‘মিনি’র শহরের সঙ্গে নতুন ক্রিকেট-মৈত্রী। ইডেনে বাবার কোলে চড়ে হাজির আফগানিস্তানের অন্য ‘মিনি’। বৃহস্পতিবার। ছবি: উৎপল সরকার।
গত বারের চ্যাম্পিয়ন বনাম কোয়ালিফাইং পর্বের রগড়ানি কাটিয়ে ওঠা আনকোরা একটা টিম— এই দুইয়ের সাক্ষাতকে কি ঠিক সংঘর্ষ বলা চলে?
শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান ম্যাচ মানে তো মনে হবে এটা কোনও লড়াই-ই নয়। স্রেফ একটা টিমের আর একটা টিমের উপর স্টিমরোলার চালিয়ে দেওয়ার অপেক্ষা। একপেশে স্কিল প্রদর্শনীর মঞ্চ।
শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের পর অবশ্য ধারণায় সামান্য পরিবর্তন দরকার। না, কোনও অঘটন ঘটেনি। বৃহস্পতিবারের ইডেন লেখেনি কোনও রূপকথা। আবার এটাও বলা যাবে না যে, ছ’উইকেটে ম্যাচ হেরে আফগান গর্ব ধুলোয় লুটোচ্ছে। হ্যাঁ, ফিল্ডিং মাঝে মধ্যেই শোচনীয় হয়েছে। অবাধে গলেছে বাউন্ডারি। সময় সময় প্রকট হয়ে উঠেছে অ্যাসোসিয়েট সদস্যের তকমা। তাই বলে এটাও বলা যাবে না যে, নাকানিচোবানি খেয়ে হেরেছে আফগানিস্তান। বলা যাবে না যে, এক মুহূর্তের জন্যেও তারা ম্যাচে ছিল না।
বরং বলতে হবে, ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কাকে একটা সময় বেশ চাপেই ফেলে দিয়েছিল আফগানিস্তান। ১৫৪ রানের যথেষ্ট সম্মানজনক টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে একটা সময় শ্রীলঙ্কার আস্কিং রেট চলে গিয়েছিল দশের আশেপাশে। দীনেশ চণ্ডীমল, লাহিরু থিরিমান্নে-সহ লঙ্কার টপ অর্ডার ডাগআউটে ফিরে গিয়েছে। সতেরো বছরের তরুণ স্পিনার রশিদ খান তখন মাঠে হাজির শ’পাঁচেক আফগান সমর্থকদের গর্জন বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গর্জনটা থামিয়ে দিলেন তিলকরত্নে দিলশান, অপরাজিত ৮৩ রানের ক্লিনিক্যাল একটা ইনিংস দিয়ে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজরা যখন তাড়াহুড়ো করে উইকেট হারাচ্ছেন, ঊনচল্লিশ বছরের শ্রীলঙ্কান ওপেনার ঠান্ডা মাথায় টিমকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলেন। একটা সময় যে ভালই চাপে ছিলেন এ দিনের ম্যাচের সেরা, বোঝা গেল ম্যাচের পর তাঁর মুখচোখের স্বস্তি দেখে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে যে ক্রিকেটাররা খেলছেন, তাঁদের নামে একটা করে চারাগাছ পুঁতেছে আফগান পুলিশ। সে দেশের ক্রিকেটও আপাতত ওই চারাগাছের মতো। আনকোরা, স্পর্শকাতর। সবুজ স্বপ্নের আগমনীও।