সেই মুহূর্ত। ম্যাকগ্রাথের বল লাগল সচিনের কাঁধে। —ফাইল চিত্র।
গ্লেন ম্যাকগ্রার বল লেগেছিল তাঁর কাঁধে। তার পরও সচিন তেন্ডুলকরকে লেগ বিফোর উইকেট নিয়েছিলেন আম্পায়ার ড্যারিল হার্পার। ‘শোল্ডার বিফোর উইকেট’ নিয়ে উঠেছিল ঝড়। তবে সেই সিদ্ধান্তকে এখনও নির্ভুল বলেই মনে করেন তিনি।
সেটা ১৯৯৯। অস্ট্রেলিয়ায় সচিনের নেতৃত্বে খেলতে গিয়েছিল ভারত। সেখানে অ্যাডিলেড টেস্টে ম্যাকগ্রার বাউন্সারে ডাক করেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। বল লাগে কাঁধে। আম্পায়ার ড্যারিল হার্পাল তার পরেও দেন এলবিডব্লিউ। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বিতর্ক। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এক আলাপচারিতায় বলেছেন, “জীবনের প্রতিটি দিনই ওই আউটের কথা মাথায় আসে। এমন নয় যে দুঃস্বপ্ন তাড়া করে আসে বা ঘুম হয় না। ব্যাপারটা তা নয়। গ্যারাজে যখন যাই তখন সচিন ও ম্যাকগ্রার বিশাল বড় ক্যানভাস প্রিন্ট চোখের সামনে থাকে। যা বল লাগার পরই নেওয়া হয়েছিল। আপনারা হয়তো হতাশ হবেন, কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি এখনও দারুণ ভাবে গর্বিত। কোনও ভয় বা সুবিধা পাওয়ার আশা ছিল না ওই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে।”
হার্পারের কথায়, “আইসিসি অফিসিয়ালদের কাছে শুনেছি যে ম্যাচের পর আমার পারফরম্যান্স যাচাইয়ের সময় সচিন ওই আউটের কথা তোলেনি। তবে উপলব্ধি করেছিলাম যে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের ছয় ভাগের একভাগ মানুষ নাম জানল আমার। আর তারা সম্ভবত আমার প্রশংসা করছিল না।”
আরও পড়ুন: অগস্টে হতে পারে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ?
আরও পড়ুন: বোর্ড প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন সৌরভ? সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে কিছুটা স্বস্তি
ওই আউট দেওয়ার অনেক পরে ২০১৮ সালে এমএসকে প্রসাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল হার্পারের। সেই টেস্টে ভারতের উইকেটকিপার ছিলেন প্রসাদ। হার্পার বলেছেন, “২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের প্রধান নির্বাচক প্রসাদের সঙ্গে লাঞ্চ করছিলাম অ্যাডিলেড ওভালে টেস্টের সময়। মাঝের ২০ বছরে আমাদের দেখা হয়নি। তখনই প্রসাদ বলেছিল যে। ওর ওটাকে আউট বলেই মেনে নিয়েছিল। আমি বলেছিলাম, সেটা আমারও মনে হয়েছিল। তবে ওটা ছিল একেবারে অস্বাভাবিক আউট। এমন আউট আর কখনও দেখিনি। তবে এটা বিশ্বাস করি যে সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছিলাম। বিশ্ব জুড়ে যে দর্শকরা অবাক হয়ে গিয়েছিল, সেটার কারণও ছিল। আমিও তাৎক্ষণিক ভাবে অস্বস্তিতে ছিলাম। তাৎক্ষণিক ভাবে এ জন্যই বলছি কারণ, পরে উপলব্ধি করি ম্যাকগ্রার ওভারটা পাঁচ বলে শেষ হয়েছিল। যার মধ্যে মাঝের বলে আউট হয়েছিল সচিন। গুণতে সাধারণত ভুল হয় না আমার। আসলে ওই ঘটনার গুরুত্ব আমার মনসংযোগে চিড় ধরিয়ে দিয়েছিল।”
কিন্তু ওই আউট নিয়ে সচিনের সঙ্গে পরে কথা হয়নি? হার্পার বলেছেন, “বিশ্ব জুড়ে ভারতের ২৬ টেস্ট ও ৪৪ ওয়ানডে ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছি আমি। ওই আউট নিয়ে কিন্তু কখনও সচিনের সঙ্গে কথা হয়নি। সচিনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালই থেকেছে বরাবর। আপিল হওয়ার পর আঙুল তুলেছিলাম। এ ভাবেই খেলা হয় ক্রিকেট। ক্রিকেটার, আম্পায়ার এগিয়ে চলেন পুরনো ঘটনা পিছনে রেখে। এটাকেই ক্রিকেটের সত্যিকারের স্পিরিট বলা হয়। এই কারণেই ভারতের ম্যাচে আম্পায়ারিং উপভোগ করেছি। বিশেষ করে ভারতে আম্পায়ারিং ভাল লাগত।”