ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলের ঘোষণা দ্রুতই 
East Bengal

ভাবনায় বিদেশি কোচ, ‘মুখ’ হবেন ফুটবল কিংবদন্তি 

জার্সিতে ঐতিহ্যবাহী সবুজ-মেরুন রংয়ের তারতম্য ঘটানো হয়নি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:১৩
Share:

উদ্দীপনা: ইস্টবেঙ্গলকে ঘিরে ভক্তদের আবেগকে গুরুত্ব লগ্নিকারীর। ফাইল চিত্র

নতুন লগ্নিকারী চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাক্ষী রেখে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও সম্পূর্ণ। এ বার আইএসএল খেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল নতুন ইস্টবেঙ্গলে।

Advertisement

তবে লাল-হলুদ ভক্তদের যে দু’টি বিষয় নিয়ে সব চেয়ে বেশি আগ্রহ থাকছে, তা হচ্ছে, প্রিয় ক্লাবের জার্সিং রং কেমন হতে যাচ্ছে? এবং, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নাম পাল্টে যাবে কি না? মোহনবাগান এটিকের সঙ্গে হাত মেলানোর পরেও তাদের নাম ধরে রাখা হয়েছে। জার্সিতে ঐতিহ্যবাহী সবুজ-মেরুন রংয়ের তারতম্য ঘটানো হয়নি।

ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রে আরওই পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখায় সুবিধা কারণ, তাদের সঙ্গে লগ্নিকারী সংস্থা যুক্ত হয়েছে। এটিকের মতোই প্রায় আশি শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে ফেললেও শ্রী সিমেন্টের নিজস্ব কোনও দল বা জার্সি নেই। তাই ইস্টবেঙ্গলের নাম যেমন অটূট থাকবে তেমনই জার্সির ঐতিহাসিক লাল-হলুদ রংয়ে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও কার্যত নেই।

Advertisement

আইএসএলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্লাবেরই নামের সঙ্গে লগ্নিকারী সংস্থার নাম যোগ করা যায় না। বেঙ্গালুরু এফ সি হিসেবেই সুনীল ছেত্রীদের ক্লাব খেলে, তাদের লগ্নিকারী সংস্থার নাম মিশিয়ে নামকরণ করা সম্ভব হয়নি। নিয়ম মতো জার্সির গায়ে লগ্নিকারী বা স্পনসরশিপের নাম থাকতে পারে, যেমন সব খেলাতেই দেখা যায়। লগ্নিকারী সংস্থার পক্ষ থেকে ভাবা হচ্ছে, ইস্টবেঙ্গল যে কলকাতার ক্লাব, সেই ছোঁয়াটি রেখে নামকরণ করা যায় কি না। যেমন সুনীলদের দল বেঙ্গালুরুর, তাই বেঙ্গালুরু এফ সি। অথবা জামশেদপুর এফ সি। অথবা এফ সি গোয়া, মুম্বই সিিট এফ সি, চেন্নাইয়িন এফ সি। কিন্তু এখানে যে-হেতু ইস্টবেঙ্গল নামটিকে ঘিরে প্রচুর মানুষের আবেগ জড়িত, তাই শুধু শহরের নামে ক্লাবের নামকরণ করার প্রশ্ন নেই। ইস্টবেঙ্গলকে রেখে একটি নাম ভাবতে হবে। তা হলে কি কলকাতা ইস্টবেঙ্গল? কারও কারও মাথায় সে রকম ভাবনা ঘুরছে। তবে এ বারে আইএসএলে খেলার জন্য এতই কম সময় রয়েছে হাতে যে, এত দ্রুত বিরাট কিছু পরিবর্তন করা কঠিন হবে। প্রথম বছরটা অন্তত একই নাম এবং একই ধরনের জার্সি পরে ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে প্রবেশ করতে পারে।

আরও পড়ুন: সেই গৌরব ফেরানোর খোঁজ শুরু

আইএসএলের পরিচালক গোষ্ঠী এফএসডিএল আগামী চব্বিশ থেকে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন দলের জন্য টেন্ডার ডাকা শুরু করে দেবে। তার পরেই ইস্টবেঙ্গল দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদনপত্র জমা দেবে। ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলার ব্যাপারে স্বয়ং নীতা অম্বানী উদ্যোগী হয়েছেন। তাই নিয়মমাফিক সব কিছু জমা পড়ে গেলে সরকারি ভাবে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলে যোগদানের কথা ঘোষণা হয়ে যেতেও দেরি হবে না। এক সপ্তাহের মধ্যেই সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।

অতিমারির জন্য এ বারের আইএসএল শুধু একটি শহরে, গোয়ায় হচ্ছে জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সব দলকে গোয়ায় নিয়ে আসার কথা ভাবা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে নিভৃতবাস পর্ব সেরে, কোভিড পরীক্ষা করিয়ে তবেই অনুশীলনের অনুমতি মিলবে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে অনুশীলনের সুযোগ করে দেওয়ার কথা ভেবেছে আইএসএল কর্তৃপক্ষ। দলগুলি বেশি দিনের অনুশীলন চাইবে কারণ করোনার জেরে দীর্ঘ দিন অনেকেই ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্কহীন।

আরও পড়ুন: ভারী বলে প্রস্তুতির কথা ফাঁস কোচের, ব্যান্টনে মুগ্ধ ফিঞ্চও

নতুন কোম্পানি তৈরি করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে ইস্টবেঙ্গলে। নতুন যে বোর্ড গঠন করা হবে, সেখানে ক্লাবের তরফ থেকে দু’জনের বেশি থাকবেন না। বাকি সব কমিটি মিলিয়ে আরও দু’জন। সব কিছুতেই আশি শতাংশ প্রতিনিধিত্ব থাকবে লগ্নিকারী সংস্থার। শোনা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে অংশীদারিত্বের পরিমাণ সংস্থার পক্ষে ৯০-১০ হয়ে দাঁড়ালেও অবাক হওয়ার নেই।

লগ্নিকারী সংস্থা ও লাল-হলুদের নতুন অভিযানে অ্যাডভাইসর হিসেবে যুক্ত হওয়া শ্রেণিক শেঠ জানাচ্ছেন, বোর্ডে পেশাদার বিশেষজ্ঞদের রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সময়ে উপস্থিত থাকা তিনি বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের সব খেলারই স্বত্ব কিনেছে শ্রী সিমেন্ট। যদি আট জনের বোর্ড হয়, তা হলে সংস্থার পক্ষ থেকে থাকবেন ছ’জন। সেক্ষেত্রে ফুটবল বিশারদ রাখা হতে পারে চার জন। অন্য খেলা থেকে আরও দু’জন। দশ জনের বোর্ড হলে সংস্থার পক্ষ থেকে থাকবেন আট জন।’’ যদিও শুধু বিশেষজ্ঞ রেখে বোর্ড করা হয় কি না, সেটাও দেখার।

চার ফুটবল বিশেষজ্ঞের মধ্যে এক জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কিংবদন্তিকে আনার কথাও ভাবা হচ্ছে। যিনি নতুন ইস্টবেঙ্গলের মুখ হতে পারেন। আর্থিক চুক্তি করে তাঁকে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ হিসেবেও ভাবা হতে পারে। আইএসএলের কথা মাথায় রেখে বিদেশি কোচ খোঁজা শুরু হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে এক জন ভারতীয় কোচও নিয়োগ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement