চেন্নাই নেটে বোলার ধোনি। ছবি: পিটিআই।
এক দিকে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের না থাকা। সঙ্গে আবার ‘অ্যাওয়ে ম্যাচে’ নামার চ্যালেঞ্জ। তার উপর এমন একটা টিমের বিরুদ্ধে নামতে হচ্ছে যাদের এ বার টুর্নামেন্টের প্লে-অফে ওঠাটা প্রায় রূপকথার মতোই। প্রথম পাঁচ ম্যাচে হারার পরেও নাটকীয় উত্থান। তাই মঙ্গলবার ওয়াংখেড়েতে আইপিএল আটের প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জটা খুব কঠিন বলেই মনে করছেন চেন্নাই সুপার কিঙ্গস কোচ স্টিভন ফ্লেমিং।
‘‘হোম আর অ্যাওয়ে ম্যাচ আইপিএলের ক্ষেত্রে একটা বড় ব্যাপার। ঘরের মাঠে খেলতে নামার আগে অনেক বাড়তি ছক-টক কষে নামে হোম টিম। তাই অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলা এত কঠিন হয়ে যায় অপর দলটার জন্য,’’ বলছেন ফ্লেমিং। সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘সেই জন্যই এই ম্যাচটা আমাদের জন্য এত কঠিন। নিরপেক্ষ কোনও মাঠ নয়। খেলাটা আমাদের কাছে অ্যাওয়ে ম্যাচে নামার মতো। সঙ্গে ম্যাকালামের না থাকাটা তো আছেই।’’
২১ মে থেকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলবেন বলে নিউজিল্যান্ড ক্যাপ্টেন সিএসকে টিমে নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়েন স্মিথের (১৩ ম্যাচে ৩২৫) সঙ্গে যাঁর ওপেনিং জুটি এ বার দুরন্ত সফল। ম্যাকালাম একাই ৪৩৬ রান করেছেন ১৪ ম্যাচে। সিএসকে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা এ বার সর্বোচ্চ। মোহালিতে অভিজ্ঞ অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান মাইক হাসি ম্যাকালামের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। মঙ্গলবারও হাসিরই ওপেনিংয়ে স্মিথের সঙ্গে নামার সম্ভাবনা। ফ্লেমিংও বলেছেন, ‘‘হাসিকে আমাদের আর একটু সময় দিতে হবে।’’ কিন্তু সেই জুটি এ রকম হাইভোল্টেজ ম্যাচে কতটা সফল হবে সে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে অনেক সিএসকে সমর্থকেরই। তার উপর মু্ম্বইয়ের লাসিথ মালিঙ্গা আর মিচেল ম্যাকক্লেনাঘনের নতুন বলের জুটি দারুণ ছন্দে রয়েছে। দু’জন মিলে ৩৩টা উইকেট তুলে নিয়েছেন এ বার।
প্লে-অফে ওঠার পরে মুম্বই ড্রেসিংরুমে হরভজনের উৎসব। দর্শক সচিন। ছবি: টুইটার।
তবে ফ্লেমিংয়ের কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল চাপ সামলানোটাই। এই ম্যাচে যে চাপ সামলাতে পারবে সে-ই শেষ হাসি হাসবে মনে করছেন তিনি। কিন্তু সেই ‘প্রেসার ম্যানেজমেন্ট’ সামলানোর দক্ষতায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অনেক দলকেই টেক্কা দিয়ে দিয়েছে যে এ বার! মুম্বই ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা রবিবারের সানরাইজার্স ম্যাচ জেতার পরই রহস্যটা ফাঁস করেন। ‘‘ড্রেসিংরুমে আমরা এমনই একটা পরিবেশ তৈরি করেছি। পরিস্থিতি যাই হোক, মাথা নামানো যাবে না। আর এই মানসিকতাটাই আমাদের কোয়ালিফায়ারে তুলে এনেছে।’’ কিন্তু টুর্নামেন্টের শুরুতেই পাঁচ-পাঁচটা হারের পরও টিমের সবার এমন শক্ত-পোক্ত মানসিকতা টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জটাও তো কম কঠিন ছিল না? মুম্বই ক্যাপ্টেন এ জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছেন সাপোর্ট স্টাফকেই। ‘‘হ্যাঁ, এটা ঠিক টানা হারে অনেক সময় মানসিক দিক থেকে হতাশা চলে আসে। তবে এ জন্য পুরো কৃতিত্ব প্রাপ্য সাপোর্ট স্টাফের। আমাদের কাছে আইপিএলের গ্রুপ পর্যায়টা একটা টুর্নামেন্ট ছিল। সেটা শেষ করে এ বার কোয়ালিফায়ার আর একটা নতুন টুর্নামেন্টে নামার মতোই আমাদের কাছে।’’ অবশ্য মঙ্গলবারের ম্যাচটা নক-আউট নয়। যে দল হারবে তাদের আবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জিতে ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকবে। ক্যাপ্টেনের কথাতেও তাই ঘরের মাঠে মরিয়া লড়াইয়ের ইঙ্গিত স্পষ্ট। ‘‘প্রথম দুইয়ে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করলে ভয়-ডরহীন ভাবে খেলার একটা সুযোগ পাওয়া যায়। এর আগেও ২০১৩-এ আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। একই দলের বিরুদ্ধে সে বারও খেলতে হয়েছিল। সে বারও প্রথম দুই দলে শেষ করে ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। দেখা যাক এ বার কী হয়।’’