আই লিগ শেষ। মোহনবাগান শেষ করেছে তিন নম্বরে। কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর হাত ধরে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত লড়াই দিয়েছে মোহনবাগান। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়া হয়নি। এর মধ্যেই যে ক্লাবের অন্দরে ধিকি ধিকি আগুন জ্বলতে শুরু করেছিল তা বোঝাই যায়নি। আই লিগ শেষ হতেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন মোহনবাগান ক্লাবের দুই কর্তা দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বোস।
সোমবার স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে নিজেদের সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে দিলেন ক্লাবের দুই শীর্ষ কর্তা। অভিযোগের আঙুল সচিব অঞ্জন মিত্রর দিকে। তিনি নাকি কোনও কাজ না করেই সবার কাজে নাক গলান।
সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করে অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আমরা পদত্যাগ করছি ব্যাক্তিগত কারণে। তবুও কিছু কথা বলা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের জানার জন্য।’’ এর সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘গত চার বছর ধরে আমরা দু’জনেই চেষ্টা করেছি সবাইকে সঙ্গে নিয়েই দল চালাতে। এখন এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখান থেকে স্পনসর ও চুক্তি নিয়ে অনেক সমস্যা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন
থাকতে চান খালিদ, আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত লাল-হলুদ কর্তাদের
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, আই লিগের জন্যই এতদিন চুপ করেছিলেন তাঁরা। সঞ্জয় সেন পরবর্তী সময়ে যে দোলাচল তৈরি হয়েছিল সেটা ঠান্ডা মাথায় এই দুই কর্তাই সামলেছেন বলে দাবি। ঘুরে দাঁড়িয়েছে দল। দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘এই মরসুম প্রায় শেষ। এখন পরের বছরের জন্য এমন টিম তৈরি করতে হবে যাতে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে দল। আমরা থেকে গেলে হয়তো সেটা কঠিন হয়ে যাবে। তাই অনেক ভাবনা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ক্লাবের সব হিসেবপত্র সচিবের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’’
ক্লাবের সহ-সচিব সৃঞ্জয় বোস বলেন, ‘‘সঞ্জয়দা (সঞ্জয় সেন) ছেড়ে যাওয়ার দিনই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। যখন কেউ মাঠে না এসে বলে, তিনি মাঠে এলে এমন ঘটত না তখন মনে হয় আমরা মাঠে আসছি বলেই কিছু খারাপ হল। আমরা শুধু কর্তা নই। দিনের শেষে আমরা ক্লাবের সমর্থক। মোহনবাগানের ক্ষতি কোনও দিন চাইব না। তাই যাতে কেউ বলতে না পারে দল গড়ার সুযোগ পেল না তারা।’’ দুই কর্তারই অভিযোগ সচিব অঞ্জন মিত্রর থেকে কোনও সহযোগিতা পাননি তাঁরা। তবুও সুপার কাপের আগে দল গুছিয়েই দায়িত্ব ছাড়ছেন দুই শীর্ষ কর্তা। দলে নতুন বিদেশি নেওয়া হবে। সবটাই তৈরি করে দিয়েই সরলেন দুই কর্তা।
এই খবর ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে সচিব অঞ্জন মিত্রর কাছেও। তিনি অসুস্থ। রোজ ক্লাবে আসতে পারেন না। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার বিকেলে ক্লাবে আসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ফোনে তাঁকে ধরা হলে বলেন, ‘‘ওরা এটা কেন করল জানি না। যাদের হাত ধরে নিয়ে এসেছিলাম আজ তারাই এই সব বলছে। খারাপ লাগছে। তবে ওদের সঙ্গে কাল ক্লাবে গিয়ে কথা বলব। ওদের থেকেই শুনতে চাই। তার পর নিজের মতামত জানাব।’’