স্পেনের প্র্যাকটিসে দে হিয়া। ছবি: রয়টার্স।
গত দু’বারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেন এ বার ট্রফি ধরে রাখতে পারবে কি না, এত দিন সেই জল্পনা চলছিল। শুক্রবারের পরে তাকে পিছনে ঠেলে দিয়ে শিরোনামে উঠে এল যৌন নিগ্রহ, মধুচক্র, ইত্যাদি শব্দ!
ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন স্পেনের তারকা গোলকিপার দাভিদ দে হিয়া। তাঁর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ— স্পেনের অনূর্ধ্ব ২১ টিমের দুই প্লেয়ার এবং দু’জন মহিলার মধ্যে যৌন সম্পর্কের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোটা ব্যাপারটার সমস্ত খরচও নাকি তিনিই দেন। মাদ্রিদের এক হোটেলে ২০১২ সালের ঘটনা এটা। আরও বড় মধুচক্র নিয়ে তদন্তের মধ্যে যে ঘটনা নিয়েও খোঁজখবর চলছিল। এ দিন এক গোপন সাক্ষী সেই তদন্তের জেরে সরাসরি দে হিয়ার নাম উল্লেখ করেন।
স্পেনের হয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে যে অভিযোগ পত্রপাঠ উড়িয়ে দেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের তারকা গোলকিপার। তিনি বলে দেন, ‘‘ব্যাপারটায় অবাক হয়ে গিয়েছি। এটা পুরোপুরি মিথ্যে।’’ স্প্যানিশ সংবাদপত্র ‘এল মুন্দো’র খবর অনুযায়ী পুলিশ জানিয়েছে যে, দে হিয়া বেআইনি কিছু করেননি। কিন্তু ইউরো উদ্বোধনের দিনই এই ঘটনা প্রকাশ্যে এসে পড়ায় টুর্নামেন্টে তাঁর খেলা নিয়ে নাকি অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। যদিও দে হিয়া বলছেন, ‘‘আমি শান্ত আছি। খুব কম জিনিসই আমাকে অশান্ত করতে পারে। ট্রেনিং চালিয়ে যাব।’’
তিনি কি দলের সঙ্গেই থাকছেন? দে হিয়ার জবাব, ‘‘নিশ্চয়ই। নিজেকে এখন আরও শক্তিশালী মনে হচ্ছে। টিমমেটদের দারুণ সমর্থন পাচ্ছি। আমি ইউরো খেলতে চাই। ফ্রান্স ছাড়ার কথা ভাবিইনি। যখন খবরটা শুনলাম, তখন নিজের ঘরে বসে প্লেস্টেশনে খেলছিলাম। প্রথমেই পরিবারের সঙ্গে কথা বললাম। ওদের শান্ত থাকতে বললাম।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই সাক্ষী যা খুশি তাই বলতে পারেন। আমার আইনজীবীরা ব্যাপারটা দেখছেন।’’
স্পেনের এক ওয়েবসাইটে এ দিন দুই গোপন সাক্ষীর বয়ান প্রকাশিত হয়। সেখানে এক মহিলা বলেছেন, তাঁকে আর এক মহিলা এবং দু’জন ফুটবলারের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করা হয়। যার মধ্যে এক জন অ্যাথলেটিক বিলবাও ফরোয়ার্ড ইকের মুনিয়াইন। গোটা ব্যাপারটার আয়োজন করেন দে হিয়া। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী ওই সাক্ষীর সততা নিয়ে সন্দেহ নেই। আর এক সাক্ষীর দাবি, ফুটবলারদের সঙ্গে এই ধরনের সাক্ষাৎ আয়োজনের জন্য অশ্লীল ভিডিও আদানপ্রদান করতেন দে হিয়া।
মূল তদন্তের কেন্দ্রে রয়েছেন ইগনেসিও আলেন্দে ফের্নান্দেজ, ওরফে ‘তর্বে’। গত এপ্রিল থেকে হাজতে বসবাস করা তর্বের বিরুদ্ধে শিশুদের অশ্লীল ভিডিও করা, যৌন নিগ্রহ, বেশ্যাবৃত্তিতে প্ররোচনা, তহবিল তছরুপের অভিযোগ রয়েছে।