উৎসব: বিশ্বকাপের মূলপর্বে উঠল মিশর। গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি
বাজি পুড়ছে, বাজনা বাজছে। রাস্তায় নেমে পড়েছে মানুষের ঢল। আনন্দ উৎসবে ভেসেছে গোটা দেশ। আঠাশ বছর পরে যে আবার বিশ্বকাপ খেলার ছাড়পত্র পেল মিশর।
কঙ্গোকে ২-১ গোলে হারিয়ে তারা এই কৃতিত্ব অর্জন করল রবিবার ভারতীয় সময় বেশি রাতে। মিশরের ঐতিহাসিক মুহূর্তের নায়ক মহম্মদ সালাহ্। ১-১ থাকা অবস্থায় শেষের দিকে পেনাল্টি থেকে গোল করে জয় নিশ্চিত করেন সালাহ্। আফ্রিকার গ্রুপ ‘ই’-তে মিশর চার পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি করে শীর্ষে রয়েছে। সেই কারণে প্রথম হয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত। ১৯৯০-এর ইতালিতে শেষ বার বিশ্বকাপে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল মিশরের। তার পরে প্রায় তিন দশক অতিক্রান্ত হয়ে রাশিয়ায় ফুটবল অভিযানে চলল তারা। ‘‘অবশেষে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। আঠাশ বছর পরে আমরা আবার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। এখন আনন্দ করার সময়। গোটা দেশের কাছে এটা উৎসব করার মুহূর্ত,’’ বলছেন ৪১ বছর বয়সি গ্যাবের ফ্যাথি। দেশের নানা দুঃসময় চলার মধ্যে ফুটবল তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। সেই স্বস্তির নিঃশ্বাস দেখা গিয়েছে সর্বত্র। কায়রোর তাহরির স্ক্যোয়ারে দাঁড়িয়ে ২৩ বছরের গামাল মহম্মদ বলছিলেন, ‘‘মানুষের চোখমুখের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে, আজ সকলে কতটা খুশি। মিশরকে কখনও এতটা আনন্দে ভাসতে দেখিনি।’’ মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতা আল-সিসি অভিনন্দন জানিয়েছে দেশবাসীকে। দেশের রাস্তাঘাটে অবিরাম বিজয়োৎসব চলছে। মিশরের লাল, সাদা ও কালো রংয়ের পতাকায় ঢেকে গিয়েছে রাস্তাঘাট।
আরও পড়ুন: গোল করার উচ্ছ্বাসেই দ্বিতীয় গোল হজম: মাতোস
এই ম্যাচের আগে প্রত্যাশার চাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল মিশরের ফুটবল দলকে কেন্দ্র করে। তার কারণ, ১৯৯০-এর পর আর বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা। আর্জেন্তিনায় জন্ম হওয়া মিশরের কোচ হেক্টর কুপার ম্যাচের আগে স্বীকার করেছিলেন, তিনি নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন হাই ব্লাড প্রেশার সামলানোর জন্য। ‘‘যথেষ্টই টেনশনে ভুগছি। হাইপারটেনশনের ওষুধও খাচ্ছি। না হলে স্নায়ুর চাপ সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত যে সমালোচনা সহ্য করতে হচ্ছে, তা রীতিমতো চাপে ফেলে দিচ্ছে,’’ বলেছিলেন মিশরের কোচ। আর রাশিয়ার টিকিট অর্জনের পর কী বলবেন তিনি? কুপারের বক্তব্য, ‘‘জীবনটাই চাপে ভরা কিন্তু বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করার যে চাপ, সেটা সবচেয়ে বেশি।’’