দীপিকা-জ্যোৎস্না। বন্ধুত্ব ভুলে ইনচিওনে সংঘর্ষের পথে স্কোয়াশের দুই তারা।
ঠিক যে আশঙ্কাটা ছিল, সেটাই হল। এশিয়ান গেমসের স্কোয়াশে মেয়েদের সিঙ্গলসে ভারতের অন্ততপক্ষে ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত হল ঠিকই, কিন্তু তার জন্য চোকাতে হবে বড় মূল্যও।
কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি দুই ভারতীয় তারকা দীপিকা পাল্লিকাল আর জ্যোৎস্না চিনাপ্পা। মাস দু’য়েক আগেই যাঁরা ডাবলসে সোনা জিতে দেশকে কমনওয়েলথ গেমসে স্কোয়াশে প্রথম পদক জয়ের গৌরব এনে দিয়েছিলেন।
দুই বন্ধুর এই লড়াই হোক, কিছুতেই চাননি দীপিকা। এ রকম একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে, এই আশঙ্কায় এশিয়ান গেমস থেকে নাম তুলে নেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। এবং শেষ পর্যন্ত সেই পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হল যখন এ দিন জ্যোৎস্না দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীকে ১১-৯, ১১-৭, ১১-৭-এ হারান। কিছুক্ষণ পরই বিশ্বের ১৫০ নম্বর চিনা জিনইউ জুর বিরুদ্ধে দীপিকা জেতেন ১১-৬, ১০-১২, ১১-৬, ১১-৪।
কিছু দিন আগেই ইনচিওনের ড্র ঘোষণার পর বিশ্বের ১২ নম্বর দীপিকা সংগঠকদের ‘প্রভাব খাটানোর’ অভিযোগ তুলে প্রবল সমালোচনা করেছিলেন। আর বিশ্বের ২১ নম্বর জ্যোৎস্না বলেছিলেন, ‘এই ড্র দুর্ভাগ্যজনক’। পরে অবশ্য দেশের স্বার্থে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন দীপিকা।
শুধু এ বারই নয়, এর আগের দু’বার এশিয়াডে স্কোয়াশে ভারতের প্লেয়ারদের একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে সেটা পুরুষদের সিঙ্গলসে। ২০০৬ দোহা আর ২০১০ গুয়াংঝৌ এশিয়াডে। দোহায় সৌরভ ঘোষাল ও ঋত্বিক ভট্টাচার্যকে একই অর্ধে রাখা হয়। চার বছর বাদে যেটা আবার দেখা যায় গুয়াংঝৌতেও। এ বার সৌরভ আর সিদ্ধার্থ সুচদের বেলায়। দু’বারই সৌরভ সতীর্থদের হারিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন।
ফের একই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে কেন বারবার এর শিকার হবে ভারতই। সমস্যাটা হল এশিয়াডের স্কোয়াশে এ ব্যাপারে নিয়ম নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এশিয়াডের আইন অনুযায়ী এ ব্যাপারে যাবতীয় টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে স্কোয়াশের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ও এশীয় সংস্থার নিয়ম বিবেচনা করা হবে। বিশ্ব স্কোয়াশ সংস্থার নিয়মে পরিষ্কার বলা রয়েছে ড্রয়ে একই অর্ধে সতীর্থ প্লেয়ারকে রাখা যাবে না। কিন্তু এশীয় স্কোয়াশ সংস্থার নিয়মে বলা রয়েছে ড্রয়ে প্রথম রাউন্ডে মুখোমুখি একই দলের দুই প্লেয়ারকে রাখা যাবে না, যদি না সেটা একেবারেই এড়ানো না যায়।
বিশ্ব স্কোয়াশ সংস্থার সভাপতি ও এশীয় সংস্থার প্যাট্রনের পদে থাকা ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার প্রেসিডেন্ট এন রামচন্দ্রনও কি এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারতেন না? সেই প্রশ্নও কিন্তু উঠছে।