অনিকেত। নিজস্ব চিত্র
বাবা ভাল ফুটবল খেলতেন। বাড়ির উঠোনে তাঁর হাতেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়েছিল অনিকেত শর্মার ওরফে বিট্টুর। খড়্গপুরের দক্ষিণ ইন্দার এই উঠতি ক্রিকেটারের জীবনের ইনিংস থেমে গেল মাত্র ২১ বছর বয়সে। মঙ্গলবার কলকাতার পাইকপাড়া ক্লাবের মাঠে অনুশীলনের সময়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর।
অনিকেতের বাবা কমল শর্মার স্টুডিয়ো ছিল। বছর পাঁচেক আগে অনিকেতবাবু ও তাঁর স্ত্রী মা নিপাদেবী মিলে গোলবাজারে পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। তারপর থেকে সেই দোকানের পিছনের বাড়িতেই মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন অনিকেত। ছেলের ক্রিকেটে আগ্রহ দেখে কমলবাবু তাঁকে শহরের সেরসা স্টেডিয়ামে প্রশিক্ষক সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভর্তি করেছিলেন। বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক অনিকেত বর্তমানে পাইকপাড়া ক্লাবের ক্রিকেটার ছিলেন। খেলার সূত্রে মাসের বেশিরভাগ দিন কলকাতাতেই থাকতেন তিনি।
অনিকেতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ক্লাবে অনুশীলন ছিল। খেলার আগে ‘ওয়ার্ম-আপ’ চলাকালীন বুকে যন্ত্রণা অনুভব করে অনিকেত। মাটিতে পড়ে যান। আর জ্ঞান ফেরেনি তাঁর। মা নিপাদেবী বলেন, “দুর্ঘটনা ঘটেছে খবর পেয়ে কলকাতায় চলে এসেছি। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।”
পড়শিরা প্রথমে খবরটি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। অনিকেতের পড়শি পেশায় ব্যবসায়ী অজয় মিশাল বলেন, “অনিকেত প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটার ছিল বলে শুনেছিলাম। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!’’ অনিকেতের মামা অমিত পারিক বলেন, “ও অলরাউন্ডার ছিল। দিন পাঁচেক আগেই বাড়িতে এসেছিল। তখন দেখা হয়েছিল।’’
বাড়ির এই উঠোনেই খেলা শুরু তাঁর।
সোমবার রাতেই দক্ষিণ ইন্দার আদি বাড়িতে অনিকেতের দেহ আনা হয়। যে উঠোনে তাঁর ক্রিকেট খেলা শুরু হয়েছিল সেখানে দেহ রাখা হয়। অনিকেতের দুই কাকা রাকেশ ও রাজকুমার শর্মার আক্ষেপ, ‘‘দাদার ইচ্ছে ছিল ছেলেকে বড় খেলোয়াড় করবে। ভাইপো সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিল। ছোটবেলায় বাড়ির উঠোনে খেলত। সেই দিনগুলি খুব মনে পড়ে যাচ্ছে।”