david beckham

সুপার লিগকে তোপ কঁতোনা, বেকহ্যামদের

বিদ্রোহী লিগে থাকছে ইংল্যান্ডের অন্যতম ঐতিহ্যশালী ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডও। যার কিংবদন্তি ম্যানেজার আলেক্স ফার্গুসন ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন, এই লিগ চালু হলে ইতিহাসকে অস্বীকার করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ০৮:০৬
Share:

সরব: সুপার লিগের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বেকহ্যাম ফাইল চিত্র

বিদ্রোহী লিগ নিয়ে প্রতিক্রিয়ার স্রোত অব্যাহত। ক্রিকেটে কেরি প্যাকার সিরিজের মতোই, ফুটবলে সুপার লিগ নিয়ে খেলার দুনিয়া এখন উত্তাল। যে ১২টি ক্লাব এই লিগে যোগ দেওয়ার কথা বলছে, তাদের অনেক প্রাক্তনই তোপ দাগছেন। প্রস্তাবিত লিগের ভাবনা তাঁদের চোখে ফুটবল খেলাটারই সর্বনাশের নামান্তর।

Advertisement

বিদ্রোহী লিগে থাকছে ইংল্যান্ডের অন্যতম ঐতিহ্যশালী ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডও। যার কিংবদন্তি ম্যানেজার আলেক্স ফার্গুসন ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন, এই লিগ চালু হলে ইতিহাসকে অস্বীকার করা হবে। এ বার ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ক্লাব বহু বছর খেলা প্রাক্তন কিংবদন্তি ফুটবলাররাও সরব হলেন প্রতিবাদে। তাঁরা ডেভিড বেকহ্যাম, ওয়েন রুনি ও এরিক কঁতোনা।

ম্যান ইউ ছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদ ও এসি মিলান রয়েছে বিদ্রোহী ১২টি ক্লাবের মধ্যে। এই তিন ক্লাবেই খেলেছেন বেকহ্যাম। ইন্সটাগ্রামে তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, তাঁদের প্রিয় ফুটবল খেলাটার সামনে এখন ঘোর বিপদ! তিনি লিখেছেন, ‘‘ফুটবল ভালবাসি। যত দূর মনে পড়ে, এই খেলাই আমার জীবন। একজন ফুটবলার হিসেবে, এখন ক্লাবের মালিক হয়ে ভাল করেই জানি, সমর্থকদের বাদ দিলে খেলাটার অস্তিত্বই থাকে না। তাই ফুটবল যাতে সবার জন্য বেঁচে থাকে, সেটাই দেখা দরকার। এখানে সত্যিকারের লড়াইটা যেন থাকে। আর তার বিচার হয় যেন গুণগত মানের উপরে। এই মূল্যবোধগুলো বাঁচিয়ে না রাখলে, আমাদের প্রিয় খেলাটার সামনেই সমূহ বিপদ উপস্থিত হবে।’’

