আজ বাবা-ছেলে দু’জনে বসবেন বারাসত স্টেডিয়ামের দুটো রিজার্ভ বেঞ্চে! (বাঁ-দিকে) ছেলে রাজদীপ নন্দী এরিয়ানের কোচ এবং বাবা রঘু নন্দী মহমেডানের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। —ফাইল চিত্র।
ময়দানি ফুটবলের ইতিহাসে সম্ভবত এ রকম ঘটনা ঘটেনি। বাবার দলকে হারানোর জন্য অঙ্ক কষছেন ছেলে, পাল্টা বাবাও ছেলেকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট পেতে মরিয়া। অথচ মঙ্গলবার রাতেও ওঁরা দু’জনে পাশাপাশি শুয়েছেন হাওড়ার বাড়িতে। আজ বুধবার একই বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু’জনে বসবেন বারাসত স্টেডিয়ামের দুটো রিজার্ভ বেঞ্চে! বাবা রঘু নন্দী মহমেডানের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। ছেলে রাজদীপ নন্দী এরিয়ানের কোচ।
কলকাতা লিগে আজ মহমেডানের সঙ্গে খেলার আগে অবশ্য দু’জনেই ফুটবল নিয়ে কথা বন্ধ করেছেন। কিন্তু দু’জনের মনোভাবটা ‘ধুন্ধুমার পারিবারিক লড়াই’-এর আগে কেমন? রঘু বললেন, ‘‘ছেলের টিমের বিরুদ্ধে খেলা তো, তাই একটু বেশিই টেনশনে। জিতলে ঠিক আছে, অন্য কিছু হলে সবাই বলবে ছেড়ে দিয়েছে।’’ বলার সময় কোচের গলায় শঙ্কা। আর ছেলে রাজদীপ বললেন, ‘‘ওই নব্বই মিনিট বাবা আমার শত্রু। বাবার জন্যই আমি কোচিংয়ে এসেছি। বাবার দলের বিরুদ্ধে ভাল কিছু করতে পারলে ওকেই উৎসর্গ করব।’’ বাবা-ছেলের এই লড়াইয়ে মা রত্না নন্দী অস্বস্তিতে। রত্না নিজেও মেয়েদের একটা ফুটবল টিম চালান। কোচিং করিয়েছেন একসময়। বলছিলেন, ‘‘আমি কাল ফিফিটি-ফিফটি। আমার সমর্থন দু’দিকেই।’’
মজার ব্যাপার হল, মহমেডানের টিডি হওয়ার প্রস্তাব পাওয়ার আগেই ছেলের দল তৈরি করে দিয়েছিলেন রঘুই। বেলো রাজ্জাক ছাড়া তিন বিদেশিই তাঁরই বেছে দেওয়া। সেই দলই গোকুলে এমন বেড়ে উঠে তাঁর প্রতিদ্বন্দী হয়ে উঠবে ভাবেননি বাইশ বছর ছোট দলকে কোচিং করানো রঘু। বলছিলেন, ‘‘ওই টিমটার সব জানি। বিদেশিরা ভাল। আমিই বেছেছিলাম।’’ পাল্টা ছেলের উত্তর, ‘‘বাবার কাছেই কোচিং শেখা। জানি কী করতে পারেন বাবা। সেভাবেই পরিকল্পনা করছি।’’
এমনিতে প্রথম ম্যাচে মহমেডান জিতলেও ভাল খেলতে পারেনি। তিন বিদেশি সেভাবে খেলতে পারেনি। রঘু বলছিলেন, ‘‘ডোডোজ চোট পেয়ে বাইরে চলে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। ভাল স্ট্রাইকার থাকলে দল দাঁড়িয়ে যেত।’’ রঘুর ছেলে অবশ্য বিদেশি নিয়ে নয়, বরং বারাসতের কৃত্রিম ঘাস নিয়ে চিন্তিত। বললেন, ‘‘এতদিন ঘাসের অনুশীলন করেছি। এখন কৃত্রিম ঘাসে খেলতে তো সমস্যা হবেই।’’
বুধবার কলকাতা লিগে
মহমেডান: এরিয়ান (বারাসত ৪-৩০)