মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নিরাপত্তা কমিয়ে আনছে ঝাড়খণ্ড সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ককে ‘জেড’ শ্রেণির নিরাপত্তা দিয়ে থাকে রাজ্য। কিন্তু সম্প্রতি এই সংক্রান্ত সরকারি কমিটি বিভিন্ন ব্যক্তির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে জানান, ধোনির জীবনে এই মুহূর্তে কোনও ঝুঁকি নেই। অন্য কেউ হলে হয়তো তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরিই প্রত্যাহার করত সরকার। কিন্তু যে হেতু এই ব্যক্তি ঝাড়খণ্ডের ‘আইকন’, তাই প্রত্যাহার না করে নিরাপত্তার পরিমাণ কমানো হল ‘জেড’ থেকে ‘ওয়াই’-এ।
ধোনির পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন স্পিকার তথা বিজেপি নেতা চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ সিংহ, সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ বালমুচু এবং জেএমএম নেতা সুমন মাহাতোর নিরাপত্তাও কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কমিটি। রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমার জানান, এমন অনেক বিশিষ্ট নাগরিক রয়েছেন যাঁদের এই মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নেই। উল্টো দিকে অনেকেরই সুরক্ষা বাড়ানোর দরকার। তাই এই সিদ্ধান্ত। ডিজিপি বলেন, “রাজ্যে মাওবাদী সমস্যার জন্য পুলিশ কর্মীদের একটা বড় অংশকে মাওবাদী এলাকায় মোতায়েন করতে হয়। আবার মাওবাদী এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেন যে সব জনপ্রতিনিধি, তাঁদের নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আবার সকলকে এক সঙ্গে এক ধরনের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশকর্মীরও অভাব আছে।”
স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, পদস্থ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের একটি কমিটি প্রতি তিন মাস অন্তর সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে। তারাই বিশিষ্ট নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে। ডিজিপি বলেন, ধোনি-সহ কয়েক জনের নিরাপত্তা কমানোর পাশাপাশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জেড থেকে জেড প্লাস করা হচ্ছে। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ওয়াই থেকে জেড এবং বর্তমান স্পিকার শশাঙ্কশেখর ভোক্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এক্স থেকে জেড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রাক্তন স্পিকার তথা রাঁচির বিজেপি বিধায়ক চন্দ্রেশ্বর প্রসাদ সিংহ বলেন, “আমি স্পিকার থাকার সময়ই নিরাপত্তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করিনি। পাইলট কার নিতাম না। জোর করে দু’জন দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছিল। তাঁরাই আছেন। সরকার মনে করলে তাঁদের ফিরিয়ে নিক। আমার কিছু বলার নেই।” তবে জামশেদপুরের প্রাক্তন জেএমএম সাংসদ সুমন মাহাতো তাঁর নিরাপত্তা কমানোয় অখুশি। ২০০৭-এ সুমনের স্বামী তৎকালীন জেএমএম সাংসদ সুনীল মাহাতোকে গুলি করে খুন করেছিল মাওবাদীরা। সুমন সাংসদ হওয়ার পরে জেড শ্রেণির নিরাপত্তা দেওয়া হয় তাঁকে। সুমনের বক্তব্য, “এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। আগে আমার পরিবারের
বড় ক্ষতি হয়েছে। আমার কাজের সিংহভাগ মাওবাদী এলাকায়। সেটা ভাবা উচিত সরকারের।” তবে পুলিশ জানিয়েছে, সুমনের বাড়ি থেকে আধা-সেনা সরানো হবে না।