ব্রিজভূষণ শরন সিংহ। ছবি: পিটিআই।
জাতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে সরকারি ভাবে চার্জ গঠন করল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে যে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তার ভিত্তিতে আদালত মঙ্গলবার সরকারি ভাবে চার্জ গঠন করেছে। মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। তিনি অবশ্য অপরাধ স্বীকার করেননি।
মঙ্গলবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে হাজিরা ছিল প্রাক্তন কুস্তিকর্তার। সেখানেই ব্রিজভূষণ দাবি করেন, তিনি কোনও অপরাধ করেননি। অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়ঙ্কা রাজপুত ব্রিজভূষণকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কি অপরাধ স্বীকার করছেন?
ব্রিজভূষণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর দেন, “তার কোনও প্রশ্নই নেই। আমি কোনও অপরাধ করিনি।” তাঁর মতো প্রাক্তন সহ-সচিব বিনোদ তোমরের বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন করা হয়েছে। দু’জনের কেউই অপরাধ স্বীকার না করায় এ বার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মোট ছ’টি মামলা হয়েছিল। গত ১০ মে তার মধ্যে পাঁচটিতেই চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। বাকি একটি মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এবং ৩৫৪ডি ধারায় চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। একই সঙ্গে দ্বিতীয় অভিযুক্ত বিনোদ তোমারের বিরুদ্ধে ৫০৬ ধারায় চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।
গত বছর ১৫ জুন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (মহিলার সম্ভ্রমহানির উদ্দেশ্যে নিগ্রহ বা জবরদস্তি করা), ৩৫৪এ (যৌন হেনস্থা), ৩৫৪ডি (চুপিচুপি নজর রাখা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক হুমকি) ধারায় চার্জশিট পেশ করেছিল দিল্লি পুলিশ। সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগট, বজরং পুনিয়াদের মতো দেশের প্রথম সারির কুস্তিগিরেরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। এক নাবালিকা-সহ ছ’জন মহিলা কুস্তিগির পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। দীর্ঘ দিন দিল্লি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করায় যন্তর মন্তরে ধর্নাও দিয়েছিলেন বজরং, সাক্ষীরা।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আদালত চার্জ গঠনের নির্দেশ দেওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন প্রতিবাদী কুস্তিগিরেরা। সাক্ষী বলেছিলেন, ‘‘এটা আমাদের লড়াইয়ের জয়। ছোট ছোট মেয়েরাও এ বার প্রতিবাদ করার সাহস পাবে। আমরা একটা উদাহরণ তৈরি করতে পেরেছি। আশা করছি অভিযুক্ত উপযুক্ত শাস্তি পাবেন। আমাদের যথেষ্ট কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা কিন্তু নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করছি না। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।’’ স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন বজরংও।