সফল: ভারতীয় ব্যাডমিন্টন দল। ছবি: পিটিআই
তাঁর দুই ছাত্রী সাইনা নেহওয়াল আর পি ভি সিন্ধু রবিবার যখন কমনওয়েলথ গেমসের ফাইনালে নামছেন, কোথায় ছিলেন তখন কোচ পুল্লেলা গোপীচন্দ? উত্তরটা হল, তিনি তখন কোর্টে তো ছিলেনই না, স্টেডিয়ামেরও বাইরে ছিলেন।
দুই ভারতীয় খেলোয়াড়ের মধ্যে ফাইনাল। সাইনা ও সিন্ধু, দু’জনেরই গোপীচন্দ ছাড়া আলাদা কোনও কোচ নেই। তাই জাতীয় ব্যাডমিন্টন কোচ নাকি তখন কিছুটা ফাঁকা সময় পেয়ে গিয়েছিলেন। ফাইনালের আগে দুই ছাত্রীকে যা যা পরামর্শ দেওয়ার, তা দিয়েই তিনি সেখান থেকে চলে যান।
কোথায় যান?
‘‘আমি স্টেডিয়ামের বাইরে অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক দেখতে গিয়েছিলাম তখন। যখন কোর্টে ফিরি তখন প্রথম গেমের ১৭ পয়েন্ট হয়ে গিয়েছে। টিভিতেই বাকি খেলাটা দেখতে হয়েছিল আমাদের কারণ, এর পরের ম্যাচটাই ছিল শ্রীকান্তের ফাইনাল। সেই প্রস্তুতি নিতে হচ্ছিল,’’ গোল্ড কোস্ট থেকে দেশে ফেরার পরে মঙ্গলবার হায়দরাবাদে তাঁর অ্যাকাডেমিতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন গোপীচন্দ। সেখানে তখন সাইনা, সিন্ধু, শ্রীকান্ত-সহ ভারতীয় দলও উপস্থিত। ফাইনালে দুই ছাত্রীর খেলা কেমন লাগল তাঁর?
‘‘মেয়েদের সিঙ্গলসে সোনা জেতাটা দারুণ ব্যাপার। আশা করি পুরুষদের সিঙ্গলসেও এক সময় আমরা এ রকম ফাইনাল দেখতে পারব। মানে ফাইনালে দুই ভারতীয় খেলোয়াড়ের মুখোমুখি হওয়া। আগামী বছরগুলোয় এ রকম অনেক বারই দেখা যাবে দেখবেন,’’ বলেন গোপীচন্দ। তা হলে কী এক বারের জন্যও সাইনা-সিন্ধুর ফাইনাল ম্যাচটা পুরো দেখেননি তিনি? দুই প্রিয় ছাত্রী মুখোমুখি বলে তাই? গোপীচন্দ বললেন, তিনি ফাইনালের ভিডিয়ো পরে দেখেছেন বটে। তবে তা কোচিংয়ের স্বার্থে!
গোপীচন্দের মনে হয় সাইনা, সিন্ধুর এই রেষারেষি দেশের ব্যাডমিন্টনের জন্য ভাল ব্যাপার। ‘‘রেষারেষি নিজের খেলায় উন্নতি করতে সাহায্য করে। নিজের খেলার মানটাও আরও ভাল করা যায়। আমার কাছে, রেষারেষিটা ভাল জিনিস, তাতে দলেরও উপকার হয়। আমরা ভাগ্যবান, সাইনা আর সিন্ধুর মতো খেলোয়াড়কে পেয়েছি। আমাদের অ্যাকাডেমিতে প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই একটা সুস্থ রেষারেষি রয়েছে।’’
সিন্ধু সাইনার সঙ্গে তাঁর রেষারেষি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘ফাইনালে দুই ভারতীয় মুখোমুখি হওয়াটা গর্বের ব্যাপার। কোর্টে আমাদের মধ্যে রেষারেষি রয়েছে। তবে ম্যাচটা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে, আমরা আমরা দেশের জন্য খেলছি এ ভাবেই এই লড়াইটাকে দেখি।’’ পাশাপাশি ফাইনালে ফের হেরে যাওয়া নিয়ে সিন্ধুর বক্তব্য, ‘‘জেতা বা হারাটা বড় কথা নয়। এটা ঠিক, কতগুলো টুর্নামেন্টে জয়ের কাছাকাছি এসেও আমি হেরে গিয়েছে। এই ব্যাপারটা কাটিয়ে উঠতে আমায় আরও পরিশ্রম করতে হবে।’’
কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়ন সাইনা আবার বলে দেন তিনি কারও কাছে হারতে চান না। সেটা সিন্ধু হোক বা অন্য কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ‘‘আমি শুধু জিততে চাই। সবাই সেটা চায়। গোপী স্যর ফাইনালের আগে বলেছিলেন, একটা কথা মাথায় রাখবে তোমরা দু’জনেই দেশের প্রতিনিধিত্ব করছ। দেশ যেন তোমাদের নিয়ে গর্ব করতে পারে। এই কথাটাই শুধু আমার মাথায় ছিল।’’