ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র
যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে ‘পকসো’ আইনে মামলা হয়েছিল। এই আইনে মামলা প্রত্যাহার করার আবেদন করেছিল দিল্লি পুলিশ। ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধানের বিরুদ্ধে হওয়া সেই মামলা এখনই প্রত্যাহার করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। মামলা নিয়ে রায় দেওয়ার আগে অভিযোগকারী ও ‘নির্যাতিতা’, দু’পক্ষের বয়ান শুনতে চান বিচারপতি। তিনি দু’পক্ষকে নোটিসও পাঠিয়েছেন।
পাতিয়ালা হাউস কোর্টের বিচারক ছবি কপূর জানিয়েছেন, এই মামলার শুনানির আগে পুলিশের চার্জশিটের সঙ্গে অভিযোগকারী ও ‘নির্যাতিতা’র বয়ান শোনা জরুরি। ১ অগস্টের মধ্যে সেই বয়ান নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তার পরেই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মূল দু’টি মামলা দায়ের হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল ‘পকসো’ ধারায় মামলা। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল যে এক নাবালিকা কুস্তিগিরকে যৌন হেনস্থা করেছেন ব্রিজভূষণ। এই ঘটনা নিয়ে কিছু দিন আগে মুখ খোলেন সেই নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা। তিনি জানান, মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। তাঁর মেয়ে একটি প্রতিযোগিতায় হেরে যাওয়ায় তিনি রেগে গিয়ে কুস্তি কর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন বলে জানিয়েছেন সেই ব্যক্তি। সেই অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ দিল্লি পুলিশ পায়নি বলে জানিয়েছে। তারা দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে ৫০০ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে। সেখানে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা খারিজ করার আবেদন জানানো হয়েছে। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই এ কথা জানিয়েছে আদালত।
গত ২৩ এপ্রিল থেকে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না শুরু করেন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগটদের মতো কুস্তিগিরেরা। বার বার আবেদনের পরেও সরকার তাঁদের কথা না শোনায় গত ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন অভিযান করেন সাক্ষীরা। সেই সময় দিল্লি পুলিশ তাঁদের জোর করে আটক করে। এই ঘটনার পরে দেশের হয়ে জেতা সব পদক হরিদ্বারে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন কুস্তিগিরেরা। কিন্তু কৃষকনেতাদের হস্তক্ষেপে হরিদ্বারে গিয়েও ফিরে আসেন সাক্ষীরা। তাঁরা ৫ জুন পর্যন্ত সময়সীমা দেন কেন্দ্রকে।
এর পরেই পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। কুস্তিগিরদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। বৈঠকে পাঁচটি দাবি করেন কুস্তিগিরেরা। তার মধ্যে কয়েকটি দাবি মেনে নেয় কেন্দ্র। আশ্বাস দেওয়া হয় যে ১৫ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করা হবে। এই আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন কুস্তিগিরেরা। এখন এশিয়ান গেমসের ট্রায়ালের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।