জিদানের স্ট্র্যাটেজিকে টানছে ধ্বংসাত্মক রোনাল্ডো

বুধবার ভোরে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে দেখেছিলাম শিল্পী মেসিকে। বাঁ পায়ে ছবির মতো গোল। নিঁখুত সমস্ত পাস। শনিবার রাতটা ছিল ধ্বংসাত্মক রোনাল্ডোর। গতি দিয়ে ড্রিবল। সুযোগসন্ধানী জায়গায় থেকে ফিনিশ। শূন্যে লাফিয়ে হেড।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:১১
Share:

রিয়াল মাদ্রিদ ৩ (রোনাল্ডো-হ্যাটট্রিক)আটলেটিকো মাদ্রিদ ০

Advertisement

বুধবার ভোরে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে দেখেছিলাম শিল্পী মেসিকে। বাঁ পায়ে ছবির মতো গোল। নিঁখুত সমস্ত পাস।

শনিবার রাতটা ছিল ধ্বংসাত্মক রোনাল্ডোর। গতি দিয়ে ড্রিবল। সুযোগসন্ধানী জায়গায় থেকে ফিনিশ। শূন্যে লাফিয়ে হেড।

Advertisement

আমি বরাবর বলে এসেছি মেসি একজন শিল্পী হলে রোনাল্ডো কিন্তু অ্যাথলিট। যে নিজের শরীরটাকে পুরোপুরি কাজে লাগায়। স্প্রিন্ট টেনে ডিফেন্ডারদের পিছনে ফেলে দেয়। কোমরের জোর ব্যবহার করে অবিশ্বাস্য উচ্চতায় লাফ দিয়ে হেড। আবার পায়ের জোরে ভয়ঙ্কর গতিতে শট। শনিবার রাতে লা লিগাতেও যার প্রমাণ পাওয়া গেল।

নিঃসন্দেহে আটলেটিকো ডিফেন্স ভাঙা এখন কোনও বিপক্ষ কোচের জন্য খুব কঠিন একটা কাজ। জিদানও জানতেন ছোট ছোট জায়গায় পাস খেলে খেলে উঠলে সাভিচ-গদিনদের টপকানো যাবে না। তাই রক্ষণাত্মক ছকের জবাবে গতি ব্যবহার করেন জিদান। ৪-৪-২ ফর্মেশনে দলকে সাজিয়ে বেল আর রোনাল্ডোকে সামনে রাখেন। আটলেটিকোকে বল পজেশন রাখতে দিয়ে কাউন্টারে খেলে রিয়াল। মিডল থার্ডের বদলে ফুলব্যাক মার্সেলো আর কারভাজালদের দিয়ে উইংগুলোকে ব্যবহার করা। জিদান জানতেন, গ্রিজম্যান, তোরেসের মতো আক্রমণাত্মক মানসিকতার ফুটবলাররা বারবার আক্রমণে আসবে। আর একবার বল হারালে রিয়ালের গতির সঙ্গে মানাতে পারবে না।

সুপারহিউম্যান। ছবি: টুইটার

বার্সেলোনার খেলার স্টাইল যদি পজিশনাল ফুটবল হয়, তা হলে রিয়ালের হচ্ছে স্পিডি ফুটবল। জিদানের এই ছকটা আরও ভাল ভাবে কার্যকর হল টপ ফর্মে থাকা রোনাল্ডোর জন্য। চোট সারিয়ে ফেরার পর থেকে রোনাল্ডোকে একটু আনফিট লাগছিল। আটলেটিকোর ম্যাচের পর বলতে পারি আর কোনও সন্দেহ নেই রোনাল্ডো আবার চেনা ফর্মেই।

শুরুর থেকে সেই জেতার খিদেটা ছিল রোনাল্ডোর মধ্যে। একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেনি। প্রতিটা জায়গা কভার করেছে। কর্নারে গিয়ে ডিফেন্সকে সাহায্য করছে। আবার কাউন্টারের সময় পেনাল্টি বক্সের আশেপাশে পাসিং আউটলেট হয়ে উঠছে। স্কোরবোর্ড দেখেই তো বলা যায় নিজের খেলার সেরা জিনিসটাও নিঁখুত ভাবে করেছে— ফিনিশিং।

প্রথম গোলের সময় রোনাল্ডোর ফ্রি-কিক ডিফ্লেকটেড হতে পারে, কিন্তু শটের প্লেসমেন্টটা সঠিক জায়গায় ছিল। রোনাল্ডো হয়তো আন্দাজ করেছিল, ডিফ্লেকশন হলেও টার্গেটে থাকবে শট। দু’নম্বরটা পেনাল্টি। এমনিতে পেনাল্টি নেওয়া দেখতে সহজ লাগে। আদতে সেটা নয়। রোনাল্ডো মাথা ঠান্ডা করে মারল স্পটকিকটা। আর তৃতীয় গোলটা পোচার্স ফিনিশ। বেলের পাসটা কোথায় আসবে অনুমান করে অনেকটা গ্রাউন্ড কভার করল রোনাল্ডো। এমনি এমনি তো আর এক বছরে পঞ্চাশের উপর গোল করে না।

রোনাল্ডো কেন্দ্রীয় চরিত্র হলে রিয়ালের সাপোর্টিং কাস্টও দারুণ খেলেছে। বেল যেমন সমানতালে দৌড়ে দৌড়ে আক্রমণ তৈরি করল। মদ্রিচ ভাল নেতৃত্ব দিল মাঝমাঠে। আবার ভারানের মতো তরুণ ডিফেন্ডারও নিজের কাজগুলো ঠিকঠাক করে গেল।

শেষে একটা কথাই বলব, আটলেটিকোর কাছে পরিকল্পনা ছিল। দুর্দান্ত একটা টিম ছিল। ঘরের মাঠের সুবিধাও ছিল। শুধু ছিল না একটাই জিনিস— টপ ফর্মের রোনাল্ডো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement