প্রস্তুতি: ভারতীয় দলের অনুশীলনে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। রবিবার। পিটিআই
প্রিয়ঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাসের বিয়ের পার্টি এবং রণবীর সিংহ ও দীপিকা পাড়ুকোনের ঝাঁ চকচকে বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে চর্চায় এখন মাতোয়ারা মুম্বই। আরব সাগরের তীরে এসে জানা গেল, রোজ কাগজ খুললেই কোনও না কোনও ‘স্টোরি’ নাকি পাওয়া যাবেই এই নিয়ে। রসিক মুম্বইকররা এ সব রীতিমতো পাওভাজি, বড়াপাওয়ের মতো চেটেপুটে খান।
কিন্তু গত দু’দিন ধরে দীপিকা, প্রিয়ঙ্কাদের নিয়ে চর্চার অনেকটা জায়গাতেই যিনি থাবা বসিয়েছেন, তাঁর নাম মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। বোরিভালি থেকে বেলাপুর সর্বত্র তাঁকে নিয়েও চর্চা এখন যথেষ্ট।
অবসরের পরে ধোনি রাঁচিতে পাঁচতারা হোটেলের মালিক হবেন? না কি নিজের বায়োপিকের দ্বিতীয় ভাগ বানানোর কাজে হাত দেবেন, এ সব নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে এ শহরে। দু’দিন আগে জাতীয় নির্বাচক-প্রধান এমএসকে প্রসাদ যেন ধোনির অবসরই ঘোষণা করে দিয়েছেন! চলতি ওয়ান ডে সিরিজে তাঁর ধারাবাহিক ব্যর্থতা এই জল্পনার আগুনে ঘি ঢেলেছে।
ধোনি নাকি কাগজ পড়েন না, খবরও দেখেন না। কিন্তু তাঁকে নিয়ে চর্চা থামাতে যে কতটা মরিয়া, তা রবিবার বিকেলে মুম্বইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে ঢুকেই বোঝা গেল।
আরও পড়ুন: তিন ম্যাচে ন’শো রান, ভাবতে হবে বোলিং নিয়েও
তিন দিনে দুই ম্যাচের মাঝে ফাঁকা দিনটিতে দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনে হাজির তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর শেষ সেঞ্চুরির মতো এই ঘটনাও দেশের মাঠে শেষ কবে ঘটেছে, তা মনে করা কঠিন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টাই ও হারের ধাক্কায় দিন-রাতের ম্যাচ খেলে পুণে থেকে মুম্বইয়ে এসে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্যাড-আপ করে নেটে নেমে পড়লেন রোহিত শর্মা, অম্বাতি রায়ডু, কে এল রাহুল, রবীন্দ্র জাডেজা, মণীশ পাণ্ডে ও সদ্য চোট সারিয়ে ফেরা কেদার যাদবও। তাও আবার ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, কড়া রোদে। আজ, সোমবার আরও একটা কাঁপুনি ধরা বড় পরীক্ষা যে তাঁদের। এই ম্যাচেও হারলে বিশ্বের নয় নম্বর দলকে সিরিজে হারানোর সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। সবার নজর অবশ্য ওই একজনের ওপরই। এমএসডি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর শেষ সেঞ্চুরি ২০১৭-র জানুয়ারি। ভক্তরা বলতে পারেন ৫-৬ নম্বরে নেমে কি ঘন ঘন সেঞ্চুরি করা যায়? তাঁদের জন্য একটা তথ্য, ধোনির ব্যাট থেকে শেষ হাফসেঞ্চুরিটাও বেরিয়েছে আট মাস আগে। তার পরে আরও ১১টা ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু ধোনি-ধামাকা উধাও।
রবিবার আরব সাগরের পাড়ে যে আধ ঘণ্টা ব্যাটিং অনুশীলন করে গেলেন, তাতে অবশ্য সেই স্ফুলিঙ্গ ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা দেখা গেল। ব্রাবোর্নের গ্যালারি থেকে মাঝে মাঝে ‘কামন ধোনিভাই’ বা ‘চিয়ার আপ ধোনি’ রবও উঠল। সে সবে কান না দিয়ে শ্রীলঙ্কা থেকে আনা বাঁ হাতি থ্রো-ডাউন বিশেষজ্ঞ নুয়ান সেনেভিরত্নে ও ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বঙ্গারের দেওয়া টানা থ্রো-ডাউন নিয়ে গেলেন। শুরুর দিকে কিছুটা ছন্দপতন হচ্ছিল। একবার লেগ স্কোয়ারে ও আর একবার স্লিপে ক্যাচ দেওয়া শট নিলেন।
মাঠের বাইরে থেকে দেখে মনে হল দু’জনকেই লেগ স্টাম্পে বল দিতে বলছেন। গত দুই ম্যাচে অফস্টাম্পের বলেই আউট হয়েছেন তিনি। তবু লেগস্টাম্পে বল চাইছিলেন বারবার। আত্মবিশ্বাস ফেরানোর জন্য বোধহয়। স্বচ্ছন্দেই হুক, পুল, গ্লান্স, সুইপ শট খেললেন কয়েকটা। সোজা এবং লং অনের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে বলও পাঠালেন কয়েকবার। ফাইন লেগের উপর দিয়েও ছয় মারতে দেখা গেল তাঁকে। ব্যাকফুটের চেয়ে ফ্রন্টফুটই বেশি সচল রাখতে চাইছেন হয়তো।