আসল হুঙ্কার ধোনির এই চেহারা

শের-ই বাংলার গ্যালারিতে যত বাঘের ম্যাসকট রবিবারের ফাইনালে দেখলাম, বিশ্ব ক্রিকেটে কোনও দেশের অত ম্যাসকট আমি অন্তত কোথাও দেখিনি! তবে ম্যাচ জুড়ে ব্যাঘ্র গর্জন-টর্জন যা সবই ভারতীয় ক্রিকেটারদের।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০৪:১১
Share:

শের-ই বাংলার গ্যালারিতে যত বাঘের ম্যাসকট রবিবারের ফাইনালে দেখলাম, বিশ্ব ক্রিকেটে কোনও দেশের অত ম্যাসকট আমি অন্তত কোথাও দেখিনি! তবে ম্যাচ জুড়ে ব্যাঘ্র গর্জন-টর্জন যা সবই ভারতীয় ক্রিকেটারদের। বিশেষ করে কয়েক দিনের মধ্যেই ঘরের মাঠে শুরু হতে চলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ধোনির টিমের গর্জনগুলোর তাৎপর্য যে আরও বেশি, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

Advertisement

যেমন জসপ্রীত বুমরাহ। ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ-কে বরাবর শক্তিশালী হিসেবে দেখা হয়। আর সত্যিই সেটা শক্তিশালী। কিন্তু এই প্রথম যেন মনে হচ্ছে, আমাদের বোলিং লাইন-আপও দারুণ শক্তিশালী। আর সেটা বুমরাহের সৌজন্যে। ছেলেটা একটা দারুণ পেস বোলিং প্যাকেজ। ইয়র্কার ভাল দেয়। বিপজ্জনক বাউন্সার আছে হাতে। প্রচুর ভ্যারিয়েশন। সবচেয়ে বড় কথা, উইকেট-টু-উইকেট বল করে যেতে পারে। কিছু দিন আগেও যেটা উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মাদের বোলিংয়ে দেখা যেত না। এ দিক-ও দিক ফেলে প্রচুর রান দিয়ে বসত। বিশ্বকাপেও বুমরাহ ভাল করবে আমি নিশ্চিত। ভারতীয় পিচে-ই তো আইপিএল বলুন, বা এই সে দিন মুস্তাক আলি, বিজয় হাজারেতে দুর্দান্ত বল করেছে ও।

Advertisement

আর একটা বোলিং-হুঙ্কারের নাম রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দেখুন, ফাইনালের আগে পর্যন্ত এশিয়া কাপে ওর পারফরম্যান্স তেমন ভাল ছিল না। কিন্তু অশ্বিন হল গিয়ে বড় ম্যাচের প্লেয়ার। বড় মঞ্চ ওকে তাতিয়ে তোলে। বড় ফাইনালের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার একটা অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস আছে ওর। আর সেটা ধোনির খুব ভাল জানা আছে বলেই এ দিন অশ্বিনকে দিয়ে ও বোলিং শুরু করাল। ভারতের সেরা স্পিনারও ওভার সংখ্যা কমে যাওয়া একটা বড় ফাইনালের প্রবল চাপ সত্ত্বেও তিন ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে সাকিব আল হাসানের মূল্যবান উইকেট তুলে নিয়ে ধোনির আস্থার দাম দিয়েছে।

আর ব্যাটিংয়ের কথা কী বলব! ১৫ ওভারে ১২১-এর টার্গেটের জবাবে তো গর্জন-ই গর্জন। শিখর ধবন হল ব্যাটিংয়ে ভারতের অশ্বিন। মানে খাঁটি বিগ ম্যাচ প্লেয়ার। যে জন্য এমনিতে ধবন ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগলেও ধোনি ওকে এত সুযোগ দিয়ে যায় দিনের পর দিন। ফাইনালের মতো বড় আসর মানেই একশোর মধ্যে নব্বই বার ধবন হিট। ঢাকাতেও তাই। যার জন্য রোহিত শর্মার মতো ম্যাচ উইনারকে ইনিংসের গোড়ায় হারাতে হলেও সেটা বুঝতেই দেয়নি ধবন। যেন একইসঙ্গে নিজের আর রোহিতের ব্যাটটা করে গেল এ দিন!

বিরাট কোহালি নিয়ে বোধহয় কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট মনে হবে না আমার-আপনার, সকলের এখন। একটাই কথা বলব, টি-টোয়েন্টির মতো যখন-তখন ম্যাচের চরিত্র বদলে যাওয়া ক্রিকেটে বিরাটের মতো ধারবাহিকতা অভূতপূর্ব। কখনও কারও ব্যাটে আগে যা দেখা যায়নি। প্রত্যেক ম্যাচে, সব মাপের প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে টানা বড় রান করে চলেছে।

ধোনির নামটা ইচ্ছে করেই সব শেষে বলছি। এমএসডি যেন ওস্তাদের মার শেষ রাতে দিল। সেই ভিন্টেজ ধোনি। বুঝিয়ে দিল, এখনও ও সেরা ফিনিশার। সবচেয়ে বড় কথা বিশ্বকাপ দোরগোড়ায়, আর টি-টোয়েন্টির মাস্টারব্লাস্টার-ও নিজের ছন্দে ফিরল। ভারতের জন্য এর চেয়ে সুখবর আর কী হতে পারে!

বিশ্বকাপে ভারত এমনিতেই ফেভারিট। দুরন্ত ফর্মের বাংলাদেশকে তাদের উগ্র সমর্থকদের চিৎকারের মধ্যেও সহজে হারিয়ে ধোনিরা এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এখন বলা উচিত— ভারত বিশ্বকাপে হটফেভারিট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ১৫ ওভারে ১২০-৫ (বুমরাহ ১-১৩, অশ্বিন ১-১৪), ভারত ১৩.৫ ওভারে ১২২-২ (ধবন ৬০, কোহলি ৪১ ন.আ, ধোনি ২০ ন.আ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement