আগমন: লক্ষ্য নাইটদেরও হারানো। মেয়ে জিভা ও স্ত্রী সাক্ষীকে নিয়ে এসে গেলেন ধোনি। মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে যত দেখছেন, তত অবাক হচ্ছেন শেন ওয়াটসন। বাইশ গজে উল্টো দিক থেকে দেখেছেন, কী ভাবে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করে নিয়ে যাচ্ছেন ধোনি। আর মাঠের বাইরে চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ককে দেখেছেন, কী ভাবে সুযোগ পেলেই ঘুমিয়ে পড়ছেন!
সোমবার দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে হারানোর পরে ওয়াটসন বলেছেন, ‘‘ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চের সময় আমরা ধোনিকে প্রায় দেখতেই পাই না। ও ঘুমোতে খুব ভালবাসে।’’ ধোনি ঘুমোতে ভালবাসলে কী হবে, তিনি যে রকম ব্যাটিং করছেন, তাতে বিপক্ষ অধিনায়কদের ঘুম ছুটে যাওয়ার অবস্থা! ওয়াটসন এও বলেছেন, ‘‘ধোনির সঙ্গে খেলতে পারাটা সম্মানের। সিএসকের হয়ে খেলাটা যে ওর কাছে কত বড় ব্যাপার, সেটা ধোনি বুঝিয়ে দিয়েছে। ধোনির এই আবেগটা বাকিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে।’’
দিল্লিকে হারিয়ে এখন লিগ তালিকায় এক নম্বরে উঠে এসেছে সিএসকে। ওয়াটসন ম্যাচের সেরা হলেও যে জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছন ধোনি। শেষ ছ’ওভারে অম্বাতি রায়ডুকে নিয়ে ৭৯ রান তোলেন চেন্নাই অধিনায়ক। ওয়াটসন বলছেন, ‘‘সব রকম পিচে শট খেলছে ধোনি। সব রকম বোলারকে মারছে। মনে পড়ছে না, শেষ কবে ওকে এত ভাল শট খেলতে দেখেছি। দুর্দান্ত ক্রিকেটার।’’ যোগ করেন, ‘‘চাপের মুখে যে ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখে ধোনি, সেটা শিক্ষণীয়! আস্কিং রেট যখন বাড়তে থাকে, তখন ধোনি বেছে নেয় কোন বোলারকে মারতে হবে। ধোনির এই মানসিকতা আমাকেও প্রভাবিত করেছে।’’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দল নিয়ে কলকাতায় এসে পৌঁছলেন ধোনি। বৃহস্পতিবার লড়াই কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে। তার আগে ধোনিতে মজেছেন তাঁর সতীর্থরা। ফ্যাফ ডুপ্লেসি যেমন মনে করেন, যে কোনও অধিনায়কের ঘুম কেড়ে নিতে পারেন ধোনি। ডুপ্লেসি বলেছেন, ‘‘ধোনি এখন দুরন্ত ছন্দে আছে। এই অবস্থায় ওকে বল করা কিন্তু সত্যিই কঠিন। ধোনিকে অফস্টাম্পের বাইরে বল করলেও ও সেটাকে লংঅন, মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছয় মেরে দিতে পারে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডুপ্লেসি আরও বলেন, ‘‘যে কোনও শট খেলার ক্ষেত্রে ধোনির হাতে অনেক বিকল্প থাকে। যে রকম ইচ্ছে শট খেলতে পারে ধোনি। ফলে ওকে আটকানোর ছক তৈরি করা যে কোনও অধিনায়কের পক্ষে কঠিন।’’
ধোনির পাশাপাশি রায়ডুর প্রশংসাও শোনা গিয়েছে ডুপ্লেসির মুখে। তিনি বলেছেন, ‘‘রায়ডু যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে পারে। এই ব্যাপারটা আমায় মুগ্ধ করেছে। এ বারের আইপিএলে ওর ব্যাটিং খুব উপভোগ করছি। প্রথম বল থেকেই বড় শট মারাটা কিন্তু খুব কঠিন কাজ। রায়ডুর এই ক্ষমতা আছে। চার বা পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বল থেকেই চার-ছয় মারার দক্ষতা কিন্তু খুব কম ব্যাটসম্যানেরই থাকে।’’
আগের ম্যাচে ওয়াটসনের সঙ্গে ওপেন করেছেন ডুপ্লেসি। যা নিয়ে ধোনি বলেছিলেন, ‘‘চার নম্বরের চেয়ে ডুপ্লেসিকে ওপেনে বেশি প্রয়োজন।’’ সিএসকের নতুন ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ডুপ্লেসির মন্তব্য, ‘‘সুরেশ রায়না তিনে, রায়ডু চারে নামছে। আমাদের শুরুটা যদি ভাল হয়, তা হলে এই দু’জন নেমে শুরু থেকেই শট খেলতে পারবে। যেটা প্রতিপক্ষের কাছে বিপজ্জনক হয়ে যাবে বলেই মনে হয়। আমাদের ভাগ্য ভাল যে ব্যাটিংয়ে অনেক বিকল্প হাতে আছে।’’