগছে। তার পরে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। শেষের দিকে ফের ছন্দ ফিরে পাই। পয়েন্ট ধরে রাখতে পেরেছি। দ্বিতীয় সেটের গোড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক পয়েন্টগুলো নিতে পারাটাই ম্যাচ জিততে সাহায্য করেছে।’’ শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় ম্যাচ পয়েন্টে এস সার্ভিসে সেমিফাইনালে ওঠার পথ পরিষ্কার করে ফেলেন। গোটা ম্যাচে এস মেরেছেন এক ডজন।
এর পরের রাউন্ডে ফেডেরার মুখোমুখি হবেন ক্রোয়েশিয়ার বোরনা কোরিকের। যিনি সপ্তম বাছাই কেভিন অ্যান্ডারসনকে হারান ২-৬, ৬-৪, ৭-৬ (৭-৩)। এ মরসুমে গোড়ার দিকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ২০ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পাশাপাশি ফেডেরার কয়েক দিন আগে রটারডাম ওপেনে কেরিয়ারের ৯৭ নম্বর ট্রফিও হাতে তুলেছেন। যে খেতাব তাঁকে ফের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে ফিরিয়ে আনে। বয়স্কতম খেলোয়াড় হিসেবে এক নম্বরে ফেরার রেকর্ডও গড়েন তিনি। এ দিনের জয়ে ইন্ডিয়ান ওয়েলসের পরেও এক নম্বরে থাকা নিশ্চিত করে ফেলেছেন সুইস কিংবদন্তি।
পাশাপাশি সেমিফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতিটাও শুরু করে দিয়েছেন ফে়ডেরার। বলেছেন, ‘‘চুং-এর মতোই খেলে ও। কোর্টে নড়াচড়া খুব ভাল। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী। আমাকে আগ্রাসী থাকতে হবে যতটা সম্ভব।’’