সতীর্থদের সঙ্গে হালকা মেজাজে শুভ (৪৯ নম্বর জার্সি)।
আজ বিকেলে ভরা যুবভারতীতে বসে ছেলের খেলা দেখবেন না শ্যামনগরের বিজয় ঘোষ। মাঠের প্রতিটি ইঞ্চি দখলের জন্য যখন লড়বে দুই প্রধান, তখন তিনি থাকবেন শহরেরই আরেক প্রান্তে। টিভির পর্দায় খুঁজবেন সদ্য কুড়িতে পা রাখা ছেলেকে। ডার্বির বল গড়ানোর আগে থেকে তাঁর ছেলেকে নিয়েই যত চর্চা বাগানে। তিনি বাগানের বাঙালি স্ট্রাইকার শুভ ঘোষ।
শনিবার রাতে সবুজ-মেরুনের তরুণ স্ট্রাইকারের বাবার সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হল, তখন এটিকে-গোয়া ম্যাচ দেখছিলেন তিনি। খেলা দেখতে দেখতে বিজয়বাবু বলছিলেন, ‘‘ডার্বি ম্যাচ মাঠে বসে দেখা হবে না আমার। ডিউটি রয়েছে। সময় পেলে অফিসে খেলা দেখব। মোহনবাগান-পঞ্জাব এফসি ম্যাচের শেষ দিকটাও টিভিতে দেখেছিলাম।’’ সেই ম্যাচেই বাগানের ত্রাতা হিসেবে উদয় হয় শুভর। আর তার পর থেকেই মোহন সমর্থকদের শ্বাসপ্রশ্বাসে তিনি।
ডার্বি ম্যাচে এখন আর বাঙালির পা খেলার রং বদলে দেয় না। দুই প্রধানেই পাল্লা দিয়ে কমেছে বাঙালি ফুটবলারের সংখ্যা। মোহনবাগান অ্যাকাডেমি থেকে সিনিয়র দলে আসা শুভ কিন্তু মরসুমের প্রথম থেকেই উজ্জ্বল। পরিবর্ত হিসেবেই তাঁকে নামান স্পেনীয় কোচ কিবু ভিকুনা। মাঠে নেমে কোচের মুখে হাসি ফোটান ইউনাইটেড স্পোর্টসের হয়ে খেলা স্ট্রাইকার। বল পায়ে তাঁর ছটফটানি, গতি, গোলের খিদে নজর কেড়েছে সবার। বড় ম্যাচের আগে বাগানের এই স্ট্রাইকারকে নিয়ে সতর্ক ক্লাব-কর্তারাও। মনোসংযোগ যাতে নষ্ট না নয়, সেই কারণে কড়াকড়ি করা হয়েছে ক্লাব থেকে। প্রচারমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। বিজয়বাবু বলছিলেন, ‘‘মিডিয়ার কাছে ওর সম্পর্কে কিছু বলতে বারণ করা হয়েছে ক্লাব থেকে। ডার্বি হয়ে যাক, তার পরে না হয় কথা বলা যাবে। শুভর বয়স বেশি নয়। এখনই ওকে নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না। আরও কয়েকদিন খেলুক। তার পরে না হয় ওর সম্পর্কে বলা যাবে।’’
আরও পড়ুন: আহত রোহিত কি আজ দলে? দেখে নিন ফয়সলার ম্যাচে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
রবিবারের ডার্বি নতুন এক ভোরের সন্ধান দিয়ে যেতে পারে বাগানের তরুণ স্ট্রাইকারকে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর জালে বল জড়াতে পারলে আগামী মরসুমে এটিকে-মোহনবাগানের জার্সি পরে নেমেও পড়তে পারেন আইএসএল-এর পৃথিবীতে। কর্তারা বলেই দিয়েছেন যাঁরা ভাল খেলবেন সামনের মরসুমে তাঁরা থেকে যাবেন। শুভও কি আর জানেন না, এ দেশের ফুটবলে এই একটা ম্যাচই এক জন ফুটবলারকে পৌঁছে দিতে পারে জমি থেকে আকাশে।