Advertisement

ম্যান ইউয়ের আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক কঁতোনার প্রতিক্রিয়া, ‘‘ফুটবলে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সমর্থকেরা। ওঁদের আবেগটাকে সম্মান জানাতেই হবে। সুপার লিগের ভাবনা সম্পর্কে জড়িত ক্লাবগুলি কি তাদের সমর্থকদের মতামত নিয়েছে? আমি জানি, নেয়নি। আর সেটা একটা চূড়ান্ত লজ্জার ব্যাপার।’’ কম যাননি রুনিও। যিনি ২০০৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ক্লাবে খেলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ম্যান ইউয়ে কম বছর তো খেলিনি। তাই আমারও কিছু বক্তব্য থাকতে পারে। আমার সবার আগে যেটা মনে হচ্ছে তা হল, সুপার লিগে নাম লেখালে ক্লাবের সঙ্গে সমর্থকদের যোগাযোগের ব্যাপারটাই নষ্ট হয়ে যাবে।’’ এই মুহূর্তে ডার্বি কাউন্টির ম্যানেজার রুনি যোগ করেছেন, ‘‘আশা করি যে সব ক্লাব এই লিগে খেলতে চায়. সেই সমস্ত ক্লাবের কর্তারা নির্বোধ নন। শেষ পর্যন্ত দেখা যাক সুপার লিগও ঠিক কোন রাস্তায় হাঁটতে চায়। তবে আমার মনে হয়, ইংল্যান্ডের ফুটবলের পিরামিডটা অক্ষত রাখাটাই এই মুহূর্তে সব চেয়ে জরুরি।’’ প্রস্তাবিত সুপার লিগে খেলার সম্মতি দিয়েছে লিভারপুলও। কিন্তু অ্যানফিল্ডের ক্লাবের ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপ বলে দিলেন, রবিবার পর্যন্ত তিনি আর ফুটবলাররা সে কথা জানতেনই না। লিভারপুল সমর্থকদের প্রতি মহম্মদ সালাহদের গুরুর আবেদন, কোনও ভাবেই যেন তাঁদের ভুল বোঝা না হয়।

অতীতেও সুপার লিগ চালু করার বিরুদ্ধে সরব ছিলেন এই জার্মান কোচ। সোমবারও তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘গতকালই সব কিছু শুনেছি। তবে সত্যি কথা বলতে, যা শুনেছি তা খুবই সামান্য কিছু। বেশির ভাগটাই জানা খবরের কাগজ পড়ে বা অন্য কোনও সূত্র থেকে। ব্যাপারটা মেনে নেওয়া বেশ কঠিন। জানি অনেকে অসন্তষ্টও। ওদের মনের অবস্থাটা বুঝতে পারছি। তবে এটা নিয়ে খুব বেশি কিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। যা যা ঘটছে তার সঙ্গে কোনও ভাবেই আমি জড়িত নই। ফুটবলাররাও নয়। আমরা কিছু জানতামই না।’’

প্রবল বিরোধিতার মধ্যেই ইউরোপের সেরা ১২টি ক্লাব বিদ্রোহী লিগে যোগ দিয়েছে। লিভারপুল তাদের অন্যতম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বা ইউরোপীয় কাপ মোট ছ’বার জিতেছে সালাহদের ক্লাব। ২০১৯-এ তারা চ্যাম্পিয়ন হয় ক্লপের প্রশিক্ষণেও। অ্যানফিল্ডের জার্মান ম্যানেজারের ভাল লাগে, ইউরোপের সেরা টুর্নামন্টে খেলার সুযোগ পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্লাবের মধ্যে লড়াইটা। এ বারের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে যেমন প্রথম চার দলের মধ্যে থাকলে ওয়েস্ট হ্যামও পরের বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পাবে। ‘‘এমনিতে আমি চাই না ওদের (ওয়েস্ট হ্যামের) জন্য আমাদের দরজাটা বন্ধ হয়ে যাক। কিন্তু এই যে ওরাও একটা সুযোগ পাচ্ছে, সেটা কিন্তু দারুণ ব্যাপার,’’ বলেছেন গত বারের ইপিএল চ্যাম্পিয়ন দলের প্রশিক্ষক। যোগ করেছেন, ‘‘সুপার লিগে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের উপর আমাদের ক্লাব দাঁড়িয়ে নেই। লিভারপুল তার থেকেও অনেক বেশি কিছু। শুনলাম, ম্যাচের দিন সমর্থকরা ব্যানার নিয়ে অ্যানফিল্ডে এসেছিল। এটার আবার কোনও মানে আমি বুঝিনি। সিদ্ধান্তটা তো ফুটবলাররা নেয়নি। ওরা তো ভুল কিছু করেনি। ওদের দোষ একটাই। সব সময় জিততে পারে না। আশা করি সমর্থকরা
সেটা বুঝবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement