গোয়ার মাঠে স্ট্রেচিং করছেন হীরা। নিজস্ব চিত্র।
আজ আইএসএল ডার্বি। গোয়ার মাঠে মুখোমুখি হবে গঙ্গাপাড়ের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। লড়াইকে ঘিরে উত্তেজনায় ফুটছেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা।
হুগলির বৈদ্যবাটীতে উত্তেজনা খানিক বেশিই। ভিন্ রাজ্যে মহারণে তাদের ঘরের ‘হীরা’ কতটা দ্যুতি ছড়াবে, তা নিয়ে তুঙ্গে চর্চা। গোয়া থেকে সেই হীরা মণ্ডল জানিয়ে দিচ্ছেন, বাগানের ঝড়ঝাপটা থেকে ইস্টবেঙ্গলের দুর্গ আগলাতে তিনি তৈরি। প্রয়োজনে হানা দেবেন বিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে। বৈদ্যবাটীর রামমোহন সরণিতে ইস্টবেঙ্গল উইংব্যাকের নিজের পাড়ায় রীতিমতো উন্মাদনা তাঁকে নিয়ে। ফ্লেক্স পড়েছে তাঁর নামে।
চমকে দেওয়ার মতোই উত্থান হীরার। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরতো এক সময়। এখনও সচ্ছলতা আসেনি। মাথার উপরে পাকা ছাদ নেই। এহেন পরিবার থেকে উঠে আসা হীরার জন্য গর্বের অন্ত নেই পরিচিতদের। বাবা মারা গিয়েছেন বছর আটেক আগে। মা বাসন্তীদেবী কষ্ট করে পাঁচ ছেলেমেয়েকে মানুষ করেছেন। খেলার ব্যাপারে বরাবর উৎসাহ জুগিয়েছেন।
চাঁপদানির মাঠে কোচ অরূপ ভট্টাচার্যের কাছে ফুটবলে হাতেখড়ি হীরার। জুনিয়র ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন। ২০১৬, ’১৮ সালে বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলেছেন। গত বছর ছিলেন মহমেডানে। আইএফএ শিল্ডে খেলা দেখে এ বার তাঁকে সই করায় লাল-হলুদ।
আইএসএল-এ প্রথম খেলায় ইস্টবেঙ্গল ড্র করে জামশেদপুরের সঙ্গে। সেই ম্যাচে হীরা পুরো সময় খেলেছেন। ডার্বিতেও প্রথম একাদশে থাকার ব্যাপারে আশাবাদী। গোয়া থেকে ফোনে জানালেন, উজাড় করে দেবেন নিজেকে। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট থেকেই ডার্বিতে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। প্রথম বার আইএসএল খেলছি। প্রথম ডার্বি। তাই উত্তেজনা আছে। মোহনবাগান ভাল দল। কিন্তু এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। লড়াই হবে। জেতার আশা রাখছি। ভাল খেলে দেশের জার্সি পরতে চাই।’’
হীরা মণ্ডলের পাড়ায় লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র।
বাসন্তীদেবী ফুটবল দেখতে টিভিতে চোখ রাখেন। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে আজ অনেকটাই সফল হয়েছে। জেদ আছে। ইস্টবেঙ্গল ডার্বি জিতুক। ছেলে আরও উন্নতি করুক। এটাই চাই।’’ ভাই নিরঞ্জন কাস্টমসে খেলছেন। তিনিও চান দাদার মাথায় আর পায়ে আটকে যাক সবুজ-মেরুণের আক্রমণ। জিতুক ইস্টবেঙ্গল।
বৈদ্যবাটীর ফুটবলপ্রেমীরাও হীরার দ্যুতি ছড়ানোর অপেক্ষায়।